ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নদী দখল করে পুকুর খনন করলেন ইউপি সদস্য

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১০ নভেম্বর ২০১৭

নদী দখল করে পুকুর খনন করলেন ইউপি সদস্য

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ তেতুঁলিয়া উপজেলায় ড্রেজার নেতা হিসেবে খ্যাত এক ইউপি মেম্বার ও কৃষক লীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই অবৈধভাবে নদী কেটে পুকুর খননের অভিযোগ ওঠেছে । তিনি শালবাহান ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি এবং একই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য নুর ইসলাম। তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নদীর গতি বন্ধ করে খনন করা পুকুরটির পাড় থেকে বালি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সেই সঙ্গে একই সময়ের মধ্যে জমির কাগজপত্রও দাখিল করতে বলা হলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাথর উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন। অভিযোগে জানা গেছে, মাঝিপাড়া এলাকার লোহাকাচি গ্রাম দিয়ে বয়ে যাওয়া ভারত থেকে আগত সীমান্ত নদী ডাহুকের গতি বন্ধ করে ৫০ শতক জমিতে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করছিলেন এই কৃষক লীগ নেতা। তারই ছত্রছায়ায় এলাকার আরও অনেকে ডাহুক নদীর গতি বন্ধ করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করছিলেন। ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর তোলার পর নদীর গতি পরিবর্তনের পাশাপাশি নদীর এই অংশে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্তগুলোর পাড় বেধে তিনি মেশিন দিয়ে পুকুরও খনন করেন। এর আগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের অপরাধে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এই কৃষক লীগ নেতার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাও রয়েছে। তেঁতুলিয়া থানা পুলিশের দায়ের করা এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হলেও আইনের ফাঁক-ফোঁকরে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও ড্রেজার দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে সরকারী কর্মকর্তা, সরকারী দলের নেতা, জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অসাধু সদস্য এবং কতিপয় নামধারী সাংবাদিককে ম্যানেজ করে তেঁতুলিয়া উপজেলায় শতাধিক অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করেন। তার নেতৃত্বে এসব ড্রেজার মেশিন চালিয়ে কোটিপতি বনে যান। বিপুল বিত্ত- বৈভবের মালিক হওয়ায় সরকারী দলেরও নেতা বনে যান। ক্ষমতাধর এই নেতা স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেও সহযোগিতায় সরকারী নদী কেটে পাথর উত্তোলন এবং পুকুর খননের কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন মর্মে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের খামির উদ্দিন ও আবু জাফর নামের দুই তহশিলদারকে অন্যত্র বদলি করে দেন। বুধবার বিকেলে সরেজমিনে নদী কেটে পুকুর খননের খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস।এসময় নুর ইসলাম জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করতাম। ২০০৯ সালে বাদ দিয়েছি । নদীর কিছু অংশ ভুল করে কেটেছি । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস জানান, নদী কেটে পুকুর খননের বিষয়ে ছাড় দেয়া হবেনা। কাগজপত্র দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
×