ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

আনোয়ারা সৈয়দ হকের জন্মদিনে আনন্দ আয়োজন

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৬ নভেম্বর ২০১৭

আনোয়ারা সৈয়দ হকের জন্মদিনে আনন্দ আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিভৃতচারী এক কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। সাহিত্যের শব্দস্রোতে সমকালকে আশ্রয় করে লেখনীতে যুক্ত করেছেন নানামাত্রিক শিল্প উপকরণ। তাই তো গল্প, কবিতা, উপন্যাস বা শিশু সাহিত্যে সাবলীল তার বিচরণ। তবে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের জীবনসঙ্গী হওয়ার সুবাদে তার সাহিত্যকীর্তি যেন অনেকটাই অনালোচিত। বিশিষ্ট এই কবি ও কথাসাহিত্যিকের ৭৭তম জন্মদিনটি এই প্রথম উদ্যাপিত হলো আনুষ্ঠানিকতায়। শুভাকাক্সক্ষী ও প্রিয়জনদের ফুলের ভালবাসায় সিক্ত হলেন। বিশিষ্টজনদের আলোচনায় উঠে এলো তার সুলিখিত সাহিত্যের কথা। পাঠ করা হলো তার সৃষ্টিসম্ভার থেকে। রবিবার বিকেলে শাহবাগের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে আনোয়ারা সৈয়দ হকের জন্মদিনের এ আনন্দ আয়োজন অনুষ্ঠিত হলো। পদক্ষেপ বাংলাদেশ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিল সাপ্তাহিক সাতদিন ও পদক্ষেপ নিউজ। আনোয়ারা সৈয়দ হককে নিবেদিত কথনে অংশ নেন ছেলে দ্বিতীয় সৈয়দ হক, ভাই হুমায়ুন ইসলাম চৌধুরী স্বপন, কবি রুবী রহমান, কবি দিলারা হাফিজ, সমাজকর্মী এ্যারোমা দত্ত, কথাসাহিত্যিক ও মনোবিজ্ঞানী মোহিত কামাল, শিক্ষা বার্তা সম্পাদক এন এ রাশেদা, কবি মাহবুব আজীজ, কবি ফরিদ কবির, কথাশিল্পী জাকির তালুকদার, ছড়াকার আসলাম সানী, আলোকচিত্রী মুনিরা মোরশেদ মুন্নী প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন পদক্ষেপ বাংলাদেশের সভাপতি বাদল চৌধুরী। এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন উদ্্যাপনের অনুভূতি প্রকাশে কিছুটা রসিকতার আশ্রয় নেন আনোয়ারা সৈয়দ হক। মজা করে বললেন, আয়োজকরা যখন আমার জন্মদিন উদ্যাপনের কথা জানান, তখন যেন আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। তাই আমি সরাসরি মানা করে দিলাম। পরে অবশ্য মনে হলো, তারা উদ্্যাপন করতে চায় করুক, আমার কি আসে যায়! কথার এ পর্যায়ে জন্মদিনকেন্দ্রিক পুরনো স্মৃতির রেশ ধরে বলেন, বছর দশেক আগে একটি টেলিভিশন চ্যানেল থেকে বলা হলো জন্মদিন উদ্্যাপন করা হবে। সেখানে কেক কেটে আমার জন্মদিন পালন করা হলো। তবে সে কেকের কোন ভাগ আমি পেলাম না। মনে করেছিলাম, কেক পাই নাই তো কি হয়েছে, হয় তো আমাকে সম্মানী দেবে। কিন্তু সেটাও জোটেনি কপালে। এ কথার পর একইসঙ্গে আবেগ ও রসিকতার সম্মিলন ঘটিয়ে বলেন, আমার জন্মদিনের আজকের এ আয়োজন দেখে মনে হচ্ছে, সবাই এখন বাঁশের (সৈয়দ শামসুল হক) চলে যাওয়ায় আমার মতো কঞ্চি নিয়ে টানাটানি করছে। তবে রাতারাতি জন্মদিনের এমন আয়োজন আমাকে বিস্মিত করেছে। সবার ভালবাসায় আমি মুগ্ধ। ভেবেছিলাম কেউ বুঝি আমার জন্য কোন ফুল আনবে না। কিন্তু এখন এত ফুল ঘরে কিভাবে নিয়ে যাব, সেটি ভাবছি। অনেক কষ্টে চোখের জল পড়াকে সংবরণ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে