ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বেগম জিয়ার তাজ হোটেল বৈঠক ও পাকিস্তানী দূতাবাসের কর্মকাণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২ নভেম্বর ২০১৭

বেগম জিয়ার তাজ হোটেল বৈঠক ও পাকিস্তানী দূতাবাসের কর্মকাণ্ড

শংকর কুমার দে ॥ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে-বিদেশে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হওয়ার অভিযোগ পেয়ে তদন্তে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বর্তমান সরকারকে হঠানোর ছঁক কষে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে মাঠে নামানো হয়েছে সেদেশের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই তাদের গুপ্তচর মারফত ইতোমধ্যেই গোপন বৈঠকে মিলিত হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর গোপন তৎপরতার খোঁজখবর নিতে গিয়েই খোঁজ মেলে পাকিস্তানের হাইকমিশনার রাফিউজ্জামান সিদ্দিকীর পাকিস্তান এ্যাফেয়ার্স নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে পোস্ট দেয়া একটি ভিডিও শেয়ার করার ঘটনা। পাকিস্তান এ্যাফেয়ার্স নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভিডিওতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার ঘটানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাকিস্তানের হাইকমিশনার রাফিউজ্জামান সিদ্দিকীকে ডেকে পাঠিয়ে প্রতিবাদ জানানো ও সতর্ক করে দেয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সেই পেজটি মুখে ফেলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির ঘটনাটি সূদরপ্রসারী নীল নক্সার অংশ বলেই গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। এ বিষয়টির নেপথ্যের ঘটনার শিকড় খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত করে দেখছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তাজ হোটেলে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে গোপন বৈঠকে বসে ষড়যন্ত্র করার ঘটনা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনাটিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা ও বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নষ্টের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আবেদন করেছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি আইনজীবী মশিউর মালেক। আদালত পর্যন্ত এ ঘটনাটি গড়ানোর পর তা নিয়ে তদন্তের জন্য মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা। শুধু তাই নয়, যুদ্ধাপরাধীর বিচারের সময় ও বিচারের রায় বাস্তবায়নের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ ও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে। তখনও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্তমান সরকার। এছাড়াও জঙ্গীবাদে মদদদান ও জালমুদ্রা পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের দুই কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ সরকার। এসব ঘটনা যে নিছক ঘটনা তা নয়, বরং এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার দাবি। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানানো হয়েছে যে, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণের নামে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে শতাধিক গাড়ি নিয়ে কক্সবাজারে যাওয়া এবং আসার সময়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে তাতে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরকে দোষারোপ করা হলেও অপ্রীতিকর ঘটনার নেপথ্যে কারা কিভাবে করেছিল তা তদন্ত করে বের করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণের নামে বিএনপির নেতৃবৃন্দের কক্সবাজারে যাতায়াতের সময়ের অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে লন্ডনে আইএসআইর গোপন বৈঠক, ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শেয়ার করার ঘটনার যোগসূত্র আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য আমরা তৈরি। ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ঢাকা প্রস্তুত। পাকিস্তান এ্যাফেয়ার্স নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ফেসবুক পেজে পাকিস্তান হাইকমিশন তাদের একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের উদ্দেশে এ কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ আলী। গত ২৬ অক্টোবর পাকিস্তান এ্যাফেয়ার্স নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট দেয়া ১৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পাকিস্তান হাইকমিশন তাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেন। ভিডিওতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেশকিছু বিতর্ক সৃষ্টির উপাদান রয়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নন, জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক! আর বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর তাজউদ্দীন আহমদ এ ব্যাপারে তখনকার মেজর জিয়াকে সমর্থন দেন। সেখানে দাবি করা হয়, ‘শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাই চাননি; তিনি স্বায়ত্তশাসন চেয়েছিলেন। নেতিবাচক আলোচনা শুরু হওয়ায় পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের হাইকমিশনার রাফিউজ্জামান সিদ্দিকীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি সতর্ক করে দেয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পকিস্তানের এ ধরনের প্রবণতা দুই দেশের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে সতর্ক করে দেয়া হয়। