স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেটে আম্বরচালা বড়বাজারে স্বামীর বসতভিটায় রহস্যজনক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ হাসিনা বেগম (৩০) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ৯টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে বিকেলে ঢামেক মর্গে হাসিনার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার বাবার বাড়ি পুরান ঢাকার বংশালের নওয়াবপুরের টেকেরহাট এলাকার ১৪ নম্বর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বজনের কান্নায় সেখানকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। রাত ৮টার দিকে তার লাশ আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের ছোট বোন সাবিনা অভিযোগ করেন, বিয়ের পর তারা জানতে পারেন বোন জামাই মাদকসাক্ত ও বেকার। এরপর মাদকের টাকার জন্য প্রায়ই সময় হাসিনাকে মারধর করত। এমনকি ঘটনার দিন রবিবার রাতেও হাসিনার কাছে মাদকের জন্য টাকা দাবি করে। পরে তাকে মারধর করে তার স্বামী হাসিনা। এ সময় হাসিনা তার ছোট বোন সাবিনাকে মোবাইলে জানান, তার স্বামী মোনায়েম তাকে মেরে ফেলবে। আমাকে বাঁচাও। এরপর হঠাৎ তার মোবাইলে লাইনটি কেটে যায়। সাবিনা আরও অভিযোগ করেন, রাত ১টার দিকে সিলেটে স্বামীর বসতভিটায় হাসিনা অগ্নিদগ্ধ হয়। অথচ তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন রাত ৩টার দিকে জানায়, হাসিনা নিজের শরীরে আগুন লাগিয়েছে। এরপর হাসিনাকে মারাত্মক অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সিলেট থেকে সোমবার সকাল ৯টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বোন অভিযোগ করেন, যৌতুকে টাকা না দেয়ায় বোন হাসিনাকে পুড়ে মেরেছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। নিহতের ভাই নাজিম জানান, ২০০৯ সালে সিলেটে বড়বাজার এলাকার মোঃ মোনায়েম আহমেদের সঙ্গে হাসিনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর জানতে পারি হাসিনার স্বামী মোনায়েম থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা কারণে হাসিনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাত। এক ছেলে এক মেয়ে জননী ছিলেন হাসিনা। তিনি জানান, ঢামেক হাসপাতালের হাসিনা মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তার বেকার ও মাদকাসক্ত স্বামী মোনায়েম কথা সন্তোষজনক ছিল না। তিনি একবার বলেন, পুড়ে যাওয়ার ঘটনা তিনি জানেন না। তিনি তখন পাশের রুমে ছিলেন। হাসিনার অগ্নিদগ্ধ হবার ১ ঘণ্টা পর তিনি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করেছে। তখন তার শরীর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। তিনি জানান, হাসিনাকে পুড়ে মারার ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করবেন তারা।