নিজেকে সাহিত্যের একটি বৃহৎ পরিবারের অংশ বলে মনে হচ্ছে। মায়ের জন্মদিনে ছেলে দ্বিতীয় সৈয়দ হক বলেন, গত এক বছরের মধ্যে এই প্রথম কোন আনন্দময় আয়োজনে যোগ দিলাম। বিগত একটি বছর ধরে শুধু বাবাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন শোকসভায় অংশ নিয়েছি। এই প্রথম মায়ের জন্মদিন উদ্্যাপন দেখে ভাল লাগছে। মা-বাবাকে সময় দেয়ার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পেতেন। আমি এখনও মায়ের কাছে শক্তি খুঁজে পাই। এক বছরের শোক কাটিয়ে তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন। আশা করব, এখন থেকে মা বেশি বেশি লিখবেন। এ্যারোমা দত্ত বলেন, আনোয়ারা সৈয়দ হক নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। সর্বদা অত্যন্ত জাগ্রত, পূর্ণ একজন মানুষ। দিলারা হাফিজ বলেন, আমরা আসলে আনোয়ারা আপার প্রথম জন্মদিন পালন করছি। তার ৭৭তম জন্মদিন শুনতে ভাল লাগছে না, আসলে আপার বয়স ২৭ বছর। আমরা চাই ২৭-এর তারুণ্যই তার মাঝে থাকুক। মোহিত কামাল বলেন, তার হাত ধরেই আজ আমি মনোবিজ্ঞানী হয়েছে। একই ভাবে কথাসাহিত্যের তাকে অনুসরণ করেছি। কথাসাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি পেলেও, তার কবিসত্তা অনেক বেশি শক্তিশালী। ভাস্কর রাসার যোগাসন প্রশিক্ষণ কর্মসূচী ॥ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে শুরু হলো চার মাসের স্বল্পকালীন যোগাসন প্রশিক্ষণ কর্মসূচী। রবিবার ওরিয়েন্টশন কার্যক্রমে ভাস্কর রাসা এ কর্মসূচীর ঘোষণা করেন। নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে প্রতিমাসে একদিন করে মোট ১৬ ক্লাস করানো হবে। এ জন্য যোগাযোগ করতে হবে বাংলামোটরের বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে। রবীন্দ্র গোপের জন্মদিন উদ্্যাপন ॥ রবিবার বিকেলে উদযাপিত হলো কবি রবীন্দ্র গোপের ৬৭তম জন্মদিন। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং তার সুহৃদদের উদ্যোগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে জন্মোৎসব ও বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। জন্মদিনের এ আনন্দ আয়োজনের উদ্বোধন করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। কবিতার বইয়ের প্রকাশনা, সিডি প্রকাশ ও সুহৃদদের শুভেচ্ছা গ্রহণ পর্বে দিয়ে সাজানো আয়োজনের শুরুতেই কবিকে বরণে পরিবেশিত হয় শিশুশিল্পীদের নৃত্য। কবির জীবনকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় জাদুঘরে মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক বিলু কবীর ও কবি মাহবুব আজীজ। ইতিহাসের মহানায়কেরা নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ ‘বারামখানা’ ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে চলছে ইউনিভার্সেল থিয়েটার আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ইতিহাসভিত্তিক নাট্যোৎসব ‘ইতিহাসের মহানায়কেরা’। শনিবার শুরু হওয়া এ উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল রবিবার। এদিন সন্ধ্যায় নাট্যদল থিয়েটার মঞ্চস্থ করে বাউলসাধক লালন ফকিরকে নিয়ে নির্মিত নাটক ‘বারামখানা’।
×