ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মো. নাবিল তাহমিদ রুশদ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ সবুজ ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১২ নভেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ সবুজ ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ

চলছে আলপনা আঁকার কাজ। হলের ফ্লোর থেকে রাস্তার মোড় পর্যন্ত শুধু রং-বেরঙের আলপনা আঁকা। নাহ! পহেলা বৈশাখের কথা বলছি না। বলছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বার্ষিক হল ফিস্টের কথা। সবুজ ক্যম্পাসে যেন উৎসবের বন্যা বয়ে যায় এই উৎসবে। ক্লাস, প্রাকটিক্যাল ও এ্যাসাইনমেন্টের চাপ থেকে মুক্তি পেতে এমন উৎসবের যেন কোন বিকল্প নেই। স্কুল-কলেজের গ-ি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ পেরোনো যে কোন শিক্ষার্থীর জন্য একটা স্বপ্নের মতো। একজন শিক্ষার্থী হয়ত চিন্তাও করতে পারে না বিশ্ববিদ্যালয়ে তার জন্য কত চমক অপেক্ষা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পড়াশোনা করার জন্য নয়। কীভাবে নতুন কিছু চিন্তা করতে হয় তা শেখা যায় এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। সৃজনশীলতার বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে অনন্য ভূমিকা। এ রকমই ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনা নিয়ে হল ফিস্ট উদযাপন করেছে বাকৃবির হোসেন শহীদ সোহ্্রাওয়ার্দী হলের প্রথম বর্ষের ছাত্ররা। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২ টায় পটকা ফুটিয়ে হল ফিস্টের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই হলের শিক্ষার্থী মিয়া মোহাম্মদ রুবেল কেক কেটে ও আতশবাজির মাধ্যমে ফিস্টের উদ্বোধন করেন। কেক কাটার পরেই মশাল হাতে শুরু হয় মিছিল। রাতের অন্ধকার রাস্তা আলোকিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড় ও কেয়ার হয়ে এগিয়ে যায় মশাল মিছিলটি। মশাল মিছিল শেষে চলে ভূরিভোজ। শুক্রবার ‘লুঙ্গি মার্চ’ নামে মজার ইভেন্ট করা হয়। লুঙ্গি-সানগ্লাস আর টি-শার্ট পরে পুরো ক্যাম্পাস চক্কর দেয় ছাত্ররা। সঙ্গে ছিল ড্রাম, ব্যান্ড দল আর অর্গান। এ রকম অসাধারণ কিছু মুহূর্ত ক্যামেরায় ধরে রাখেন ওই হলের শিক্ষার্থী মো. শাহিনুর। শনিবার সকালটা শুরু হয় হাঁড়িভাঙ্গা খেলা দিয়ে। তারপর হাজার পাওয়ারের রং আর সাদা পোশাকে নিয়ে ট্রাকে উঠে যায় সবাই। সাউন্ডবক্সে গানের তালে তালে চলে রং নিয়ে মাখামাখি। সারা ক্যাম্পাস ঘোরাঘুরির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাডে গিয়ে থামে ট্রাক। সেখানে আগে থেকে মাপঝোখ করে রাখা পজিশনে শুয়ে পড়ে হোসেন শহীদ সোহ্্রাওয়ার্দী হলের নাম (ঐঝঝঐ) লেখে তারা। এ রকম একটি মুহূর্তের ছবি তুলেছেন ওই হলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শুভ কুমার। রাতে হলের সামনে স্টেজ সাজিয়ে ওপেন কনসার্ট হয়। কনসার্ট শেষে ফানুস উড়িয়ে ফিস্টের সমাপ্তি হয়। হল ফিস্ট নিয়ে ওই হলের শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসান বলেন, এই তিন দিন আমরা সবাই নিজের মতো করে আনন্দ করেছি। স্টেজে দাঁড়িয়ে গিটার বাজানোসহ বিভিন্ন ইভেন্টগুলো উপভোগ করেছি। এই ফাঁকে হলের বড় ভাইদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ পেয়েছি। এই দিন কয়টা স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকবে। শুধু সোহ্্রাওয়ার্দী হলই নয় বাকৃবির ফজলুল হক হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল, শহীদ শামসুল হক হল, শহীদ জামাল হোসেন হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরও আলাদাভাবে হল ফিস্ট উদযপান করে। তবে শহীদ শামসুল হক হলের শিক্ষার্থীরা ফিস্ট উপলক্ষে ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার মহৎ উদ্যোগ নিয়েছিল। সব মিলিয়ে বর্ণালী সাজে সেজেছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস। উৎসবের আমেজে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল বাকৃবি ক্যাম্পাস।
×