ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্প্যানিশ লা লিগা, ঘাম ঝরানো জয় বার্সিলোনা ও এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের, রেকর্ড জয় ভ্যালেন্সিয়ার

মেসির ৬০০তম ম্যাচে আলো ছড়ালেন আলকাসের

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৬ নভেম্বর ২০১৭

মেসির ৬০০তম ম্যাচে আলো ছড়ালেন আলকাসের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বার্সিলোনার হয়ে রেকর্ডের কমতি নেই লিওনেল মেসির। শনিবার রাতে আরও একটি অনন্য কীর্তিগাথা রচনা করেছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। এদিন স্প্যানিশ লা লিগায় সেভিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নেমে বার্সিলোনার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৬০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন খুদে জাদুকর। মাইলফলকের ম্যাচে অবশ্য গোল পাননি মেসি। ন্যুক্যাম্পে সব আলো কেড়ে নেন পাকো আলকাসের। স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ডের করা জোড়া গোলে ভর করে সেভিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বার্সিলোনা। আরেক ম্যাচে ডিপোর্টিভো লা করুনাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। লেগানেসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বার্সার পেছনেই আছে ভ্যালেন্সিয়া। এর ফলে নিজেদের ক্লাব ইতিজাসে টানা সাত ম্যাচে জয়ের রেকর্ড গড়েছে ভ্যালেন্সিয়া। বর্তমানে ১১ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ৈ শীর্ষে বার্সা। ২৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ভ্যালেন্সিয়া। ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে এ্যাটলেটিকো। কাতালানিয়ার রাজধানীতে বেশ কিছুদিন ধরে স্বাধীনতা প্রশ্নে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর মধ্যে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচ শুরুর আগে বিশাল আকারের পতাকা ও ব্যানার প্রদর্শন করা হয়, যেখানে কাতালান ও ইংরেজী ভাষায় লেখা ছিল, ‘জাস্টিস’। পুরো ৯০ মিনিটই ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ স্টেডিয়াম ন্যুক্যাম্পে উপস্থিত প্রায় ৭১ হাজার দর্শকের কণ্ঠে ছিল স্বাধীনতার জন্য জোরালো আবেদন। ম্যাচ শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে বার্সিলোনা তিনটি গোলের সুযোগ পায়। কিন্তু সার্জিও ববকুয়েটের বল লাইনের ওপর থেকে ক্লিয়ার করেন ক্লেমেন্ট লেনগ্লেট, লুইস সুয়ারেজকে হতাশ করেন ডেভিড সোরিয়া ও ইভান রাকিটিচের দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। মূল একাদশে আলকাসেরের অন্তর্ভুক্তি অনেককেই বিস্মিত করে। এই প্রথম তিনি মূল একাদশে খেলার সুযোগ পান, আর তাতেই করেন বাজিমাত। ২৩ মিনিটে সুয়ারেজের ক্রস থেকে সেভিয়া ডিফেন্ডার সার্জিও এসকুডেরো বল ধরতে ব্যর্থ হলেও আলকাসের সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বার্সিলোনাকে এগিয়ে দেন। বিরতির আগে অবশ্য কোন দলই আর তেমন কোন সুস্পষ্ট সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। বিরতির পরে ভিন্ন রূপে মাঠে নামে সেভিয়া। এভার বানেগার কর্নার থেকে গুইডো পিজারো ৫৯ মিনিটে সমতা ফেরান। যদিও সেভিয়ার এই গোল উৎসব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৬৫ মিনিটে রাকিটিচের ক্রস থেকে পোস্টের খুব কাছে থেকে আলকাসের নিজের দ্বিতীয় গোল করলে বার্সিলোনার জয় নিশ্চিত হয়। মাইফফলকের ম্যাচে গোল না পেলেও যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে এসকুয়ের্দোর ওপর হুড়মুড় করে পড়ে হলুদ কার্ড দেখেন মেসি। ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর পোর্তোর বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে বার্সার হয়ে অভিষেক ঘটে মেসির। প্রায় ১৪ বছরের এ সময়ে বার্সার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৬০০ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা ৫২৩, এ্যাসিস্টসংখ্যা ২৩৪ এবং ৩৯টি হ্যাটট্রিক। সবমিলিয়ে জিতেছেন মোট ৩০টি ট্রফি। অর্থাৎ? একটি শিরোপা জিততে মেসিকে গড়ে খেলতে হয়েছে মাত্র ২০টি করে ম্যাচ। এই ৬০০ ম্যাচের মধ্যে ৪২৫ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছেন আর্জেন্টাইন তারকা। ৬৯ ম্যাচে হারের পাশাপাশি ড্র করেছেন ১০৫ ম্যাচে। বার্সার হয়ে শুধু জাভি হার্নান্দেজ (৭৬৭) ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাই (৬৪২) মেসির চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন। ম্যাচশেষে আলকাসেরের প্রশংসা করে বার্সা কোচ আর্নেস্টো ভালভার্ডে বলেন, সে দুটি গুরুত্বপূর্ণ গোল পেয়েছে। আমরা আশা করছি একজন স্ট্রাইকারের জন্য প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস গোল দুটি তাকে দেবে। আমরা তাকে নিয়ে এবং দলের জন্য খুশি। সে খুব বেশি খেলেনি। সে দেখিয়েছে যে, সে একজন গোল স্কোরার। আমরা খুশি। দ্বিতীয় গোল করার পর আলকাসেরকে উঠিয়ে নেয়া প্রসঙ্গে বার্সা বস বলেন, সে খুব ভাল খেলছিল। কিন্তু তাকে ক্লান্তও দেখাচ্ছিল।
×