ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যানিলায় ট্রাম্প-মোদি বৈঠক

জোরদার হচ্ছে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

জোরদার হচ্ছে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে চলেছেন। যেসব বিশ্ব নেতার সঙ্গে ট্রাম্প ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখেছেন তাদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অন্যতম। ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সমম্বয়ে ইন্দো-প্যাসিফিক জোট গঠন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এদিকে নবগঠিত ওই জোটের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে চীন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এনডিটিভি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা, বাণিজ্য, সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক ট্রাম্পের সময় অনেক জোরদার হয়েছে, হোয়াইট হাউসের প্রিন্সিপাল ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি রাজ শাহ সোমবার এ কথা বলেছেন। ফিলিপিন্স সফররত ট্রাম্প আসিয়ান সম্মেলনের অবসরে সোমবার ম্যানিলায় মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর শাহ এ মন্তব্য করেন। শাহ বলেছেন, দু’দেশের মধ্যে অভিন্ন শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি বলেন, দু’দেশের সম্পর্কের মধ্যে কিছু অভিন্ন ইস্যু রয়েছে, যেমন গণতন্ত্র, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই, বাণিজ্য ইত্যাদি। তিনি বলেন, ট্রাম্প যেভাবে মোদির সঙ্গে কথা বলেন, তিনি খুব কম বিশ্ব নেতার সঙ্গেই এভাবে কথা বলেন। চলতি বছরের জুনে দুই নেতার মধ্যে প্রথম বৈঠক হয়। তবে ট্রাম্প গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প এশিয়ায় ১২ দিনের দীর্ঘ সফরের শেষ পর্যায়ে ফিলিপিন্সে যান। এর আগে ট্রাম্পের চীন সফর সম্পর্কে শাহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ট্রাম্প এখন চীনের বিষয়ে আগের চেয়ে নমনীয় মনোভাব পোষণ করেন। তিনি মনে করেন না যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে চীন একতরফাভাবে সুবিধা নিচ্ছে। দু’দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির জন্য চীন এককভাবে দায়ী নয় বলে ট্রাম্প এখন মনে করেন। ট্রাম্প আগে চীনের প্রতি এ অভিযোগ করেছেন। তিনি এখন মনে করেন, বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির কারণ দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় মার্কিন আলোচকদের দুর্বলতা ও তাদের সঠিকভাবে অগ্রাধিকার ঠিক করতে না পারার ব্যর্থতা। তবে শাহ মনে করেন, দু’দেশের মধ্যে শত কোটি ডলার বাণিজ্য ঘাটতির জন্য চীন এককভাবে দায়ী। এ ঘাটতি কমিয়ে আনতে সময় লাগবে, রাতারাতি এ সমস্যার সমাধান আশা করা যায় না। শাহ ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে বিশেষ উৎসাহ প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন, দু’দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক রয়েছে। গণতন্ত্র ও সন্ত্রাস দমন ছাড়াও বিভিন্ন ইস্যুতে দু’দেশের মদ্যে সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। তার মতে, এসব ক্ষেত্রে চীন ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোর ভূমিকা খুব নগণ্য। এদিকে এশিয়া-প্যাসিফিকের গুরুত্ব কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিকের দিকে ঝুঁকে পড়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছে চীন। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ চীন। চীনকে বাদ দিয়েই গড়া হয়েছে ইন্দো-প্যাসিফিক জোট। রবিবার ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত আসিয়ান জোটের শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া এ জোট গঠনের বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছায়। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবাধ নৌ চলাচল ও বিমান উড্ডয়নের স্বাধীনতা, পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি, সন্ত্রাস দমন ও সমুদ্র নিরাপত্তার বিষয়টিও চতুর্দেশীয় এজেন্ডায় স্থান পায়। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে বলা হয়, বর্তমানে আফগানিস্তান ও চীন সংক্রান্ত বিষয়ে একই অবস্থানে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একই লাইনে অবস্থান করা এবং ট্রাম্প দক্ষিণ এশিয়ায় তার পররাষ্ট্রনীতিতে ভারতের জোরালো অবস্থানের প্রতি স্বীকৃতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ‘এশিয়া-প্যাসিফিক’-এর বদলে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপন করেছেন। এ বিষয়ে বেজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং কাউকে অবহেলা না করাই বর্তমান সময়ে পারস্পরিক সম্পর্কের মূল বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নতুন কোন জোট করা বা কাউকে আলাদা করার পরিকল্পনা যথাযথ নয় বলেই চীন মনে করে।
×