ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

রাজশাহীতে হাইব্রিড বীজ কিনে বিপাকে টমেটো চাষী

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৫ নভেম্বর ২০১৭

রাজশাহীতে হাইব্রিড বীজ কিনে বিপাকে টমেটো চাষী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ইউএস নসিব নামের একটি জাতের বীজ রোপণের পর এবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন গোদাগাড়ী উপজেলার টম্যাটো চাষী। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই উপজেলায় টম্যাটো চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হলেও এবার নিম্নমানের বীজ নিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খাওয়ার উপক্রম হয়েছেন তারা। এ অবস্থায় টম্যাটোর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। কৃষকরা বলছেন, ভাগ্য ফেরানোর আশায় নসিবের বীজ ব্যবহার করে এখন বিড়ম্বনায় পড়েছেন। জানা গেছে, উপজেলায় এবার প্রায় ১৫ জাতের হাইব্রীড টম্যাটো চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ইউএস নসিব নামের একটি জাত। আর এই বীজেই চাষী প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা বলছেন, আগের কয়েক বছরে নসিবে তারা যে ধরনের টম্যাটো পেয়েছেন, এবার তা পাচ্ছেন না। তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তোফিকুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত কোন কৃষক এ ব্যাপারে তার কাছে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তিনি এ বিষয়ে খোঁজখবর নেবেন। কৃষক আবদুর রহিম, মোহাম্মদ আলী ও সেলিম রেজাসহ অনেকে জানান, বাজারে এ ধরনের টম্যাটোর চাহিদাই থাকবে না। তাই তারা এখন এসব টম্যাটোর গাছ উপড়ে ফেলে সরিষা চাষের চিন্তা করছেন। এর আগে গাছে এমন আকারের টম্যাটো দেখে প্রায় সব কৃষক পরিচর্যা বন্ধ করে দিয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাছে কেবল টম্যাটো ধরতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত একদফাও টম্যাটো বিক্রি করা যায়নি। এরই মধ্যে বিঘাপ্রতি খরচ হয়ে গেছে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা। নসিব জাতের ওই টম্যাটো বীজই প্রতি ১০ গ্রাম তারা কিনেছেন ৮০০ টাকায়। উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের কৃষক আলফাজ হোসেন বলেন, আগের বছরগুলোতে ফলন ভাল দেখে তিনি এবারও নসিব জাতের টম্যাটো চাষ করেছিলেন। কিন্তু এবার তিনি বীজে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার মতো সব কৃষকই এই বীজে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এবার নসিবের নামে নকল বীজ সরবরাহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এই কৃষকের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউএস নসিব নামের হাইব্রীড জাতের এই বীজটি বিদেশ থেকে আমদানি করে কাশেম সীড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কয়েক বছর থেকে কাশেম সীডের কাছ থেকে এই বীজ নিয়ে ডিলারদের মাঝে সরবরাহ করে আসছেন উপজেলা সদরের বন্ধু বীজ ভা-ার নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আগের বছরগুলোতে সরবরাহ করা বীজের প্যাকেটের গায়ে আমদানিকারক হিসেবে কাশেম সীডের নাম লেখা থাকলেও এবার প্যাকেটে কাশেম সীডের নাম লেখা নেই। প্যাকেটের গায়ে এবার লেখা আছে ‘বন্ধু বীজ’। গোদাগাড়ীর বন্ধু বীজ ভা-ারের মালিকের নাম মাহবুব আলম। জানা গেছে, এই ব্যবসায়ী গোদাগাড়ীর বিভিন্ন এলাকার ১৫ ডিলারকে দিয়ে নসিব নামের এই বীজ বিক্রি করিয়েছেন। নাইমুল হক বলেন, কৃষকদের প্রতারিত করে মাহবুব আলম কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন তারা মাহবুব আলমের কোন খোঁজ পাচ্ছেন না। মাহবুব তার দোকানও খোলেন না। মোবাইলও ধরেন না। তিনি এখন লাপাত্তা।
×