ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদ্রোহ এবং’ নাটকের তৃতীয় মঞ্চায়ন আজ

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১৪ নভেম্বর ২০১৭

বিদ্রোহ এবং’ নাটকের তৃতীয় মঞ্চায়ন আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় নৈবদ্য থিয়েটারের প্রথম প্রযোজনা ‘বিদ্রোহ এবং’ নাটকের তৃতীয় মঞ্চায়ন হবে। সালাহ্উদদীন আহমেদ মিলটন রচিত নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন তরুণ নির্দেশক রাজীব রেজা। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন সিরাজউল ইসলাম দাদু, কানিজ ফাতেমা কাসেম, রাজীব রেজা, তানিয়া আলী চৌধুরী, মিজানুর রহমান স্বপন, মেহেদী হাসান, অলি উল্লাহ্ অলি, আব্দুল মজিদ মুন্না, আতিকুর রহমান অপু, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, সালাহ্উদদীন আহমেদ মিলটন, জাকির হোসেন প্রমুখ। নাটকের সেট নির্মাণ মিজানুর রহমান স্বপন, কোরিওগ্রাফি তানিয়া আলী চৌধুরী, পোশাক পরিকল্পনা কানিজ ফাতেমা কাসেম, আবহসঙ্গীত ইসমাইল ভূঁইয়া, নেপথ কণ্ঠ ফয়জুল্লাহ সাইদ, সঙ্গীত প্রক্ষেপণ হৃদয় খান, আলোকবিন্যাস মোঃ বজলুর রহমান, আলোক প্রক্ষেপণ ইমরুল। ‘বিদ্রোহ এবং’ নাটকটি ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় ঘটনা অবলম্বনে তৈরি। ওই বিদ্রোহ সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। ব্রিটিশ ঐতিহাসিকদের মতে এটি ছিল সিপাহী বিদ্রোহ। আবার ভারতীয় ঐতিহাসিকরা এ বিদ্রোহকে ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলে অবহিত করেছেন। তবে মতভেদ যাই থাকুক না কেন, ১৮৫৭ সালের ওই বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক ভারতীয় সিপাহীদের দীর্ঘদিন পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও অসন্তোষেরই বহিঃপ্রকাশ। সিপাহী বিদ্রোহ নাটকটিতে মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের পরিবার তথা লালকেল্লার অন্তরালে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চিত্র অতিসূক্ষ্মভাবে ফুটে উঠেছে। ক্ষমতা পাওয়ার নেশায় কখনও কখনও মা মাটি মানুষের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে তা ‘বিদ্রোহ এবং’ নাটকে সুস্পষ্ট। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে মীরজাফর আলী খাঁ, ঘসেটি বেগম জগৎশেঠ, রাজবল্লভের মতো অসংখ্য বেইমান বিশ্বাসঘাতককে যেমন দেখা যায়, তদ্রƒপ ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ও দেখা যায় অসংখ্য বেউমান ও বিশ্বাসঘাতকদের। মূলত আমাদের গণসংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ‘বিদ্রোহ এবং’ নাটকটিতে হাজার বছরের সংগ্রামী স্বপ্ন স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য তৎকালীন ভারতবর্ষের নির্ভিকচিত্তে জীবন আত্মদানের বলিষ্ঠ চেতনা বিধৃত হয়েছে। ‘বিদ্রোহ এবং’ নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক রাজীব রেজা বলেন, একটি ভাল প্রযোজনা নির্মাণের ইচ্ছা বা শখ কার না থাকে? তবে আমার একটু বেশিই। সফলতার কথা চিন্তা করি না তবে ভাল কিছু করার প্রয়াস থাকে নিরন্তর। এ ধরেনর কাজে কত ভাবনার জন্ম হয় আবার কত ভাবনার উদ্ভব হয়। সে ভাবনা নিয়ন্ত্রণ ও তার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমেই তৈরি হয় একটি প্রযোজনার। যেহেতু এটি একটি দলীয় কাজ সেহেতু এখানে থাকে নানাজনের নানা মতভ তবুও একটা জায়গায় মিলিত হই সুন্দরের স্বার্থে। অনেক কাটখড় পুড়িয়ে অনেক কিছু সহ্য করে জন্ম দিতে হয় একটি নাটকের। এর পেছনে কারোর অবদানই অস্বীকার করার মতো নয়। তবে এ নাটকের নাট্যকার সালাহ্উদদীন আহমেদ মিলটন, সদস্য কানিজ ফাতেমা কাসেমসহ সকল কর্মীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নাটকটি মঞ্চে এসেছে। সিপাহী বিদ্রোহ বা লালকেল্লা অতীব কঠিন ও সূক্ষ্ম একটি বিষয় আর এ বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি। কতটুকু পেরেছি জানি না, সে বিচারের দায়িত্ব দর্শকদের ওপর।
×