ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হাতুরাসিংহের বিকল্প খুঁজছে বিসিবি

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১২ নভেম্বর ২০১৭

হাতুরাসিংহের বিকল্প খুঁজছে বিসিবি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে চান্দ্রিকা হাতুরাসিংহে যুগের সমাপ্তি ঘটেছে কিনা তা নিশ্চিত হয়নি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর আর বাংলাদেশে ফেরেননি তিনি। বর্তমানে অবস্থান করছেন নিজের দেশ শ্রীলঙ্কায়। সেই দলটিরই প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব শুরু করবেন হাতুরাসিংহে এমন গুঞ্জনই শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোনভাবেই আর না ফিরলে হাতুরাসিংহের উত্তরসূরি খোঁজার ক্ষেত্রে কোন তাড়াহুড়া করবে না বিসিবি। এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। তিনি জানিয়েছেন ২/৩ মাসের মতো সময় নিয়ে উপমহাদেশের ক্রিকেট বুঝতে সক্ষম, দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে সহজেই মানিয়ে উঠতে পারবেন এবং ক্রিকেটারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে বোঝাপড়াটা ভাল হবে তেমন কোন ভালমানের কোচই নিয়োগ দেবে বিসিবি। এ সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে যে কাউকেই নিয়োগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করেছেন হাতুরাসিংহে। দেশের ক্রিকেটকে নিয়ে গেছেন মর্যাদার আসনে। তার অধীনেই ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের সেরা র‌্যাঙ্কিং ৭ নম্বরে উঠেছে বাংলাদেশ দল। তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই পেয়েছে ঈর্ষণীয় কিছু সাফল্য। তবে এই দীর্ঘ দায়িত্বের সময়ে নানা সময়ে অনেক তর্ক-বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছেন তিনি দল পরিচালনায় কৌশলগত কিছু পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে। সেই হাতুরাসিংহে যুগের অবসান ঘটতে চলেছে এবার। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। এরপর তার সঙ্গে বিসিবির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমাদের সিইও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আলোচনাও হয়েছে। সে বিষয়ে আমি পুঙ্খানুপুঙ্খ কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে তিনি যে চলে যেতে চাইছেন সে বিষয়েই আলোচনা চলছে।’ হাতুরাসিংহের উত্তরসূরি হিসেবে এখন যোগ্য একজন কোচ খুঁজে বের করা জরুরী। কারণ তার অধীনে যে সাফল্য পেয়েছে দল সেটাকে ধরে রাখতে হলে ভালমানের একজন পেশাদার কোচই নিয়োগ করতে হবে। আর সেক্ষেত্রে সময়টাও অনেক বেশি প্রয়োজন বলেই মনে করছে বিসিবি। এ বিষয়ে জালাল বলেন, ‘বতর্মান সময়ে ভালমানের কোচ পাওয়া বেশ কঠিন। কারণ তারা আসলে কোন না কোন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। এজন্য আমাদের সময় লাগবে। আমরা তাড়াহুড়া করতে চাই না। আমরা ভালমানের কোচ খোঁজার জন্য অনেক সময় নেব। যেহেতু এখনও অনেক সময় আছে আমাদের পরবর্তী খেলার। তার আগে যদি কোনভাবে না পাই সেক্ষেত্রে হয়তো অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে কাউকে আনা হতে পারে।’ অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে গুঞ্জন রয়েছে দেশেরই কোন কোচকে দায়িত্ব দেয়ার। সেক্ষেত্রে অনেকেরই নাম এসেছে। এর মধ্যে সাবেক অধিনায়ক, জাতীয় দলের বিভিন্ন সময়ে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে বিভিন্ন দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বিসিবির বর্তমান পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের নামটাও শোনা যাচ্ছে। তিনিও সে দায়িত্ব নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত আছেন বলেও জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জালাল বলেন, ‘এখনও আমরা এসব নিয়ে আলোচনা করিনি। বোর্ড এটা নিয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেবে যে কাকে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তার নামটাও (সুজন) আসতেই পারে। সেক্ষেত্রে আলোচনা হবে।’ তবে বিসিবির চাওয়া এশিয়ার ক্রিকেট সংস্কৃতি, সামাজিক পরিস্থিতি, ক্রিকেটারদের মনমানসিকতা বুঝতে সক্ষম এবং পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে সবার সঙ্গে সদ্ভাব ধরে রেখে কাজ করতে সক্ষম কাউকে কোচ হিসেবে নেয়ার। সেক্ষেত্রে এশিয়ার কাউকেই হয়তো বেশি প্রাধান্য দেবে বিসিবি পরবর্তী কোচ হিসেবে। এ বিষয়ে জালাল বলেন, ‘বিষয়টি এমন নয় যে আমরা এশিয়ার বাইরে কাউকে চিন্তাই করব না। আসল ব্যাপার হচ্ছে বোঝাপড়ার। সবদিক ঠিক রেখে যদি কাউকে পাওয়া যায় তাহলে তাকেই নেয়া হবে। আমাদের ক্রিকেটার, ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া, ভাষাগত যোগাযোগ, সংস্কৃতির সঙ্গে যিনি মানিয়ে নিতে পারবেন তাকেই আমরা আনব। ভাল কাউকে আনতে হলে তো উচ্চ মানের সুযোগ-সুবিধাও দিতে হবে। সেটার জন্য আমরা প্রস্তুতও আছি। তবে এসব কিছুর জন্যই সময় লাগবে। আমরাও ভেবেচিন্তেই এ বিষয়ে এগোব।’
×