ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিএস উত্তীর্ণ পাঁচ প্রতিবন্ধীকে ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

বিসিএস উত্তীর্ণ পাঁচ প্রতিবন্ধীকে ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পাঁচ প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্যদিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মুক্তিপণ দাবিতে শিশু অপহরণ ও হত্যার দায়ে আসামি বকুলের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদ- পাওয়া পলাতক অপর আসামি সেলিমের দ-ও বহাল রেখেছে আদালত। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পাঁচ প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাঁচ প্রতিবন্ধী প্রার্থীর করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের হাইকোর্টের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ বি এম সিদ্দিকুর রহমান খান ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পক্ষে ছিলেন মোঃ খালেকুজ্জামান। সোমবার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আদালত রবিবার রায় দিয়েছে। আদালতের রায় পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পাঁচ প্রার্থীকে ৩৪তম বিসিএসে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিএস ক্যাডার সার্ভিস এবং অন্যান্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ কোটা সংরক্ষণ’ শীর্ষক আদেশের ‘খ’ অংশ অবৈধ ঘোষণা করেছে। ফলে এখন থেকে বিসিএস ক্যাডার সার্ভিস এবং অন্যান্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতেই হবে বলে জানান শফিকুল ইসলাম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওই আদেশের ‘খ’ অংশে বলা হয়েছে, ‘বিসিএস ক্যাডারসহ সরকারী দফতর স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটাসমূহের মধ্যে যে কোটায় পর্যাপ্তসংখ্যক যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাইবে না সেই কোটা হইতে এক শতাংশ যোগ্য প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করা হইবে।’ ৩৪তম বিসিএসে দুই হাজারের ওপরে প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। তবে দেখা যায়, এতে মাত্র তিনজন প্রতিবন্ধীকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। সে কারণে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত ওই এক শতাংশ কোটা পূরণ না করে নন-ক্যাডারে তালিকাভুক্ত করায় ওই পাঁচ প্রতিবন্ধী রিট আবেদনটি করেন। ওই রিটের পর হাইকোর্ট ২০১৫ সালের ১৬ নবেম্বর রুল জারি করে। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রবিবার রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল ॥ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মুক্তিপণ দাবিতে শিশু অপহরণ ও হত্যার দায়ে আসামি বকুলের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড পাওয়া পলাতক অপর আসামি সেলিমের দন্ডও বহাল রেখেছে আদালত। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল ড. মোঃ বশির উল্লাহ। এর আগে ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মুক্তিপণের দাবিতে শিশু অপহরণ ও হত্যার দায়ে বকুলকে মৃত্যুদ- ও মামলার আরেক আসামি পলাতক সেলিমকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক রেজা করিম এ রায় দেন। তাদের দুজনের বাড়ি মির্জাপুর থানার ত্রিমোহন এলাকায়। জানা যায়, ২০০৩ সালে ২৩ মার্চ ত্রিমোহন গ্রামের মাজেদুর রহমানের তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে মামুনকে অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসামিরা। শিশু মামুন তার মামা আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। মুক্তিপণের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়। পরে মামুনের বস্তাবন্দী লাশ আসামি বকুলের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
×