ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল গড়ার প্রত্যয়

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল গড়ার প্রত্যয়

এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জোট এপেকের শীর্ষ বৈঠক শনিবার ভিয়েতানামের হ্যানয়ে শেষ হয়েছে। সম্মেলনের শেষে দেয়া যৌথ ঘোষণায় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়ন, সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধ বিশেষ করে সন্ত্রাসে আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এএফপি ও ওয়েবসাইট। ২১ জাতি জোট এপেকের শীর্ষ নেতাদের একটি পূর্ণাঙ্গ সমাপনী অধিবেশন শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। এতে তারা যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তার অন্যতম ছিল আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য। তারা আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংহতি বাড়ানোর জন্য এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিটিএএপি) বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও সম্মেলন শেষে দেয়া দানাং ঘোষণায় সম্ভাব্য অন্যান্য ক্ষেত্রেও মুক্ত বাণিজ্য এলাকা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘোষণায় বলা হয়, ‘এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো ভবিষ্যতে একটি সর্বাত্মক মুক্ত বাণিজ্য এলাকা প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাওয়াকে আমরা সমর্থন করি। ব্যাঙ্কক চুক্তি নামে পরিচিত এ অঞ্চলের প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিটি সম্পাদিত হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এটি কার্যকর ছিল। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, লাওস, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র ও শ্রীলঙ্কা ওই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত ছিল। এবারের সম্মেলনে এপেক নেতৃবৃন্দ পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন বলে জানিয়েছেন। ঘোষণায় বলা হয়, ‘আমরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলেটেশন এগ্রিমেন্টের (এফটিএ) পূর্ণ বাস্তবায়ন সমর্থন করি। আমরা মনে করি এ চুক্তি সব দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। ডব্লিউটিওর ১১তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক সফল করতে আমরা সংস্থার অন্য সদস্যদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেতে রাজি আছি।’ এপেক সম্মেলেনের এ ঘোষণায় আরও বলা হয়, ‘নিয়মতান্ত্রিক মুক্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও সবাইকে নিয়ে একটি বহু সংস্কৃতিক ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। ডব্লিউটিওকে কার্যকর করে তুলতে একসঙ্গে কাজ করে যেতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ মুক্ত বাণিজ্য এলাকা প্রতিষ্ঠায় এপেক ও ডব্লিউটিও একে অপরের পরিপূরক। একই এজেন্ডা সামনে রেখে উভয় জোট কাজ করে যাচ্ছে। এপেকের গৃহীত চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন করা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়। জোটভুক্ত দেশগুলো স্বেচ্ছামূলক ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে থাকে। প্রতিটি সদস্য দেশের মতকে এখানে সমান মর্যাদা দেয়া হয়। ডব্লিউটিও বা অন্যান্য বহুজাতিক বাণিজ্যিক জোটের মতো এপেক সদস্যরা জোটের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য থাকে না। এবারের সম্মেলনে আঞ্চলিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার হুমকি বেড়ে যাওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়। যৌথ ঘোষণায় এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অর্থায়নের পথগুলো বন্ধ করে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সম্প্রতি ফিলিপিন্স সরকার মিন্দানাও দ্বীপের মারাউইয়ে জঙ্গীবিরোধী সামরিক অভিযান চালায়। ১৭ অক্টোবর দেশটির প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতের্তে মারাউই অভিযানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেন। দীর্ঘদিন চলা অভিযানে স্থানীয় বেসামরিক লোকজনকেও ভ্ক্তুভোগী হতে হয়েছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ কার্বন গ্যাস নিঃসরণ কমানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন। ঘোষণায় বলা হয়, ‘আঞ্চলিক টেকসই প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়ানোর ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করি। পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ ও বাণিজ্য, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সহজপ্রাপ্যতা এবং টেকসই উন্নয়ন, দূষণমুক্ত ও কার্যকর নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারকে আমরা উৎসাহিত করি।’ এর আগে সম্মেলনের প্রথম দিন দেয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র আর কোন দেশকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ছাড় দেবে না।
×