ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৩ নভেম্বর ২০১৭

উবাচ

ওটা আমার না স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘হ্যালো মোবারক ওইটা কি হইছে...। অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘একদম সব ঠিকঠাক করে দিছি... আপনে কোন টেনশন করিয়েন না, পোলাপান সব রেডি করে দিছি, বুঝাই-টুঝাই দিছি।’ ‘দেখিস আবার ম্যাডামের গাড়ি...’ জবাবে বলেন, ‘আরে না... না না বস... কোন সমেস্যা হইত ন... আপনি কোনো টেনশন করিয়েন না, সব বুঝাই দিছি পোলাপানরে।’ ‘দেখিস আবার ম্যাডামের গাড়িতে আবার ঢিলটিল পড়ে না যেন।’ জবাবে, ‘না না ম্যাডামের গাড়িতে কোন ঢিলমিল পড়ত ন... সাংবাদিকগরে মারতে অইব.. সুন্দর করে বুজাই-টুজাই দিছি।’ ‘খেয়াল রাখিস.. দু-একটা চ্যানেলের গাড়ি ভাঙ্গিস।’ জবাবে, ‘হ্যাঁ, চ্যানেলের গাড়ির মধ্যে মারব, কোন টেনশন করিয়েন না। আমরার দলের গড়ির, কোন গাড়ির ঢিলমিল মারত ন... বুজাই কই দিছি সবটিরে।’ ‘ছাত্রলীগের কিছু পোলাপান ভাড়া করে আনিছ।’ জবাবে, ‘হ্যাঁ, এটি আছে লোকাল, তিনটারে কইয়ে দিছি... ট্যাহা পয়সা দিয়ে দিছি জায়গামতো জায়া থাকবি, কোন টেনশন করিয়েন না।’ যারা তথ্যপ্রযুক্তি কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন তাদের কারও এ সংলাপগুলো না শোনার কথা নয়। কক্সবাজার যাওয়ার পথে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার পরই পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে কথোপকথন ফাঁস হয়, যা ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কথোপকথনেই রয়েছে এসব আলোচনা। ইন্টারনেটে আসা অডিও টেপে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার নির্দেশ দিতে যার কণ্ঠ শোনা গেছে, তা নিজের নয় বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন। নিজেকে রক্ষা করতে অনেকটা তড়িঘড়ি করেই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাত বলেন, ফেনীর ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের শাহাদাত হোসেন শাকার নাম তার বলে চালানো হচ্ছে। গণমাধ্যমে এসেছে, ওই হামলার মূল দায়িত্বে ছিলেন ফেনীর শর্শদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়া এবং ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শাকা। ওই শাহাদাতকে আমি শাহাদাত বলে চালিয়ে দিল! নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে তিনি বলেন, গত রাত ২টার দিকে একটি অনলাইনে একটি খবরসহ অডিও ছাড়া হয়। সেখানে লিখে দিয়েছে আমার নির্দেশে নাকি হয়েছে। ওই আলাপের শব্দ, কণ্ঠ, একসেন্ট কোনটায়ই মিল নেই। যেখানে ঘটনা সেখানকার (নোয়াখালীর) আঞ্চলিকতা রয়েছে কথায়। আমার ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কাউকে গালি দিয়েও কথা বলিনি। সাংগঠনিক ও সুস্থধারার রাজনীতি করেছি। একজন চিকিৎসক হিসেবে সব সময় মানুষের জীবন রক্ষায় এগিয়ে গেছি। এদিকে ফেনীর ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত বলেন, ওই কণ্ঠ তারও নয়। ওটা আমার কণ্ঠ নয়। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। হামলাকারীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জয়নুল আবদিন ফারুকের ‘লোকজন’ বলে দাবি করেন এ আওয়ামী লীগ নেতা। হামলাকারীদের ছবি ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসার তথ্য তুলে ধরে চট্টগ্রাম বিএনপির নেতা শাহাদাত বলেন, কারা জড়িত, সেটা স্পষ্ট। আজাদের চ্যালেঞ্জ! স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনীতি মানেই সাহসের কাজ। এটি পুরনো কথা। দল ছোট হোক কিংবা বড় হোক সেটি বড় বিষয় নয়। সাহস নিয়ে রাজনীতিতে এগিয়ে যেতে হবে। যেমন সাহস দেখিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) প্রেসিডেন্ট এসএম আবুল কালাম আজাদ। নিজ দলের একাই এমপি তিনি। তাও আবার গুলশানের মতো এলাকার। কর্মী-সমর্থক তেমন একটা নেই বললেই চলে। রাজনীতির মাঠে দল নিয়ে আলোচনাও নেই। তাতে কি? আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে বড় বড় নেতাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তিনি। হ্যাঁ। এটি সত্য। গত বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নিজ দলের পক্ষ থেকে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, শুনেছি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আরও খবর আছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও নাকি একই আসন থেকে নির্বাচন করবেন। আমি তাদের সবাইকে স্বাগত জানাই। তারা এলে নির্বাচন জমবে। তিন দলের প্রধান এক আসনে। দেশবাসীর চোখ থাকবে এ আসনের প্রতি। আশা করি আমিই ভাল করব। আপনারা আসুন। অংশ নিন। আমি ভয় পাই না। সাহস নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, আমি যে এলাকার এমপি এ এলাকার মানুষ কোনদিন এমপি দেখেননি। ঢাকার মধ্যে এক অবহেলিত অঞ্চল। এসব অঞ্চলে উন্নয়ন হয়েছে আমার সময়ে। রাস্তাঘাট, সরকারী অফিস, ব্রিজসহ নানামুখী উন্নয়নকাজ এখনও চলমান। তাই স্থানীয় মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। ভোটাররা এখন তাদের সংসদ সদস্যকে দেখতে পারেন। এমপির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। ছবি তোলেন, যা আগে কখনই হয়নি। তাই আমার বিশ্বাস আছে। মানুষ আমাকেই ভোট দেবে। তিনি বলেন, আমি রাজনীতিতে আছি। থাকব। