ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্যারাডাইস পেপার্স নিয়ে বার্নি স্যান্ডার্সের প্রতিক্রিয়া

বিশ্বে চলছে মুষ্টিমেয়র শাসন

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ৯ নভেম্বর ২০১৭

বিশ্বে চলছে মুষ্টিমেয়র শাসন

বিশ্বে এখন মুষ্টিমেয়র শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বার্নি স্যান্ডর্স। মুষ্টিমেয় বিলিয়নিয়ার এখন বিশ্ব শাসন করছে। প্যারাডাইস পেপার্সে ধনী শ্রেণীর কর ফাঁকির বিশাল নথি প্রকাশের পর তিনি এই মন্তব্য করেছেন। স্যান্ডার্স গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। গার্ডিয়ান। অফশোর বিনিয়োগকারীদের বিস্তারিত কাহিনীর বিশাল নথি প্রকাশের পর এ বিষয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকার কাছে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্যান্ডার্স। ধনী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো যে কর এড়িয়ে ব্যবসা করছে এটি বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় আলোচিত ঘটনা। প্যারাডাইস পেপার্স যেসব তথ্য উন্মোচন করেছে সেটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয় বরং সারা বিশ্বের জন্যই একটি বড় সমস্যা। বর্তমানে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো মুষ্টিমেয় বিলিয়নিয়ার পৃথিবী শাসন করছে, বিশ্ব অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অংশ এদের নিয়ন্ত্রণে। প্যারাডাইস পেপার্স দেখিয়ে দিয়েছে ধনী লোকজন ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কিভাবে তথ্য গোপন রেখে সম্পদের পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে হিলারি ক্লিনটনের কাছে হেরে যান স্যান্ডার্স। তিনি বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের লোকজন এবং কংগ্রেসে রিপাবলিকান সদস্যরা ফাঁস হওয়া নথির তালিকায় আছেন। স্যান্ডার্স বলছেন, ‘এ্যাপল এবং নাইকির মতো লাভজনক কোম্পানির চেয়ে বেশি কর ফাঁকি দিয়েছেন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায়ও কর ফাঁকি দেয়া ধনীরা রয়েছেন। তারা সরকারকে কোটি কোটি ডলার কর না দিয়ে এবং দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে বাইরে অজ্ঞাত স্থানে (যাকে অফশোর বলা হচ্ছে) নিয়ে গেছেন। এই সব ফাঁক ফোঁকর আমাদের বন্ধ করতে হবে এবং কর ব্যবস্থা এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে যেন সবার জন্য সেটি সুষম হয়।’ দুর্নীতি করে অর্থ পাচারের বিপুল তথ্য ফাঁসের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন রাজনীতিকদের মধ্যে স্যান্ডার্সই প্রথম মুখ খুললেন। ধনী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৩০ লাখ নথি জার্মান প্রতিষ্ঠান সুইডয়েশ জাইটুংয়ের হস্তগত হওয়ার তারা সেটি প্রায় ১শ’ গণমাধ্যমের সঙ্গে শেয়ার করেছে। এর মধ্যে গণমাধ্যমের মধ্যে গার্ডিয়ানও রয়েছে। প্যারাডাইস পেপার্সে উল্লেখ করা কর ফাঁকি দেয়া উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ট্রাম্পের বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের জামাতাসহ পুতিনের ঘনিষ্ঠ মহলের সঙ্গে রসের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। তিনি নিজের একজন বিলিওনিয়ার। এ খবর নিঃসন্দেহে ট্রাম্পের জন্য বিব্রতকর। কারণ গত বছর আমেরিকায় অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তিনি নিজেই এখন তদন্তের মুখে রয়েছেন। সিনেটের বাণিজ্য কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্য রিচার্ড ব্লুমেন্থাল জনগণের সঙ্গে প্রতারণার জন্য রসকে অভিযুক্ত করেছেন। ব্লুমেন্থাল বলেছেন, রস যদি তার কর্মকা-ের উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে না পারেন তবে তার পদত্যাগ করা উচিত। এদিকে উইসকনসিন থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্য ট্যামি বলডুইন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতেই আমি রসের মনোনয়নের বিরোধিতা করেছিলাম। কারণ আমি জানি সাইপ্রাসে তার মালিকানাধীন ব্যাংক নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। পুতিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চাইনিজ ইনভেস্টিমেন্ট কর্পোরেশনে বিনিয়োগ করা ১শ’ কোটি ডলার তিনি তুলে আনতে অস্বীকার করেছেন।’ রস অবশ্য রুশ কোম্পানিতে বিনিয়োগের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন ব্যবসায়িক কাজে তিনি কোন অন্যায় করেননি।
×