ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি তো নিজেরাই নিজেদের বাধা দেয় ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

বিএনপি তো নিজেরাই নিজেদের  বাধা দেয় ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সমাবেশে জনভোগান্তির জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের বিশৃঙ্খলাকে দায়ী করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যারা আজ রাস্তা অচল করে সভাসমাবেশ করে, ক্ষমতায় এলে তারা দেশ অচল করে দেবে। বিএনপির কর্মকা- থেকেই তা স্পষ্ট। খালেদা জিয়ার চেয়ে বড় সমাবেশ আমি কক্সবাজারে করেছি। কিন্তু শৃঙ্খলা বজায় থাকায় কোন জনদুর্ভোগ হয়নি। রমনায় জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৫তম সভা শেষে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপির সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে দলের নেতাকর্মীদের সরকার বাধা দিচ্ছে’- মর্মে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা খতিয়ে দেখতে হবে, খোঁজ নিতে হবে বাধাটা কে দিচ্ছে। বিএনপি তো নিজেরাই নিজেদের বাধা দেয়। তিনি বলেন, অতীতে এসব অভিযোগের খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেছে, এসব অভিযোগের বাস্তব কোন ভিত্তি নেই। আসলে কথায় কথায় নালিশ করা বিএনপির পুরনো অভ্যাস। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার কি সহায়ক, নাকি তত্ত্বাবধায়ক? বিএনপি কী চায়? তারা একবার বলে সহায়ক সরকার আবার বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আসলে তারা কী চায়, তা কি আজ পরিষ্কার করবেন বেগম খালেদা জিয়া?’ তারা কী চান, দেশের জনগণ তা জানতে চায়। কথা তো পরিষ্কার, সহায়ক ও তত্ত্বাবধায়ক তো মামাবাড়ির আবদার না। আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট, আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে যাবে না। সাংবাদিকের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৮ নবেম্বর ৭ মার্চের ভাষণের বিশ্ব স্বীকৃতির জন্য আমরা সমাবেশ দিয়েছি শনিবার সরকারী ছুটির দিন দেখে। এ ধরনের সমাবেশে জনভোগান্তি হবেই, এটাকে সহনীয় মাত্রায় রাখা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। কিন্তু আজ তো সহনীয় মাত্রায় নেই। সহনশীলতার মাত্রা অতিক্রম করে সমাবেশের নামে বিএনপি রাস্তা অচল করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার সংবর্ধনার দিনও একই অবস্থা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল, সেখানে দলের মহিলা নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও তাদের (বিএনপি) সম্মিলিত উপস্থিতির চেয়েও বেশি ছিল। তারপরও নেতাকর্মীরা ফুটপাথে সুশৃঙ্খল পরিবেশে অবস্থান নিয়েছিল। যারা আজ রাস্তা অচল করে সভা-সমাবেশ করে, তারা ক্ষমতায় এলে দেশ অচল করবে। ভটভটি বন্ধ করা কঠিন ॥ ওবায়দুল কাদের বলেন, থ্রি হুইলার, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন ও ভটভটি এগুলো বন্ধ করা কঠিন। কারণ, এটা নির্বাচনী বছর। চাইলেও জনপ্রতিনিধিরা বন্ধ করতে দেবেন না। ভোটের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাস্তবতা বুঝতে হবে। আপাতত সম্ভব নয়। তাই ভোট শেষ করে সরকার গঠন করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ সময় সেতুমন্ত্রী শীতে গাড়ির গতিবেগ সীমিত রাখা এবং কুয়াশায় সতর্কভাবে গাড়ি চালানোর অনুরোধ করে বলেন, ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল চালানোর সময় সাধারণ মানুষ হেলমেট পরলেও রাজনৈতিক কর্মীরা মানছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে সব সহযোগী সংগঠনকে অবহিত করা হয়েছে। ঢাকায় প্রবেশের প্রধান পয়েন্টগুলোয় এবং ঢাকা মহানগরের রাস্তায় যানবাহন সঙ্কট এবং দূরপাল্লার পরিবহনও রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না, এটা কেন হচ্ছে সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমি জানি না। তবে যতটুকু জানি অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে রাস্তা জ্যাম হয়েছে, যে কারণে ঢাকার ভেতরে গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। সরকারের পক্ষ থেকে কোন বিধিনিষেধ নেই।’ এ সময় পাশে থাকা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘রাস্তা তো অলরেডি ব্লকড হয়ে গেছে, এগুলোকে (বাস) তো ফিরে এসে আবার যেতে হবে। তারপর আবার অতীতে তো গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া, যাত্রী পুড়িয়ে দেয়া, এটা তো কারও না কারও অভ্যাস ছিল। এখন পরিবহন মালিকরা কেন ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি নিয়ে ঢাকায় আসবে? সভায় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন, নিরাপদ সড়ক চাইয়ের চেয়ারম্যান অভিনেতা ইলিয়াছ কাঞ্চন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান, পুলিশের ডিআইজি মোখলেছুর রহমান ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
×