ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘কৃষি সম্প্রসারণ বাতায়ন’ উদ্বোধন করলেন কৃষিমন্ত্রী

এবার দেশের কৃষি খাত আসছে ডিজিটাল সেবার আওতায়

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২ নভেম্বর ২০১৭

এবার দেশের কৃষি খাত আসছে ডিজিটাল সেবার আওতায়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ এবার দেশের কৃষি খাত ডিজিটাল সেবার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্যোগে বুধবার চালু হয়েছে ‘কৃষি সম্প্রসারণ বাতায়ন’। এ বাতায়নে কৃষি কাজের সব ধরনের তথ্য সেবা পাওয়া যাবে। বুধবার সচিবালয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ১৪ উপজেলায় এক মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ‘কৃষি সম্প্রসারণ বাতায়ন’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এ সময় বাজারে অসহনীয় সবজির দাম নিয়ে নাভিশ্বাস ওঠা মানুষকে শীতের সবজি আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘আর কটা দিন সবুর কর রসুন বুনেছি।’ কিছুদিন ধরে বাজারে সবজির দাম উর্ধমুখী, ৫০ টাকা কেজির নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা কৃষকদের প্রণোদনা দিয়েছি, পুনর্বাসনের জন্য কৃষকদের বীজ দিয়েছি। এভাবে কোন দিন কৃষকদের সহায়তা দেয়া হয়নি। প্রত্যেকটি জায়গায় স্বচ্ছতাও আছে। বেগুন, সরিষা, মাশকলাইয়ের বীজ কোন দিন বিতরণ হয়নি। সবজি বীজের সঙ্গে অর্থকরি ফসলের বীজ আমরা যতটা পেরেছি দিয়েছি।’ মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘গত সপ্তাহে বৃষ্টিতে সবজির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু অদম্য কৃষক আবার চাষ শুরু করেছে। আশা করি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে... তখন হয়তো বা হেডিংয়ে আসবে কৃষক দাম পাচ্ছে না। এই দুটো হেডিংয়ের জন্যই আমি প্রস্তুত থাকি- কৃষক দাম পাচ্ছে না বা বাজারে আগুন। বাংলাদেশে বসবাস করলে এই দুটো হেডিং আমাদের জন্য নির্ধারিত থাকে।’ সবজি নিয়ে পত্রিকার শিরোনামের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মাস্টার হেডে বসাবেন এটা আপনাদের উপর ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। আমি এককভাবে বলছি না, আপনারাও বসাতে পারেন। আর প্রকৃতি যদি বিরূপ হয় তবে আপনাদের জন্য সুবিধা হয়, এই আর কি। তবে আন্তর্জাতিক হিসেবে আমরা সবজি উৎপাদনে তৃতীয়। আল্লাহর রহমত আমাদের সুবিধা হলোÑ আমরা সারাবছর সবজি উৎপাদন করতে পারি। অনেক দেশে কিন্তু ছয় মাসের কৃষি। আর কটা দিন সবুর কর রসুন বুনেছি। প্লিজ একটু সময় দিন’ -বলেই হেসে ফেলেন মতিয়া চৌধুরী। এ সময় কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ বলেন, ‘আপনারা হয়ত জানেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে সবজি ও ফলের উৎপাদন তিনগুণ বেড়েছে। এত বন্যা, এত সমস্যা হয়েছে তারপরও। বৃষ্টিতে হয়ত বীজতলা নষ্ট হয়েছে কিন্তু আবার নতুন করে লাগানো হয়েছে। হয়ত ৭-৮-১০ দিন পিছিয়ে গেছে। কিন্তু উৎপাদন আমাদের গত বছরের চেয়ে বেশি হবে।’ যে ১৪ উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ বাতায়ন সুবিধা রয়েছে সেগুলো হলো- মনিকগঞ্জের দৌলতপুর, শেরপুরের নকলা, চাঁদপুরের সদর, সিলেটের বালাগঞ্জ, কক্সবাজারের পেকুয়া, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, রাজশাহীর দুর্গাপুর, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ, রংপুরের পীরগঞ্জ, পঞ্চগড়ের বোদা, কুষ্টিয়ার মিরপুর, খুলনার রূপসা, পিরোজপুরের নাজিরপুর এবং রাজবাড়ির পাংশা। এর মাধ্যমে কৃষি সেবা প্রণয়ন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের পেশাগত যোগাযোগ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ ঘটবে বলে করছে সরকার। এ প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাতায়নের মাধ্যমে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষকরা শীঘ্রই সেবাটি পাবেন। এখন টেলিভিশনে আপনারা কৃষি সংবাদ শোনেন। এখন থেকে কল সেন্টারে ফোন করতে পারবেন। সরাসরি দেখার সুযোগটি অচিরেই আপনাদের হাতে চলে আসবে। এটুআই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, কৃষি ক্ষেত্রের যেসব কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা রয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য নেটওয়ার্কের ব্যবস্থা এখানে আমরা রেখেছি। কৃষকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে ফোন সেবাও থাকছে। কৃষক সরাসরি ফোন করে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সহায়তা দিতে কৃষিকে কেন্দ্র করে কৃষকের জানালা, কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা, বালাইনাশকসহ ১০টি উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু সবগুলোকে একটি বাস্কেটের মধ্যে আনা দরকার। বিচ্ছিন্ন হলে মানুষও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এজন্যই আজকের এই উদ্যোগ।
×