ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

আরপি সাহা হত্যায় ৭ ডিসেম্বর মাহবুবের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৭ নভেম্বর ২০১৭

আরপি সাহা হত্যায় ৭ ডিসেম্বর মাহবুবের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহার হত্যাকান্ডের মামলায় আসামি মোঃ মাহবুবের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ফরমাল চার্জ দাখিলের জন্য ৭ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার পলাতক চারজনসহ আটজনেরে বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিলের জন্য ৪ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছে। দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহার হত্যাকা-ের মামলায় আসামি মোঃ মাহবুবের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দখিলের জন্য প্রসিকিউশন পক্ষ দুই মাসের সময় প্রার্থনা করায় ট্রাইব্যুনাল এক মাসের সময় মঞ্জুর করে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মোঃ মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যাসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত সংস্থা ২ নবেম্বর প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দিয়েছে। তদন্তকালে ৬০ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে এবং মোট ১০০ পাতার নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চার ভলিউমে ৩৮০ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক এমএ হান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়। তারা রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ সাতজনকে তুলে নিয়ে হত্যা করে তাদের লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি। মাহবুবুর রহমান এক সময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ছিলেন। তিনি নির্দলীয়ভাবে তিন তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও প্রতিবারই পরাজিত হন। গত বছরের ১৮ এপ্রিল মামলাটির তদন্ত শুরুর পর ট্রাইব্যুনাল থেকে পরোয়ানা জারি হলে গত নবেম্বরে মাহবুবুরকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এখন গাজীপুরের কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসের আশপাশের এলাকা, নারায়ণগঞ্জের খানপুরের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও তার আশপাশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল সার্কিট হাউস এলাকায় অপরাধ সংঘটন করেন। রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। ওই বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে ও অন্যদের ধরে নিয়ে যায় আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা। মুক্তাগাছার ৮ রাজাকার ॥ ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার পলাতক চারজনসহ আটজনেরে বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিলের জন্য ৪ ডিসেম্বর দিন নির্ধারল করা হয়েছে। ওই ৮ আসামির মধ্যে রেজাউল করিম ওরফে আক্কাস মৌলবী, এবিএম ইউনুস আলী মৌলবী, মোঃ ইউনুস আলী, মোঃ ওমর ফারুক কারাগারে রয়েছেন। পালাতক আসামিরা হলেন মোঃ বেলায়েত হোসেন, মোঃ নাসির উদ্দিন, মোঃ ইসমাইল ও কাজী বদরুজ্জামান। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর রেজাউল করিমসহ আট রাজাকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশনপক্ষ। এ মামলার আট আসামির বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, লুটপাট ও অপহরণসহ আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
×