ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৯ কোটি ডলারের চুক্তি বাস্তবায়নে গুরুত্বারোপ

বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে চীনের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ৬ নভেম্বর ২০১৭

বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে চীনের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ

এম শাহজাহান ॥ বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে চীনের সঙ্গে করা প্রায় ১৯ কোটি ডলারের বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে জোর দেয়া হচ্ছে। এ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ থেকে পাট, পাটের সুতা ও পাটজাতপণ্য; চামড়া, হিমায়িত খাদ্য ও সামুদ্রিক মাছ আমদানি করবে চীন। বর্তমানে চীনের সঙ্গে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৫৬ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এতবড় বাণিজ্য ঘাটতি বিশ্বের আর কোন দেশের সঙ্গে নেই। বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ যাতে আর না বাড়ে সেজন্য অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি উৎপাদনশীল খাতে চীনের বিনিয়োগ চাওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বেসরকারী খাতে একক অথবা যৌথ বিনিয়োগ আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, চীনের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তবে কোন্ কোন্ খাতে বিনিয়োগ হতে পারে সে কৌশল নির্ধারণে চীনের উচ্চপর্যায়ের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এখন বাংলাদেশ সফর করছে। দেশটির জিলিন প্রদেশের উপ-পরিচালক গান গুওহুয়ার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি সম্প্রতি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়। ওই বৈঠকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি দূরীকরণে দেশটির উদ্যোক্তাদের সহায়তা চাওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি মোঃ সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি দূরীকরণে বিভিন্ন সময়ে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। চীন যাতে আন্তরিকভাবেই বাণিজ্য ঘাটতি দূরীকরণে বাংলাদেশের পাশে থাকে সে প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, দেশটির বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এবারের বৈঠকেও দেশের বিভিন্ন খাতে তাদের বিনিয়োগ চাওয়া হয়েছে। এদিকে, ইতিপূর্বে চীনের সঙ্গে প্রায় ১৯ কোটি ডলারের বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই সময় দেশটির ৭টি সরকারী সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের ১৩টি প্রতিষ্ঠানের এ চুক্তি সই করা হয়েছিল। চুক্তিটি বাস্তবায়নে এবার সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। দেশে আমদানি করা পণ্যের বেশিরভাগই আসে চীন থেকে। দেশটি থেকে আমদানি করা পণ্যের তালিকায় রয়েছে- সব ধরনের সুতা, তুলা ও সুতি কাপড়, পারমাণবিক চুল্লি, বয়লার, শিল্প ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণ, লোহা ও ইস্পাত, ফিলামেন্ট, কাপড় তৈরির উপকরণ, প্লাস্টিকের উপকরণ, সার, অর্গানিক ও ইন-অর্গানিক কেমিক্যাল, রেল ও ট্রাম ছাড়া অন্যান্য পরিবহন ও এর যন্ত্রাংশ, কাগজ ও কাগজের বোর্ড, ফটোগ্রাফি ও মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি, রাবার, কফি, চা ও মসলাসহ ২৬ থেকে ৩০ ধরনের পণ্য। জানা গেছে, বাংলাদেশে চীনের রফতানি ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি হলেও আমদানি করছে মাত্র ৭৯০ মিলিয়ন ডলারের পণ্যসামগ্রী। ফলে ঘাটতি বাড়ছেই। তবে ৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে চীন। এছাড়া নতুন ১৭টি পণ্য চীনা বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান, বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সহজশর্তে ঋণসুবিধাসহ বড় বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও দেশটি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য চীনা ভিসা সহজ করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে চীন। শীঘ্রই এসব প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে।
×