ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি

বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধের চেষ্টা কম, অগ্রগতি নেই বললেই চলে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১২ নভেম্বর ২০১৭

বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধের চেষ্টা কম, অগ্রগতি নেই বললেই চলে

বিশ্বকে অবশ্যই গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনার পাশাপাশি বাতাসে থাকা কোটি কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা করা না হলে এখনকার তরুণরা জলবায়ুর ধ্বংসযজ্ঞের অতলে হারিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি করেছেন বিজ্ঞানীরা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে বলে ত্রিশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে সতর্ক বার্তা দিয়েছিলেন জেমস হানসেন। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারগুলো সেই বাস্তবতা এড়িয়ে যাচ্ছে। আমরা এমন এক পথ ধরে এগুচ্ছি, যেটা সবার জন্য আর যথেষ্ট কল্যাণকর থাকছে না। -খবর এএফপির। ২০১৩ সাল পর্যন্ত নাসার গডডার্ড ইনস্টিটিউট ফর স্পেস স্টাডিজের প্রধান ছিলেন হানসেন। জলবায়ু সঙ্কট বৃদ্ধিতে অবদান রাখায় তিনি এবং তার ১৮ বছর বয়সের নাতনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। চলতি সপ্তাহে জার্মানির বনে জাতিসংঘ জলবায়ু সংলাপে অংশ নিয়ে এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির ব্যবহার বিধির অস্পষ্ট ও অস্বস্তিকর বিষয়গুলো নিয়ে ১৯৬টি দেশের কয়েক হাজার কূটনীতিকের ১২ দিনব্যাপী দেন দরবারের পর ২০২০ সালের দিকে সেটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা দুই ডিগ্রী সেলসিয়াসে কমিয়ে আনতে ২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে চুক্তিটি সই হয়। মাত্র এক ডিগ্রী উষ্ণতা বাড়লে পৃথিবী নামের গ্রহটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। প্রাণঘাতী তাপপ্রবাহ, প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড় ও খরা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করবে। চুক্তিতে অবশ্য কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের মাত্রা ১.৫ সেলসিয়াসে সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। হানসেন বলেন, এটা সত্যিই বিশাল অনুপ্রেরণার বিষয়। যদি তাপমাত্রা দুই ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌঁছায়, তবে এটা আমাদের নিশ্চিত করে যে সমুদ্র তীরবর্তী ও উপকূলীয় শহরগুলো আমরা হারাব। সেগুলো সমুদ্রের সঙ্গে মিশে যাবে। এখন একমাত্র প্রশ্ন হচ্ছে, কত দ্রুত এমনটা ঘটবে। ভূ-উপরিভাগের তাপমাত্রা, বায়ুম-লের কার্বন ডাই-অক্সাইড ও সমুদ্র স্তর লাখ লাখ বছর ধরে সমান তালে বাড়ছে। তিনি বলেন, গত বছরে বায়ুম-লের কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ শিল্পযুগের পূর্বের চেয়ে চল্লিশ গুণ বেশি ছিল। গত আট লাখ বছরের মধ্যে যেটা সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের আবহাওয়া সংস্থা। বায়ুম-লে তাপমাত্রার পরিমাণ গত কয়েক দশক ধরে কেবল বাড়ছে। একটা নিরাপদ পৃথিবীর জন্য তাপমাত্রা কতটুকু সীমিত রাখা দরকার? জাতিসংঘের বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তঃসরকারী প্যানেল (আইপিসিসি) জানিয়েছে, আমাদের অবশ্যই দুই ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে থাকতে হবে। তবে হানসেন বলেন, জাতিসংঘের দেয়া তথ্যও ভয়ঙ্কর। তারমতে, সেটা হতে হবে ন্যূনতম এক ডিগ্রী। তার হিসাব হল, গ্রিনল্যান্ড ও এ্যান্টার্কটিকায় বরফের বিস্তার গলে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রের স্তর বেড়ে যাবে। পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক মাইকেল ম্যান বলেন, হানসেন আস্থা রাখার মতো যুক্তি দেখিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক ঘটনা অচিরেই ঘটবে। যেটার ক্ষয়ক্ষতি আমাদের ভাবনারও বাইরে হবে।
×