ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙ্গনে ৬৫ পরিবার গৃহহারা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙ্গনে ৬৫ পরিবার গৃহহারা

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে মাত্র দুই সপ্তাহে ২টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ২টি স্কুল ও ৬৫টি পরিবারের বসতভিটাসহ ১শ’ হেক্টর আবাদি জমির আধাপাকা ফসল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনে বসতভিটা হারিয়ে দিশেহারা এসব পরিবার খোলা আকাশের নিচে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। বাস্তভিটা হারা মানুষজনের অভিযোগ এখন পর্যন্ত কেউ তাদের খোঁজখবর নেয়নি। উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নে তিস্তা নদী ভাঙ্গন কবলিত হোকডাঙ্গা মাঝিপাড়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে ব্যস্ত। দিশেহারা মানুষজন জানায় প্রতিদিন ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ৮-৯ টি করে বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভাঙ্গনে জোয়ান সতরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ চর হোকডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ হোকডাঙ্গা মাঝিপাড়া ও ডাক্তারপাড়া গ্রাম নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনে ৬৫টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে ওই এলাকার সংরক্ষিত ইউপি সদস্য তারামনির বাড়িসহ ভারতপাড়া, দালালপাড়া ও হোকডাঙ্গা, পাঠোয়ারীপাড়া গ্রামের ৮০টি পরিবারের ঘরবাড়ি, ক্ষেতখামার ও ধানি জমি। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ জানান, দু’সপ্তাহ ধরে এ গ্রামে নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। আমরা সব কিছু হারিয়ে দিশেহারা। কিন্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। ফলে তারা খোলা আকাশের নিচে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বন্ত হয়েছেন ওই গ্রামের ভক্ত চন্দ্র বর্ম্মন, মহুবুবার রহমান ও সচিন্দ্র চন্দ্র বর্ম্মন জানানÑগত ২৫ অক্টোবর রাতে ভাঙ্গনের মুখে তাদের একটি করে ঘর সরাতে পেরেছেন বাকি ঘর ভেসে গেছে। এখন সড়কের ওপর ঝুপরি করে পরিবার নিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছেন। বিধবা সুচিত্রা রানীর একটি ঘর। সে ঘরের শুধু বেড়া রক্ষা করতে পেরেছেন। কিন্ত ভেসে গেছে ঘরের চাল। এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত। এদিকে উপজেলার তিস্তা নদীর কবলে বজরা, দলদলিয়া, গুনাইগাছ ও ব্রহ্মপুত্র নদের হাতিয়া, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ভাঙ্গনের খবর পাওয়া গেছে। থেতরাই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য তারামনি জানায়, তার বাড়ি ভাঙ্গনের হুমকিতে পড়েছে। বিষয়টি চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে জানিয়েছি। থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান ওই এলাকায় ভাঙ্গন চলছে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সোমবার নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
×