ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্রে চুল্লি বসানোর কাজ উদ্বোধন ৩০ নবেম্বর

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৫ নভেম্বর ২০১৭

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্রে চুল্লি বসানোর কাজ উদ্বোধন ৩০ নবেম্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রূপপুর পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্রের মূল পর্বের নির্মাণ কাজ শুরুর অনুমতি দেয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে লাইসেন্সটি হস্তান্তর করা হয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের নক্সা ও নির্মাণকাজের লাইসেন্স প্রদান করেছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিএইআরএ)। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে নক্সা ও নির্মাণ লাইসেন্স প্রদান করে। আগামী ৩০ নবেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুতকেন্দ্রটির মূল পর্বের অর্থাৎ পরমাণু চুল্লি বসানোর কাজের (ফাস্ট কংক্রিট পোরিংডেট বা এফসিডি) উদ্বোধন করবেন। বাংলাদেশ ৩২তম নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হতে যাচ্ছে। এখনও আন্তর্জাতিক শক্তি কমিশন বাংলাদেশকে নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। এটির জন্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা এখনও বাকি রয়েছে। শনিবার বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (বিএইসি) চেয়ারম্যান ড. দিলীপ কুমার সাহার কাছে এ নক্সা ও নির্মাণ লাইসেন্স হস্তান্তর করেন বিএইআরএর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নঈম চৌধুরী। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি কমিশনের সম্মতি পাওয়ার পর এ লাইসেন্স দেয়া হয়। এর আগে গত বছরের জুনে কেন্দ্রটির নির্মাণস্থল উপযোগী ও নিরাপদ বলে সাইট লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, আমরা পরমাণু যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পর রূপপুর কেন্দ্র নির্মাণের মতো কাজ আর হয়নি। এ কেন্দ্র নির্মাণ বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত করেছে। পরে তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আগামী ৩০ নবেম্বর কেন্দ্র নির্মাণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ কেন্দ্র নির্মাণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকার কথা ছিল, তিনি আসবেন কিনা জানতে চাইলে স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, রাশিয়ার নির্বাচনী সময় সামনে। এ কারণে এ কেন্দ্র উদ্বোধনে তাদের প্রধানমন্ত্রী আসতে পারছেন না। তবে সেখানে রাশিয়ার প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান অনুষ্ঠানে বলেন, পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্র নিয়ে দুনিয়াজুড়ে উদ্বেগ রয়েছে সত্য। সে কারণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কেন্দ্র নির্মাণে নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করার ওপর জোর দিতে বলেছেন, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্রটি নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা রেখেই নির্মাণ করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব আনোয়ার হোসেন ও পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্রের পরিচালক ড. শৌকত আকবর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বায়রার চেয়ারম্যান ড. নঈম চৌধুরী। দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক প্রকল্প পাবনার রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার ঋণ নিচ্ছে ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। তবে এ জন্য সুদে-আসলে রাশিয়াকে ফেরত দিতে হবে ২০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় রাশিয়ার কাছ থেকে নেয়া ৯১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার শুধু সুদ বাবদই সরকারকে ফেরত দিতে হবে ৬৯ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুতকেন্দ্র। ১২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটের এ কেন্দ্র থেকে প্রথম ইউনিটের বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। আর দ্বিতীয় ইউনিট আসবে পরের বছর।
×