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। সবচেয়ে বড় চমক হলো আমি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। তবে সবগুলো আসনের নাম এখন প্রকাশ করব না। সময় হলেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। বিএনএফের জোট গঠন প্রসঙ্গে আবুল কালাম আজাদ বলেন, এরশাদ ছাড়া ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে জোট গঠনে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু এরশাদের সঙ্গে কেন জোট গঠন করতে এত অনীহা কেন? এর সুস্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা দেননি তিনি। তবে জামায়াত থাকায় ২০ দলের সঙ্গে জোট গঠনে আপত্তি রয়েছে এ নেতার। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি কিংবা জামায়াতের সঙ্গে সংলাপ করতে আপত্তি নেই তার। হাইব্রিড মিথ্যাবাদী! স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনীতিতে নতুন কথা বা শব্দ খুব একটা পাওয়া যায় না। যারা প্রতিদিন কথা বলেন, তাদের পক্ষে নতুন শব্দ আবিষ্কার সত্যিই কঠিন। কোথা থেকে আসবে নতুন নতুন শব্দ। একজন মানুষের শব্দভা-ারে নতুন শব্দইবা কত থাকে। তবে সম্প্রতি মাঝেমধ্যে নতুন কিছু শব্দ ব্যবহারের চেষ্টা করছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। বলা হয় হাইব্রিড সবজি। হাইব্রিড ধান। তাই দেশজুড়ে হাইব্রিড শব্দ বেশ পরিচিত। এখন তিনি রাজনীতির সঙ্গেও এ শব্দটি মেলাতে শুরু করেছেন। তবুও নতুন!... তবে যে ইস্যুতে তিনি কথা বলেছেন তা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হোক বা না হোক ‘শব্দ চয়ন’ নিয়ে আলোচনা বেশ। ফেনীতে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলায় যুব ও ছাত্রদল জড়িত- এমন বক্তব্য দেয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে হাইব্রিড বা উচ্চফলনশীল মিথ্যাবাদী বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে কারা হামলা করেছে তা জাতির কাছে আজ পরিষ্কার। আর আপনি (ওবায়দুল কাদের) শপথ ভঙ্গ করে প্রধানমন্ত্রীর কথায় মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন।’ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলাকারীদরে বিচার দাবিতে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে বিএনপিপন্থী ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন। গত শনিবার কক্সবাজার সফরে যাওয়া খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয় ফেনীতে। হামলাকারীরা গণমাধ্যমকর্মীদের একাধিক গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনার জন্য বিএনপি দায়ী করেছে আওয়ামী লীগকে। তবে ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, ‘বড় নিউজ’ তৈরির জন্য পরিকল্পনা করে এ কাজ করছে বিএনপিরই সহযোগী সংগঠন যুব ও ছাত্রদলের কর্মীরা। এ হামলা নিয়ে দুই দলের নেতাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের মধ্যে সোমবার দুজনের মধ্যে মোবাইলে ফোনের আলাপন প্রকাশ হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে একজন হামলার নির্দেশ দিয়ে অপরজনকে বলছেন, খালেদা জিয়ার গাড়িতে যেন কোন ঢিল না পড়ে। কেবল যেন গণমাধ্যমকর্মীদের গাড়িতে হামলা করা হয়। আর এ ঘটনায় যেন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভাড়া নেয়া হয়। তারা যেন সামনে থাকে। রিজভী বলছেন, এ হামলা আওয়ামী লীগই করেছে আর ওবায়দুল কাদের এ নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। বিএনপি নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনেক কথা বলেন। আগে তিনি রাজনীতিবিদ ছিলেন কিন্তু এখন ওবায়দুল কাদের কবি হয়ে গেছেন। তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে যা বলেন, তা শুনে মানুষ এখন তামাশা করে।’ কাদেরকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘খালেদার গাড়িবহরে লাঠিসোটা, অস্ত্র নিয়ে আপনাদের গুণ্ডাবাহিনী হামলা করে অর্ধশত গাড়ি ভাংচুর করেছে। সাংবাদিকরা আহত হয়েছে, তারপরও আপনারা বলছেন সাজানো নাটক। মন্ত্রিত্বের জন্য, ক্ষমতার জন্য, মাত্র কয়েকটা টাকার জন্য এমন মিথ্যাচার করছেন। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলায় বহু সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তারা কি মিথ্যা কথা বলছেন? তারা কি বিএনপি করেন? সারাদেশের জনগণ জেনে গেছে কারা ওই হামলা করেছে।’
×