ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ডিসেম্বরে চীন-ভারত-রাশিয়া ত্রিপক্ষীয় সংলাপ

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

ডিসেম্বরে চীন-ভারত-রাশিয়া ত্রিপক্ষীয় সংলাপ

ভারতের সঙ্গে বছরজুড়ে বৈরী সম্পর্কের পর জয়শ-ই-মোহাম্মদের নেতা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করতে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ চীন। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিক থেকে চলতি বছরটিকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে শেষ করতে এখনও একটা উপায় বাকি আছে এশিয়ার এই দুই অর্থনৈতিক শক্তির কাছে। সেটা হল, আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় রাশিয়া-ভারত-চীনের (আরআইসি) মধ্যে ত্রিপাক্ষিক সংলাপ। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের। দীর্ঘ আটমাসের আলোচনা-পর্যালোচনার পর দেশ তিনটি শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বসার কথার ভাবছে। সম্ভবত ১১ ডিসেম্বর পরবর্তী দফার আলোচনা হতে যাচ্ছে। আর এটা হবে রাশিয়া, ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পঞ্চদশ যৌথ বৈঠক। চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলের দিকে ত্রিপক্ষীয় এ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাইলামাকে অরুনাচল প্রদেশ সফরের অনুমতি দেয়ায় চীন হতাশা প্রকাশ করে। তবে পুরো বিষয়টা ছিল একেবারে অনানুষ্ঠানিক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ত্রিপক্ষীয় সংলাপের জন্য তিন দেশই ১১ ডিসেম্বরের বিষয়ে সায় দিয়েছে। আমরা আশা করছি, শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারব। ভারত চাচ্ছে, যেভাবেই হোক চলতি বছরে একটা আলোচনা হয়ে যাক। সেক্ষেত্রে একটা তারিখ নির্ধারণের কাছাকাছি যাওয়া দেশটির জন্য স্বস্তির হবে। ভারত চায় না, ২০১৭ সালটা কোন প্রকারের সংলাপ ছাড়াই শেষ হোক। আলোচনায় ফের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ ভারতের আলোচ্যসূচী হিসেবে থাকবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তার চীন ও রাশিয়ার প্রতিপক্ষের সঙ্গে পৃথকভাবে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন, তাতে তিনি সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করবেন বলে জানা গেছে। মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে না পারায় ভারত সরকার চরম হতাশা ব্যক্ত করেছে। সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজন কথার কথায় সীমাবদ্ধ না রেখে একটা শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করতে বৈঠকের পর একটি যৌথ ইশতেহার ঘোষণা নিশ্চিত করতে ভারত রাশিয়ার সমর্থনের দিকে তাকিয়ে আছে। এ বছরে সিয়ামেন ব্রিকস ঘোষণায় পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে রাশিয়া কার্যত ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। যদিও এর আগের বছর ভারতের গোয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে চীন বিরোধিতা করেছিল। জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় আজহারকে অন্তর্ভুক্ত করা দ্বিতীয় বছরের মতো ঠেকিয়ে দিয়েছে চীন। ভারত এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এ ধরনের দ্বিমুখী ও সুবিধাবাদী মনোভাব সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধকে দুর্বল করে দিবে। এপ্রিলের বৈঠক থেকে চীন নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর ভারত মে মাসে আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল। রাশিয়া তাতে সম্মতি জানালেও সময়সূচী মিলছে না বলে চীন নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। সিয়ামেন ব্রিকস সম্মেলনের পর রাশিয়া আশা করেছিল, চীন আজহারের বিষয়েও তাদের মনোভাবে পরিবর্তন আনবে। তবে ডোকালামে সামরিক অচলাবস্থা ও আজহারকে রক্ষায় চীনের অনড় অবস্থানের মুখে ডিসেম্বরের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটি হবে চলতি বছরের সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত কূটনৈতিক সমাবেশ। আগের বছরে মস্কোর বৈঠকে যৌথ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছিল। তাতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
×