ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহির্প্রকাশ ॥ আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

খালেদা জিয়ার বক্তব্য  শেখ হাসিনার প্রতি  অন্ধ আক্রোশের  নগ্ন বহির্প্রকাশ ॥  আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি সমাবেশে দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহির্প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপি প্রধানের নির্দলীয় সরকারের দাবি নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। সে সময় যে সরকার থাকবে সেই সরকার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো নির্বাচন কমিশনকে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে। রবিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়া বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগকে ইতিবাচক রাজনীতি করার খালেদা জিয়ার আহ্বানের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় রয়েছে। বিএনপি যদি ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে আসে তাহলে আমরা তাদের স্বাগত জানাব। ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়ার ক্ষমার নমুনা হচ্ছে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা। একটাই নমুনা দিলাম। তিনি এখন ক্ষমার রাজনীতি না, ক্ষমার নাটক করছেন। কারণ তিনি জানেন তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে তাতে হয়তো তার দ- হয়ে যাবে। সে কারণে তিনি এখন ক্ষমার নাটক সাজাচ্ছেন। তার অভিযোগ, জুলুমতো করেছে বেগম জিয়া ও বিএনপি। তার ক্ষমতায় থাকতে আমাদের নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমামকে খুন করেছে। তাদের হাতে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীর রক্তের দাগ এখনও আছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আওয়ামী লীগ কেন ক্ষমা চাইবে? যিনি (খালেদা জিয়া) জুলুম করেছেন তিনি তো আজও জাতির কাছে ক্ষমা চাননি। তার কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। শেখ হাসিনা তো কোন অন্যায় করেন নাই, তিনি কেন ক্ষমা চাইবেন? সরকার বিদেশে এজেন্ট পাঠিয়ে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করিয়েছেনÑ খালেদা জিয়ার এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাকে (খালেদা জিয়া) আমি পরামর্শ দেব, আপীল বিভাগের যে পাঁচজন বিচারপতি এখন আছেন, তাদেরই জিজ্ঞাসা করুন। সরকার পদত্যাগে বাধ্য করেছে না তারা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কাজ করবেন না এমন বক্তব্য দিয়েছেন। সেটা তিনি (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) ভাল করেই জানেন, এ জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। বিদেশে বাংলাদেশের লোক গিয়ে প্রধান বিচারপতির মতো একজন ব্যক্তিকে পদত্যাগে বাধ্য করাবেÑ এমন অভিযোগ হাস্যকর। বিএনপি আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা প্রদানের দাবি ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএম সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি তিনি (খালেদা জিয়া) চান না, তিনি চান ২০০১ সালের মতো ম্যাকানিজমের নির্বাচন। সে জন্যই তিনি ইভিএম চান না। আমরা ইভিএম চাই। তবে বিএনপির এমন দাবিকে আমি অযৌক্তিক দেখি না, রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা তাদের অধিকার আছে। তবে এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার, তারাই ঠিক করবে। আওয়ামী লীগ সেনা মোতায়েন চাই না, কথাটা ঠিক নয়। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন সময়ের প্রয়োজনে তাদের দায়িত্ব দিতে পারে। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনি তো দুই দফায় দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়েছেন? এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ।
×