ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আয়েশার আশার আলো

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৩ নভেম্বর ২০১৭

আয়েশার আশার আলো

আয়েশা আহমেদ। মেধাবী একটি নাম। জ্বলজ্বলে তারকার মতো আলোকিত একটি নাম। যে নামের ঔজ্জ্বল্যে আলোকিত হয়েছে আমাদের প্রিয় দেশ। মহিমান্বিত করেছে প্রবাসের একখ- বাংলাদেশকে। গৌরবান্বিত করেছে তার মা-বাবাকে। সতেরো বছরের আবুধাবি প্রবাসী এই তরুণী আমেরিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ‘ইৎবধশঃযৎড়ঁময ঔঁহরড়ৎ ঈযধষষবহমব ২০১৭’ বিজ্ঞানসংক্রান্ত ভিডিও প্রতিযোগিতার প্রি-ফাইনাল রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছে। সমগ্র পৃথিবীর ১১ হাজারেরও অধিক অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে মাত্র ঊনত্রিশ জন যোগ্য প্রার্থী এই পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আয়েশা মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চল থেকে দুজন বিজয়ীর একজন। বর্তমানে সে এই প্রতিযোগিতায় অনলাইন জনপ্রিয় ভোটের আওতায় আছে। যেটা ২ নভেম্বর শেষ হবে। মনেপ্রাণে বাংলাদেশের এই বরেণ্য সন্তান আয়েশার পছন্দের বিষয় গণিত, মহাকাশ ও পদার্থবিদ্যা। বিজ্ঞানের প্রতি তার অগাধ আগ্রহ। ও এই বিষয়ে খুব ছোটবেলা থেকে লিখালিখি করে আসছে। ইংরেজী তার প্রথম ভাষা হলেও বাংলা সাহিত্যের প্রতি যথেষ্ট অনুরাগ রয়েছে। বিজ্ঞান অন্তপ্রাণ আয়েশা সাহিত্যের কম নয়! ইংরেজী কবিতা লিখে আর আবৃত্তি করে এখানকার অনেক প্রতিযোগিতায় সে বিজয়ী হয়েছে। আয়েশা প্রখ্যাত ‘টেডটক’এর সঙ্গে জড়িত। ওর ‘টেডটক’ বক্তৃতা এখানে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে। আয়েশা মা-বাবার একমাত্র সন্তান। বাবা মুনীর আহমেদ সাহাবুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সপরিবারে বসবাস করছেন। তিনি একজন উচ্চপদস্থ ব্যাংক কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষক। আয়েশার মা একজন গৃহবধূ। অনলাইনে আপনাদের ভোট আয়েশাকে জনপ্রিয়তার যাচাইয়ে শীর্ষে পৌঁছে দিতে পারে। আপনারা ফেসবুকে ওর ভিডিওর লিংকে গিয়ে লাইক করুন। এটাই ভোট হিসেবে গণ্য হবে। ওর ভিডিওটি আপনাদের টাইমলাইনে ইচ্ছে করলে শেয়ার করতে পারেন। আয়েশা আমাদের বাংলাদেশের প্রতিনিধি। বিশ্বখ্যাত এই প্রতিযোগিতায় সে আমাদের লাল-সবুজের মানচিত্র। ওর বিজয় আমাদের বিজয়। আয়েশার জন্মলগ্ন থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকে। ছোটবেলা থেকে ও খুব মেধাবী ছাত্রী। এই বছর ২০১৭ সালে সে একাধারে এ লেভেল (ব্রিটিশ কারিকুলাম) এবং এপি (আমেরিকান কারুকুলাম) অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে। আয়েশা কম্পিউটার সাইন্স বিষয়ে পড়াশোনা করায় আগ্রহী। তার ইচ্ছা বিজ্ঞান ও মানবতার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে। ‘আয়েশা ঐঞগখ, ঈ, ঔঅঠঅ, এবং চুঃযড়হ ইতাদি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়াজে সম্যক ধারণা আছে। ও ইংরেজী ভাষায় কবিতা লিখে। এখানে চারবার বিজয়ী হয়েছে। আয়েশা গ্রেড ১২এ ওর স্কুলে ‘হেড অফ রোবোটিক্স ক্লাব’ ছিল। ও গ্রেড ১১এ আবুধাবী আন্তঃস্কুল বিজ্ঞান মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। ও ওর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে চায়। বই পড়া এবং শিক্ষাভিত্তিক ভিডিও দেখা আয়েশার শখ। এগুলো ওর বাবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছে। আয়েশার কখনও কোন গৃহ শিক্ষক ছিল না। সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত ওর বাবার কাছে শিখত, তারপর ও নিজে নিজেই পড়ত। এমনকি ওর সহপাঠীরাও ওর কাছে পড়ত। আয়েশা ওর এই সাফল্যে খুব খুশি। কিন্তু ওর এই যাত্রা শুরুর জীবনে ও চায় এই সাফল্যের ধারাবহিকতা রাখতে। এই অর্জনের জন্য সবার দোয়া প্রযোজন বলে ওর বিশ্বাস। দেশের দারিদ্র্যতা ওকে খুব পীড়া দেয়। ওর ইচ্ছা একদিন এই দেশের জন্য ও কিছু করবে। আয়েশার আলোর আলো বাস্তবায়ন হোক। সবার মাঝে তার আলো ছড়িয়ে পড়–ক।
×