ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রথম শ্রেণীতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি বাধ্যতামূলক ॥ স্কুলে নতুন বর্ষে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত

পাঠ্যবইয়ের বাইরে কোন শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন করা যাবে না

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

পাঠ্যবইয়ের বাইরে কোন শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন করা যাবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী বেসরকারী স্কুলের জন্য নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ¯ু‹লে কোন শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষাতেই এখন থেকে আর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবইয়ের বাইরে কোন প্রশ্ন করা যাবেনা। একই বিধান কার্যকর হবে সকল শ্রেণীতেই। তবে প্রথম শ্রেণীতে যথারীতি লটারির মাধ্যমে ভর্তি বাধ্যতামূলক। এদিকে সরকারী হাইস্কুলে ভর্তি ফরমের ফি ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে ভর্তি নীতিমালা অনুমোদন করা হয়েছে। এর ফলে এবার ভর্তি ফরম কিনতে পড়বে ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৭০ টাকায়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে সরকারী হাইস্কুলগুলোতে প্রথম শ্রেণীতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণী ছাড়া সকল ক্লাসে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় পাঠ্যপুস্তকের বাইরে কোন প্রশ্ন তৈরি করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বদলি শিক্ষার্থীদের ছয় মাসের মধ্যেই ভর্তি হতে হবে। যদি কোন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বদলি হয়ে আসার ছয় মাস পর ভর্তির জন্য আবেদন করেন, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। অন্যদিকে, সভায় এসএসসির বয়স নিয়ে আলোচনা হয়। দু’একজন কর্মকর্তা বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বয়সের বিধান বর্তমানে যা আছে, প্রথম শ্রেণীর ভর্তির বয়স বিবেচনায় নিলে তা সাংঘর্ষিক হয়। কেননা, প্রথম শ্রেণী ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স ৬ প্লাস নির্ধারিত আছে। সে হিসেবে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বয়স ১৬ প্লাস হয়ে যায়। এমন আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা হয়, ন্যূনতম ১৫ প্লাস বয়সসীমা এসএসসি পরীক্ষার্থী হতে পারবে। এ ছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি ফরম বিতরণ ও ভর্তি পরীক্ষা শেষ করতে হবে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, সরকারী হাইস্কুলে ভর্তি নীতিমালা তৈরিতে ভর্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাউশির বিভিন্ন সুপারিশের ভিত্তিতে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের সরকারী স্কুল ভর্তিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের সম্মতির ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ভর্তি ফরমের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১১ সালের পর থেকে সরকারী স্কুলে ভর্তি ফরমের দাম বৃদ্ধি করা হয়নি। এ ছাড়াও ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব কারণে সকলের পরামর্শে ফরমের দাম বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন সিদ্ধান্তগুলো ভর্তি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তা প্রকাশ করা হবে। এদিকে সরকারী হাইস্কুলে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত হলেও ফরম বিতরণ ও পরীক্ষার সময়সূচী নির্ধারিত হয়নি। মাউশিকে এটি চূড়ান্ত করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সংস্থাটির উপপরিচালক (মাধ্যমিক) এ কে এম মোস্তফা কামাল জানান, সভার কার্যবিবরণী পাওয়ার পর ফের বৈঠক করে পরীক্ষা সংক্রান্ত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। নতুন নীতিমালা সম্পর্কে তিনি বলেন, তেমন কোন পরিবর্তন এবার আনা হয়নি। তবে একটি বড় পরিবর্তন হচ্ছে, ভর্তি পরীক্ষা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের নিজের পাঠ্যবই থেকে প্রশ্ন করতে হবে। যে যে শ্রেণী পাস করে এসেছে সেখান থেকে প্রশ্ন হতে হবে। যেমন কেউ যদি কেউ দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হতে চায় তবে তাদের প্রশ্ন করতে হবে প্রথম শ্রেণীর পাঠ্যবই থেকে। তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তির জন্য প্রশ্ন করতে হবে দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠ্যবই থেকে। শিশুদের ভর্তি পরীক্ষার জন্য বিসিএসের বই থেকে প্রশ্ন করা যাবেনা। পাঠ্যবই থেকে প্রশ্ন করা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া কেবল সরকারী স্কুলে ভর্তির আবেদনের ফরমের মূল্য ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
×