ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মার চরে ট্রাক্টরের আওয়াজ ॥ কর্মব্যস্ত কৃষক

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১০ নভেম্বর ২০১৭

পদ্মার চরে ট্রাক্টরের আওয়াজ ॥ কর্মব্যস্ত কৃষক

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিস্তীর্ণ চর জেগে ওঠার পর রাজশাহীর পদ্মায় নতুন আশা জেগেছে কৃষকদের মনে। বিস্তীর্ণ বালুচরের উর্বর জমিনে চাষাবাদে নেমেছে কৃষক। সমানে শুরু হয়েছে কলের লাঙ্গলে (ট্রাক্টর) চাষাবাদ। সোনার ফসল ফলানোর প্রস্তুতি নিয়ে চলছে চাষ। নতুন আনন্দে জেগে ওঠা চরে সবুজ ফসলের স্বপ্ন দেখছে চাষীমন। তাই বিস্তীর্ণ চরে এখন শুরু হয়েছে চাষীদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম। রাজশাহী অঞ্চলে পদ্মার বুকে জেগে ওঠা সবকটি চরে এখন চাষীদের কর্মব্যস্ততা। কৃষি বিভাগের কাছে চরের জেগে ওঠা জমির সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও হাজার হাজার হেক্টর জমি এখন প্রস্তুত হচ্ছে রবি ফসলের জন্য। কৃষি বিভাগ জানায়, চরের জমির হিসাব তাদের কাছে নেই। চরের জমিতে উৎপাদিত ফসলও কৃষি বিভাগের হিসাবে থাকে না। তবে হাজার হাজার হেক্টর চরের জমিতে রবিশস্য আবাদ হয়। নদীপাড়ের জমিগুলোতে কয়েক বছর থেকে তিনটি ফসলও হচ্ছে। বাঘা উপজেলার চরের বাসিন্দা আকবর হোসেন জানান, তিনি মৎস্যজীবী। পদ্মায় যখন থৈ থৈ পানি থাকে তখন নদী থেকে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে পদ্মায় পানি কমে গেলেই পেশা বদল হয় তার। জাল-নৌকার বদলে হাতে তুলে নেন কোদাল-কাস্তে। চরের জমিতে ফলান সোনার ফসল। এবারও পদ্মায় পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। আকবর জানান, দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের এলাকায় নদীর পানি কমে চর জেগে উঠেছে। সে জমিতে তিনি কলাইয়ের বীজ বপন করেছেন। কলাই শেষে আবাদ করবেন সরিষার। তারপর তিল। জমি থেকে তিল ওঠার কিছুদিন পরই নদীতে আসবে পানি। তখন আবার জাল নিয়ে নদীতে নামবেন মাছ শিকারে। শুধু বাঘা নয়, নগরীসহ জেলার গোদাগাড়ী, চারঘাট ও পবা উপজেলার পদ্মা নদীতে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমির সৃষ্টি হয়েছে চর জেগে। পদ্মাপারের হাজার হাজার কৃষক এখন উদ্যোগী হয়েছেন গম, মসুর, মটর ও ছোলাসহ নানান জাতের ফসল ফলাতে। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে কৃষক সমিতি। এ সমিতির আওতায় কৃষকরা একত্রিত হয়ে বিস্তীর্ণ চরে চাষাবাদে নেমেছেন।রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দেব দুলাল ঢালী বলেন, প্রতি বছর নতুন নতুন চর সৃষ্টি হচ্ছে। আবার অনেক জায়গায় আগের বছরের চরে পানি থাকছে। তাই চরের জমির হিসাব তাদের কাছে নেই। তবে চরের হাজার হাজার বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে অনেকেরই জীবন চলে। তাদের উৎপাদিত ফসল বড় ভূমিকা রাখছে দেশের অর্থনীতিতে।
×