ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ কৃষি জমি বাঁচানোর পথ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ৯ নভেম্বর ২০১৭

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ কৃষি জমি বাঁচানোর পথ

বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ হিসেবে পরিচিত। এমন একটা সময় ছিল চার পাশে সবুজের সমারোহ ছিল। এত বেশি শস্য উৎপাদন হতো যে, বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানির খুব একটা প্রয়োজন হতো না। জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি জমি কমে। সেখানে অবকাঠামো তৈরি হতে থাকে। বিভিন্ন ডেভেলপাররা কৃষি জমি, খাল-বিল দখল করে বড় বড় দালান নির্মাণ করে শিল্প কারখানা করে কৃষি জমির চরম সর্বনাশ করেছে। জনসংখ্যা যেভাবে বেড়েছ সেভাবে কৃষি জমি বাড়েনি। বরং কৃষি জমি প্রতিদিনই কমছে। আর আমরা অনেক ক্ষেত্রেই আমদানি নির্ভর দেশে পরিণত হয়েছি। এর প্রধান কারণ প্রথম থেকে আমরা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারিনি। শিল্প কারখানা দেখে আমাদের মুগ্ধতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের অজান্তেই আমাদের কৃষি জমি হাতছাড়া হচ্ছে। সেখানে বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সেসব জমিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। ইচ্ছা করলেই এই সমস্যা থেকে বের হওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না। এমন কোন পণ্য নেই যা আমাদের আমদানি করতে না হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত কৃষি জমি যদি আমাদের থাকত আমরা আমদানি নির্ভরতা থেকে মুক্ত থাকতাম। হাজার হাজার কোটি টাকা বেচে যেত। ভবিষ্যতে এই সমস্যাটা আরও প্রকট হবে। সারা বাংলাদেশে কৃষি জমিতে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। অসহায় কৃষকরা তাদের জমি হারিয়ে নিঃস্ব মানুষে পরিণত হয়েছেন। যার ফলে গ্রামে আর কেউ থাকতে চান না, সবাই শহরে চলে আসতে চান। যদি কৃষি জমি পর্যাপ্ত থাকত তাহলে শহরমুখী মানুষরা গ্রামেই থাকতেন। কিন্তু জমি দখলকারীরা সেই সুযোগটা কৃষক ভাইদের আর দেননি। যে কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের প্রতিবেশী প্রতিটি দেশেই শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে। কিন্তু নিজেদের কৃষি জমিকে রক্ষা করেই তারা শিল্প কারখানা গড়ে তুলেছেন। কোনভাবেই নিজেদের কৃষি জমিতে অন্য কোন অবকাঠামো গড়তে দেননি। যার ফলে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করতে হয় না। প্রয়োজন ছাড়া যেসব অবকাঠামো কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে সম্ভব হলে অন্য কোন জায়গায় তাদের স্থাপনা গড়ার সুযোগ দেয়া উচিত। এর ফলে নতুন করে কৃষি জমি আমাদের আয়ত্তে আসবে। খাদ্য দ্রব্য আমদানি করা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাব। যারা কৃষি বিশেষজ্ঞ তাদের মতামত প্রয়োজনে নেয়া যেতে পারে। মিরপুর, ঢাকা থেকে
×