ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তোয়াব খান

ত্রিশ লাখ শহীদ নিয়ে যারা এখনও প্রশ্ন তোলে এ বইয়ে বিভ্রান্তির উত্তর পাবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৮ নভেম্বর ২০১৭

ত্রিশ লাখ শহীদ নিয়ে যারা এখনও প্রশ্ন তোলে এ বইয়ে বিভ্রান্তির উত্তর পাবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রণাঙ্গনে যখন মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করছেন, তখন সে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন সাংবাদিকরা। বিশ্বের বড় সব গণমাধ্যমে যেমন উঠে এসেছে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতা তেমনি উঠে এসেছে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা। সে সব সংবাদকে ‘গণমাধ্যম ১৯৭১: বিশ্ব সংবাদপত্রে মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামে বইয়ের এক মলাটে বন্দী করেছেন সেক্টর কমান্ডার ফোরামের মহাসচিব এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হারুন হাবীব। যারা ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বা ত্রিশ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাদের বিভ্রান্তির উত্তর এই বইয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রবীণ সাংবাদিক ও দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শুক্রাবাদে চেন বুক-শপ পূর্ব-পশ্চিমে বইটির প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বইটি প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ। প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে বইটি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান ও একাত্তর টেলিভিশনের পরিচালক (বার্তা) সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। তোয়াব খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই বইটির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন দেশে এবং দেশের বাইরে সাংবাদিকদের ভূমিকা কি ছিল, তা জানা যায়। এটি একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গণ্য হবে। যারা ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বা ত্রিশ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাদের বিভ্রান্তির উত্তর এ বইয়ে খুঁজে পাবেন। কামাল লোহানী বলেন, এই বইয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বলে দেয়, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আসলে কি কি ঘটেছিল। একটি কথা মনে রাখতে হবে, এখনও মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ ইতিহাস প্রকাশ হয়নি। যারা এ বিষয়ে গবেষণা করছেন এবং আগামীতে করবেন, তারা এ বই থেকে অনেক তথ্য পাবেন। ইতিহাস বিকৃতি রোধে এটি ভূমিকা রাখবে। মতিউর রহমান বলেন, চলচ্চিত্র, নাটক, কবিতা, লেখায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এক ধরনের ভালবাসা, ভাললাগা আমাদের সবার মধ্যে রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যত বই প্রকাশ হয়, তা আমাদের আরও উৎসাহিত করে। হারুন হাবীব যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছেন, সেটা অনেক বড়। এ জন্য তিনি বিশেষ কৃতিত্বের দাবিদার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও বেশি কাজ করা উচিত। গোলাম রহমান বলেন, এ বইটি শুধু সেই সময়কে উপস্থাপনই করে না, আমাদের বর্তমান প্রজন্মের সাংবাদিকদের কি করার আছে, তা মনে করিয়ে দেয়। পরবর্তী প্রজন্ম এ বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবে। মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জানতে আগ্রহী। এটা আমাদের আশাবাদী করে। হারুন হাবীব আজকের এবং আগামীর প্রজন্মের জন্য একটি সহায়ক বই লিখেছেন। সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, বইটি পাঠ করলে আমাদের একাত্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। একাত্তরে গণমাধ্যম অন্যতম অস্ত্র ছিল। হারুন হাবীব বলেন, এ বইয়ে আমার নিজের অল্প কথা রয়েছে। বাকি পুরোটা জুড়েই তথ্য ও উপাত্ত দেয়ার চেষ্টা করেছি। ছয় ভাগে বিভক্ত হয়েছে বইটি। সেগুলো হলো মুক্তিযুদ্ধে দেশীয় গণমাধ্যম, মুক্তিযুদ্ধ ও বিশ্বগণমাধ্যম, রণাঙ্গনের সংবাদপত্র, ভারতীয় সংবাদপত্রে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত প্রতিবেদন, বিশ^ সংবাদপত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং কয়েকটি সাড়া জাগানো বিশ^ প্রতিবেদন। ১৭৮ পৃষ্ঠার এ বইটির মূল্য ৩০০ টাকা। লেখক বইটি উৎসর্গ করেছেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিকদের। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মাসুম রহমান।
×