ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার পারবে কি পেরু?

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১০ নভেম্বর ২০১৭

এবার পারবে কি পেরু?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দোরগোড়ায় ফুটবল বিশ্বকাপের পরবর্তী আসর। ইতোমধ্যেই লাতিন আমেরিকা থেকে মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে চার দল। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে চূড়ান্তপর্বে জায়গা করে নিতে প্লে-অফে মুখোমুখি হবে পেরু ও নিউজিল্যান্ড। ওয়েলিংটনে শনিবার প্রথম প্লে-অফে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের দল পেরুকে আতিথ্য দেবে ওশেনিয়া অঞ্চলের দল নিউজিল্যান্ড। পেরুর সামনে এবার ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ফিফা বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ। ১৯৮২ সালের পর আর কোন বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলা হয়নি তাদের। সেই দুঃখ ভুলার দারুণ সুযোগ এবার। কেননা, কাগজে-কলমে হট ফেবারিট যে পেরুই। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এই মুহূর্তে তাদের অবস্থান দশে। ইংল্যান্ড (১২), ইতালি (১৫) এমনকি লাতিন আমেরিকার দল উরুগুয়েরও সাত ধাপ ওপরে। অন্যদিকে ওশেনিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের অবস্থান ১১২। প্লে-অফের ইতিহাসে র‌্যাঙ্কিংয়ের এতো পেছনে থেকে এর আগে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে খেলার নজির নেই কোন দলের। যে কারণে নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে পেরুর রাশিয়া যাওয়াটা প্রায় নিশ্চিতই ধরে নিয়েছেন ফুটবলবোদ্ধাদের অনেকেই। তাছাড়া দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকেট কাটতে মরিয়া পেরুও। এ প্রসঙ্গে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগেই পেরুর প্রেসিডেন্ট পেদ্রো পাবলো কুসিজিনস্কি বলেন, ‘আমরা সকলেই যোদ্ধা এবং জয়ের জন্যই সেখানে যাচ্ছি। আমি জানি পেরু জিতবে। আর বিজয়ীদের শুভ কামনা জানাতেই যাচ্ছি আমি।’ ১৯৩০ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার আমন্ত্রণ পেয়েছিল পেরু। কিন্তু উরুগুয়েতে অনুষ্ঠিত সেই টুর্নামেন্টের দুই ম্যাচের দুটিতেই হার মানে তারা। ১৩ দলের সেই টুর্নামেন্টে দশম স্থানে থেকে বাড়ি ফিরেছিল পেরু। এরপর ’৭০, ’৭৮ এবং ’৮২ বিশ্বকাপেও খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা। পেরুর সর্বোচ্চ ফলাফল ১৯৭০ বিশ্বকাপে। মেক্সিকোর সেই আসরে সপ্তম স্থানে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছিল তারা। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড দুইবার বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ১৯৮২ বিশ্বকাপে প্রথমবার অংশগ্রহণের পর ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও জায়গা করে নেয় কিউইরা। এবার কী পারবে চমকপ্রদ কিছু উপহার দিতে? নিউজিল্যান্ডের কোচ অবশ্য তা জানেন। তাই তো পেরুর বিপক্ষে ১২ সদস্যের দল সাজানোর পরিকল্পনা করছেন এ্যান্ডি হাডসন। ১২তম সদস্য কে জানেন? ওয়েলিংটনে আসা সাড়ে আটত্রিশ হাজার দর্শক। হ্যাঁ, নিউজিল্যান্ডের কোচ জানান, পেরুর বিপক্ষে ম্যাচ দেখতে আসা সমর্থকরাও হবে তাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। তবে পেরু-নিউজিল্যান্ডের এই ম্যাচে থাকছে না কোন হলুদ কার্ড। পেরুভিয়ান ফুটবল ফেডারেশনই (এফপিএফ) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে। কোন হলুদ কার্ডের ব্যবস্থা না রাখতে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার কাছে এফপিএফ আবেদন জানায়। তাদের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, নিউজিল্যান্ড বাছাইপর্বে অনেক কম ম্যাচ খেলেছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে তারা মাত্র সাতটি ম্যাচ খেলেছে। এছাড়াও দুই লেগের প্লে-অফে অংশ নেয় কিউইরা। সেখানে পেরুকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলতে হয়েছে ১৮টি ম্যাচ। নিউজিল্যান্ডের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ম্যাচ খেলা পেরু ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার গ্রুপে থেকে পঞ্চম হয়েছিল। বেশি ম্যাচ খেলায় প্লে-অফ ম্যাচে হলুদ কার্ডের খড়গে পড়তে চায় না লাতিন আমেরিকার দেশটি। ফিফা সেই আবেদনে সাড়া দেয়ায় প্লে-অফে নামার আগে নিউজিল্যান্ড ও পেরুর খেলোয়াড়দের পাশে কোন হলুদ কার্ড থাকবে না। পেরু ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট জানান, এটা দুই দেশের ফুটবল ফেডারেশন আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিজেদের ফুটবলারদের নির্ভার থেকে খেলানোর জন্যই দুই দেশ এমনটাই চেয়েছে। যেহেতু দুই দলের মধ্যে একটি মাত্র দলই বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করবে। শনিবার ওয়েলিংটনে প্রথম প্লে-অফ ম্যাচ খেলার চারদিন পর দ্বিতীয় লেগে নিউজিল্যান্ডকে আতিথ্য দেবে পেরু। দুই লেগের ফলাফল শেষে একটি দল ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নেবে।
×