ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল ফুটবল ॥ সাইফ ২-১ ঢাকা আবাহনী, চট্ট. আবাহনী ৪-০ ফরাশগঞ্জ

আবাহনীকে হারিয়ে বদলা সাইফের

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১৪ নভেম্বর ২০১৭

আবাহনীকে হারিয়ে বদলা সাইফের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হারানোর চিত্তসুখই আলাদা। সোমবার সেই চিত্তসুখই অনুভব করল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের নবাগত দল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম খেলায় তারা ২-১ গোলে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে। ম্যাচের প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়েছিল সাইফ। প্রথম লেগে (গত ২৭ জুলাই) ঢাকা আবাহনীর কাছে হেরেছিল ৩-২ গোলে হেরেছিল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। দ্বিতীয় লেগে তারই মধুর বদলা নিল তারা। নিজেদের দ্বাদশ ম্যাচে এটা সপ্তম জয় সাইফের। ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা আবাহনী ও জামালকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এলো সাইফ। তাদের ওপরের এখন শুধু চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা আবাহনীর দ্বিতীয় হার। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে। প্রথম লেগের লড়াই শেষে সব দলই দ্বিতীয় লেগে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। সোমবার আবাহনী আর সাইফ স্পোর্টিং দুই ক্লাবই তাদের নতুন সংযোজন নিয়ে মাঠে নামে। আবাহনীতে আবারও ফিরে এসেছেন তাদের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা (গত লীগে করেছিলেন ১৭ গোল, এবার ফিরেছেন নতুন হেয়ারস্টাইল নিয়ে!) তেমনি সাইফ স্পোর্টিংয়ে নতুন করে ফিরে এসেছেন কয়েক মৌসুম জামালের হয়ে খেলা গোলমেশিন হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে (তিনি ফিরেছেন ভারতের ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব থেকে)। মজার ব্যাপারÑ ম্যাচে গোল করেছেন দুজনই! ১৬ মিনিটে ফ্রি কিক পায় ঢাকা আবাহনী। লেফট ব্যাক ওয়ালী ফয়সালের রেইনবো শট গ্রিপ করেন আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল আলম। ১৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সে বল বাড়ান সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের তরুণ প্রতিভাবান ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া। বক্সে বল পেয়ে সাইফের নব সংযোজন ইংলিশ ফরোয়ার্ড ন শেরিংহাম শট নিলে বল ফিরিয়ে দেন ওয়ালী ফয়সাল (ইংল্যান্ডের ষষ্ঠ স্তরের লীগে খেলেন শেরিংহাম)। ১৯ মিনিটে জামাল ভুইয়ার কর্নার বক্সে পেয়ে শট নেন ওয়েডসন, কিন্তু তার শট চলে যায় পোস্টের বাইরে। ২২ মিনিটে ওয়ালীর দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে প্রথম গোলের দেখা পেতে পারত। তবে ২৫ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ সৃষ্টি করেন শেরিংহাম। কিন্তু তার শট বক্সে প্রতিহত করেন আবাহনীর ঘানাইয়ান ডিফেন্ডার সামাদ ইউসুফ। ২৮ মিনিটে দ্রুতগতিতে আবাহনীর বক্সে ঢুকে পড়েন সাইফের মতিন মিয়া। কিন্তু দু’পাশ থেকে তাকে চেপে ধরেন আবাহনীর দুই ডিফেন্ডার। বল ক্লিয়ার করেন তারা। ৩২ মিনিটে ইচ্ছাকৃত হ্যান্ডবল করেন আবাহনীর সামাদ ইউসুফ। পেনাল্টি পায় সাইফ। ৩৪ মিনিটে পেনাল্টি শটে শহীদুল আলম সোহেলকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান ওয়েডসন এলসেলমে (১-০)। প্রথম ম্যাচেই নতুন দলের হয়ে গোল করে শুভসূচনা করলেন তিনি (আগের দুই মৌসুম মিলিয়ে মোট ৪৪ গোল করেছিলেন তিনি)। ৩৯ মিনিটে জুয়েল রানার কৌনিক শট দক্ষতার সঙ্গে হাতে নেন গোলরক্ষক। প্রথমার্ধ এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় সাইফ স্পোর্টিং। বিরতির পর ৫০ মিনিটে বল নিয়ে আবাহনীর বক্সে ঢুকে যাচ্ছিলেন জুয়েল রানা। তাকে ফাউল করেন রায়হান হাসান। রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে তাকে সতর্ক করেন। ডেঞ্জার জোনে ফ্রিকিক পায় সাইফ স্পোর্টিং। জামাল ভুইয়ার শট বক্সে লাফিয়ে উঠে হেড দিয়ে ক্লিয়ার করেন সানডে। ৫৬ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় সাইফের। পেনাল্টি এরিয়ায় বল পেয়ে ডান পায়ে শট নেন ওয়েডসন। কিন্তু বল মিস করেন। বল চলে যায় বারের অনেক ওপর দিয়ে। ৭৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সাইফ স্পোর্টিং। কর্নার থেকে দারুণ হেডে গোল করেন শেরিংহাম (২-০)। ৯০ মিনিটে পেনাল্টি পায় আবাহনী। গোল করেন সানডে (২-১)। তবে শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ। এদিকে দ্বিতীয় ম্যাচে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের বিরুদ্ধে আয়েশি জয় কুড়িয়ে নিয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। তারা জেতে ৪-০ গোলে। বিজয়ী দল প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল। জয়ী দলের মাসুক মিয়া জনি, তৌহিদুল আলম সবুজ, মনসুর আমিন এবং উদুকা এ্যালিসন ১টি করে গোল করেন। নিজেদের দ্বাদশ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বন্দরনগরীর দল। সমান ম্যাচে মাত্র ৬ পয়েন্ট নিয়ে ফরাশগঞ্জ আছে আগের মতোই টেবিলের তলানীতে। ৯০+৪ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহানুর রহমান।
×