ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পায়রায় ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ

যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন চুক্তি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৭ নভেম্বর ২০১৭

যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন চুক্তি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পায়রায় আরও একটি এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন চুক্তি অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে চুক্তিটি অনুমোদন দেয়া হয়। রাষ্ট্রীয় রুরাল পাওয়ার কোম্পানি এবং নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল চায়না বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণে এখন আরএন পাওয়ার লিমিটেড নামে একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন করবে। এই কোম্পানিটিই পায়রাতে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করবে। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রথম গঠিত বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানিকে অনুসরণ করে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানি দুটি ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি করে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। এরমধ্যে পায়রাতে নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্রের কাজ ২৫ শতাংশ শেষ করেছে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি। রামপালে অন্য কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় দুই প্রতিষ্ঠান সম্বিলিতভাবে এই কেন্দ্রটিও নির্মাণ করবে। রুরাল পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সবুর সোমবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে প্রকল্পে সমীক্ষার কাজ শেষ করেছি। সমীক্ষায় ১৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের জন্য এক দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ দ্রুততার সঙ্গে করতে বিদ্যুত বিভাগ থেকে নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানিকে অনুসরণ করার কথা বলা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোম্পানি গঠনের পর প্রথম বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। কোম্পানিতে ৬ পরিচালকের সমান অংশ থাকবে বাংলাদেশ এবং চীনের। তিনি জানান এরমধ্যেই প্রকল্পের জমি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত ঋণের অর্থ ছাড়ের আগে প্রকল্প ব্যয়ের ১৫ শতাংশ খরচ করার শর্তে পায়রায় বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ দেয় নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল)। এর আগে নরিনকো চায়নার সঙ্গে আরপিসিএলের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। সমঝোতার পরেই বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় উভয়পক্ষ। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের কপি হাতে পেলেই রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করা হবে। বিদ্যুত কেন্দ্রটির ৩০ ভাগ অর্থ চীন এবং বাংলাদেশ সরবরাহ করবে। বাকি অর্থ আসবে বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে। আরপিসিএল বলছে প্রাথমিকভাবে চায়না এক্সিম ব্যাংক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে ঋণ নেয়ার কথা সরকারকে জানানো হয়েছে। চীনের নরিনকোর সহায়তায় বিদ্যুত কেন্দ্রটির অর্থায়ন নিশ্চিত করা হবে। নরিনকোর কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র পরিচালনায় অভিজ্ঞতা থাকায় বিদ্যুত কেন্দ্রটি পরিচালনা কোন সমস্যা হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নতুন এই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরে ধানখালী মৌজায় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে। খুব শীঘ্রই বিদ্যুত কেন্দ্রটির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী বছর থেকেই কেন্দ্রের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে দেশের প্রত্যেকটি সরকারী কোম্পানিকে কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। পটুয়াখালীতে এনডব্লিউপিজিসিএলের সঙ্গে আরপিসিএল এবং আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনকে তিনটি ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ইউনিট নির্মাণ করা হবে। তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রটি ২০২১ সালের মধ্যে উৎপাদনে আসবে। এজন্য ৯১৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
×