ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যশোরে শিক্ষকের কান্ড

তিন দিন শিক্ষকতা ॥ তিন দিন দলিল লেখক

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

তিন দিন শিক্ষকতা ॥ তিন দিন দলিল লেখক

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মণিরামপুরে এক স্কুল শিক্ষক ভাগাভাগি করে দুটি কাজ করছেন। সপ্তাহের ৩ দিন শিক্ষকতা করেন এবং বাকি ৩ দিন দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভেন্ডার হিসেবে কাজ করেন। তবে এই সুবিধা ভোগের জন্য স্কুল প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটিকে প্রতিমাসে দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। উপজেলার রোজিপুর কেএমএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় বিষয়ের শিক্ষক হায়দার আলী এভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাসে ৩ হাজার টাকা নেয়া হয় বলে স্বীকার করেছেন। তবে আগের সভাপতির আমল থেকে এই সুবিধা পেয়ে আসছেন শিক্ষক হায়দার আলী এমন দাবি বর্তমান সভাপতি আব্দুল ওহাব সরদার। স্থানীয়রা জানান, প্রায় অর্ধযুগ ধরে একই সঙ্গে দুই জায়গায় কাজ করে আসছেন হায়দার আলী। প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকলেও অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার সুযোগ দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এদিকে শিক্ষক হায়দার আলীর দাবি প্রতিষ্ঠানে অর্থ দিয়েই তিনি এই কর্ম করছেন। শিক্ষকের এমন কর্ম নিয়ে স্থানীয় অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দাবি উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৯৯৪ সালে ইসলাম ধর্মের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান হায়দার আলী। এরপর এমপিও ভুক্তি হওয়ার কয়েক বছর পরই কেশবপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অধীন দলিল লেখক (যার লাইসেন্স নং-১১৪) এবং স্ট্যাম্প ভেন্ডার (যার লাইসেন্স নং-০৮/০৫) হিসেবে কর্ম শুরু করেন। অভিযোগ রয়েছে শুরুতে সপ্তাহে ৩ দিন স্কুলে না গিয়ে দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভেন্ডারের কাজ করতেন তিনি। বর্তমানে কেশবপুরে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা না থাকায় এখন ২ দিন সেখানে কাজ করেন। বিনিময়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে মাসে ৩ হাজার টাকা প্রদান করেন। তবে হায়দার আলীর সাফ কথা ‘ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়েই তিনি দলিল লেখা ও স্ট্যাম্প ভেন্ডারের কাজ করেন। একই সঙ্গে তিনি এটিকে ব্যবসা হিসেবেও দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ সরদার ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি দেয়া হয়নি দাবি করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তার কাছ থেকে কিছু টাকা নেয়া হয়। অবশ্য একই ব্যক্তির দুই জায়গায় কাজ করা ঠিক নয় দাবি করে তিনি আরও জানান, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে তাকে (হায়দার আলী) আর ছাড় দেয়া হবে না। জানতে চাইলে স্কুলের সভাপতি আব্দুল ওহাব সরদার বলেন, ‘আমি অত শিক্ষিত না, শুনেছি আগের কমিটি তার কাছ থেকে মাসে ২ হাজার টাকা নিয়ে ওই মাস্টারকে এ সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি সভাপতি হওয়ার পর ওই শিক্ষক সপ্তাহে ২ দিন না আসার বিনিময়ে তার কাছ থেকে এককালীন ৫০ হাজার এবং মাসে ৩ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে।
×