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার উদ্দেশে যাত্রার পর খালেদা জিয়া তিন মাস অবস্থানকালে সেখানকার তাজ হোটেলে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে গোপন বৈঠকে বসে ষড়যন্ত্র করেন মর্মে খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও দেশের সংবাদ মাধ্যমে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা ও বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নষ্টের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আবেদন করেছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি আইনজীবী মশিউর মালেক। বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদের আদালতে এ অভিযোগ মামলা হিসেবে নেয়ার আর্জি জানান এই আইনজীবী। আইনজীবীর আবেদনের বিষয়টি বিকেলে আদেশের জন্য রেখেছেন বিচারক। আইনজীবী তার আবেদনে বলেন, চিকিৎসা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে গত ১৫ জুলাই যুক্তরাজ্যে সফরে যান এবং ১৮ অক্টোবর দেশে ফেরেন বিএনপি নেত্রী খালেদা। আইনজীবী মশিউর মালেক দাবি করেন, লন্ডন সফরে গত ১৮ ও ১৯ জুলাই গভীর রাতে লন্ডনের সেন্ট জেমস কোর্ট এলাকার তাজ হোটেলে বসে আইএসআইয়ের সদস্য জুনায়েদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। ওই বৈঠকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারেক রহমান, সাদেক হোসেন খোকা ও জামায়াতের একজন নেতাও উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেন আইনজীবী। ওই আইনজীবীর দাবি, বাংলাদেশে আইএসআইয়ের মাধ্যমে জঙ্গীদের আরও তৎপর করে দেশের পরিবেশ আরও অস্থিতিশীল করে আগামী নির্বাচনে যেন বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করবে। বিএনপি যদি ক্ষমতায় যায়, তাহলে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে ভারতের মধ্যে বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করবে বলে কথা দিয়েছে বিএনপি। এ দুটি অভিযোগে মামলা করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করার পর থেকে পাকিস্তান ও তার গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিকৃত ও বিতর্কিত করে বর্তমান সরকারকে হঠাতে ষড়যন্ত্র করে আসছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ষড়যন্ত্রের ঝাপি খুলে দিয়েছে। ষড়যন্ত্রের ঝাপিতে ঢোকার ফাঁদে অনেকেই পা দিয়েছে যার তদন্তে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা। খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা কোর্ট রিপোর্টার জানান, লন্ডনে অবস্থানকালে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রদ্রোহ করার অভিযোগ এনে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা সিএমএম আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক ওরফে মশিউর মালেক বুধবার এ মামলা দায়ের করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শুনানি শেষে আগামী ৯ নবেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছে। মামলায় দৈনিক কালেরকণ্ঠ সম্পাদক এবং ইত্তেফাক, পূর্ব পশ্চিম ডটকম ও যুক্তরাষ্ট্রের পরশ টিভির বার্তা সম্পাদকসহ ৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আরজিতে অভিযোগ করা হয়, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সম্প্রতি যুক্তরাজ্য ভ্রমণের সময় লন্ডনে অবস্থানকালে বিভিন্ন হোটেলে বিভিন্ন দেশের অপশক্তিসহ পলাতক যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে দেশের বিরুদ্ধে এবং আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য আইএসআইর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছেন। ওই সম্পর্কে গত ২০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে কিছু গণমাধ্যমে এবং গত ২৭ জুলাই ও ২৮ জুলাই বাংলাদেশের সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই সকল প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থা খালেদা জিয়া লন্ডনে যাওয়ার পর তার ওপর কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী লন্ডনে পাকিস্তান এ্যাম্বাসিতে কর্মরত জুনায়েদ নামের এক ব্যক্তি যিনি সম্ভবত পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর আন্ডার কভার অফিসার। তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে দেখা করেছেন। মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। ছদ্মবেশী ওই জুনায়েদ লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গেও গোপনে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে জুনায়েদের সাক্ষাতের পর আইএসআইর কর্মকর্তা রিয়াজ আশরাফও খালেদা জিয়া ও তারেকের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। সাক্ষাতে খালেদা জিয়া বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আইএসআইর সঙ্গে সমঝোতা করেন। বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাংলাদেশে অবস্থানরত আইএসআই ও জঙ্গী সংগঠনগুলোকে তৎপর হওয়ার জন্য খালেদা জিয়া প্রস্তাব দেন। বিনিময়ে ক্ষমতায় গেলে আইএসআই ও জঙ্গী সংগঠনগুলোকে ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভূখ- ব্যবহার করতে দেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’
×