ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কেরানীগঞ্জে আটিবাজার খাল দখল ॥ জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৪ নভেম্বর ২০১৭

কেরানীগঞ্জে আটিবাজার খাল দখল ॥ জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ৩ নবেম্বর ॥ বুড়িগঙ্গা নদীর বৃহৎ আটিবাজার সংযোগ খালটির উভয় তীর প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে চলে গেছে। খোলামোড়া বাজার সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উৎপত্তি খালটি আটিবাজারের পর ভরাট করায় কলাতিয়া পর্যন্ত খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে অবৈধ আরও ডজন খানেক খালের দখল মুক্ত করার অভিযান ভেস্তে যেতে বসেছে। আটি খালের ভাঙ্গাবাড়ি এলাকার দক্ষিণ পাড়ে কয়েকটি হাউজিং কোম্পানি খালের তীর দখল করে প্লট আকারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তারা নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহাবুদ্দিন জানান, অধিকাংশ জামায়াত নেতা ভুয়া দলিল দস্তাবেজ তৈরি করে নিরীহ লোকদের কাছে এসব প্লট বিক্রি করে তাদের পথের ফকির বানিয়েছে। ভূমিদস্যুরা হলো জামায়াত নেতা শাহজাহন মাস্টার, সালাহউদ্দিন, রাজু, নূর হোসেন, আঃ রশিদ, বাবুল ও ফিরোজ। তিনি আরও বলেন, আটি খালের ভাঙ্গাবাড়ি সংলগ্ন খালের তীর বিক্রি করে শাহজাহান মাস্টার কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছে। এর সঙ্গে সালাহউদ্দিন, রাজু, ফিরোজ, বাবুল, রশিদ গংরা প্লট আকারে জমি বিক্রি করছে। এ বিষয়ে কলাতিয়া এলাকার বিসিকের সাবেক কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান, বিএনপি আমলে খোলামোড়া থেকে কলাতিয়া পর্যন্ত খালে ৩টি সুইচগেট নির্মাণ করা হয়েছে যা এখন অত্র এলাকার লোকজনের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ওই সুইচগেট ৩টি কলাতয়িা, আটি ভাওয়াল ও নিমতলী এলাকায় করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা খরচ করে। এই সুইচগেটগুলো দিয়ে বর্তমানে ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা দিয়ে কোন পানি প্রবাহিত হতে পারছে না। ভূমিদস্যুরা ওই খালগুলো ভরাটের ফলে নৌ যান ও জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই এলাকার কৃষকরা তারা সেচের অভাবে জমিতে ফসল ফলাতে পারছে না। এ সব জমি অবৈধভাবে দখল করায় এলাকা মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ বালুচরের হানিফ জানান, ছোটবেলা থেকে এই খালে গোসল করেছি। মাছ ধরেছি। খালের পানি খেয়েছি। বর্তমানে খাল ছোট হয়ে গেছে। পানি পান করা তো দূরে থাক কুলি করা বা অজু করাও যায় না। আনোয়ার হোসেন জানান, প্রভাবশালীরা খালের তীর দখল করায় খাল ছোট হয়ে গেছে। পানিতে দুর্গন্ধ। কোন মাছ নেই। এছাড়া বৃষ্টির দিনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। অপরদিকে আটি বাজার থেকে মধুসিটিসহ একাধিক হাউজিং কোম্পানি খাল ভরাট করে প্রকাশ্যে প্লট আকারে বিক্রি করছে। এতে ওই এলাকার ১৪/১৫টি খালের পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। গত বর্ষা মৌসুকে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) পারভেজুর রহমান বলেন, ইতোপূর্বে আমরা কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। আটি বাজার খাল এলাকায় আমরা অতি শীঘ্রই সরেজমিন পরিদর্শন করে আইন ব্যবস্থা নেব।
×