নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৩ নবেম্বর ॥ জেলায় আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। এর ফলে অনেক কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হওয়ায় লাভবান হবেন জেলার অধিকাংশ কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, হরিপুর, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গি ও সদর উপজেলাসহ পাঁচটি উপজেলায় আগাম জাতের আবাদকৃত এসিআই-১-২, হাইব্রিড ও ব্রি ধানÑ৪৯ ও ৫২ জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব আগাম জাতের ধান উৎপাদনে সময় লাগে ৯০-১০০ দিন। চলতি মৌসুমে জেলায় ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৩৬ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে। আর এ থেকে ধান উৎপাদন হবে তিন লাখ ৩৬ হাজার ৮৯ হাজার মেট্রিক টন ধান। এর মধ্যে আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। আর বন্যায় সাত হাজার ৪৭৯ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা ইতোমধ্যে পুনরায় রোপণ করা হয়েছে। তবে এসব ধান উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি হবে।
সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ফারাবাড়ী গ্রামের মংলু, মহন্ত কুমার, রেজাউল করিমসহ কয়েকজন কৃষক জানান, এবার বন্যায় রোপণকৃত ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা পুনরায় রোপণ করতে হয়েছে। এতে কৃষকরা বেশ ক্ষতির শিকার হয়েছেন। আর দেরিতে ধান রোপণ করায় তেমন একটা ফলন আসবে না। আর যারা অন্যের জমি নিয়ে বর্গা হিসেবে ধান আবাদ করেছেন তারা আরও বেশি লোকসানে পড়বেন। এক বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করতে খরচ হয় ৭-৮ হাজার টাকা। আগাম জাতের উৎপাদনের সময় লাগে ৯০-১০০ দিন। এ থেকে ধান উৎপাদন হয় ১৪-১৬ মণ পর্যন্ত। আর অন্য জাতের ধান উৎপাদনে সময় লাগে ১২০ দিন পর্যন্ত। ধান উৎপাদন হয় ২০-২৫ মণ পর্যন্ত। তবে এবার ধানের দাম পাবেন কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি দুই মণের বস্তার নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ১৪-১৫শ’ টাকায়। দাম পেলেও এবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুষিয়ে ওঠা কঠিন হবে। তা না হলে কৃষকরা বেশ লাভবান হতেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কেএম মাউদুদুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে জেলায় আবাদকৃত নতুন জাতের আগাম ধান কাটা শুরু হয়েছে। আমারা আশা করছি ১৫ নবেম্বরের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হবে। আশা করছি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
