ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়া অরফানেজ মামলা

খালেদার আবেদন আপীল বিভাগে অগ্রাহ্য

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

খালেদার আবেদন আপীল বিভাগে অগ্রাহ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা স্থগিত চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনে সাড়া দেয়নি আপীল বিভাগ। ফলে নিম্ন আদালতে মামলাটি চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন মামলার দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী। এদিকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ফের পিছিয়ে ৩০ নবেম্বর নতুন দিন ধার্য করেছে আদালত। অন্যদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য আগামী ৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। সোমবার আপীল বিভাগ ও বিচারিক আদালতে পৃথক তিন মামলায় এসব আদেশ আসে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা বাতিল আবেদনের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপীল বেঞ্চ ‘নো অর্ডার’ দেন। আপীল বিভাগ গত বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে সোমবার তা আদেশের জন্য রেখেছিল। আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন জাকির হোসেন ভূঁইয়া। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। সোমবার আপীল বিভাগের আদেশের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, এ আবেদনে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছিল। আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। ফলে মামলার কার্যক্রম চলতে কোন বাধা নেই। তবে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, তার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি রবিবার প্রকাশ হওয়ায় খালেদা জিয়া চাইলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল দায়ের করতে পারবেন বলে জানান তিনি। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের দুই সাক্ষীর জেরা ও নয় সাক্ষীর পুনরায় জেরার অনুমতি চেয়ে খলেদা জিয়ার করা একটি আবেদন গত ২২ অক্টোবর নিষ্পত্তি করে দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই আদেশের পরে মামলা স্থগিত চেয়ে আপীল বিভাগে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা ॥ বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ফের পিছিয়েছে আদালত। আসামিপক্ষের সময় আবেদনে সোমবার শুনানি পিছিয়ে আগামী ৩০ নবেম্বর নতুন দিন রাখেন ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক হোসনে আরা বেগম। মামলায় আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, এ মামলার অন্যতম আসামি বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার সম্প্রতি মারা গেছেন। আদালতে তার মৃত্যুসংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। আর মামলার আরেক আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর মামলা হাইকোর্টে এখনও স্থগিত রয়েছে। এসব কারণে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তা মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন পিছিয়ে দেন বলে জানান আইনজীবী তাহেরুল। বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক। চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অব চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় অভিযোগপত্রে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির মামলা ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য আগামী ৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত। সোমবার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিনধার্য থাকলেও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তা দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল হক নতুন এ দিন ধার্য করেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব। জেনারেল জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ায় এ দেশের জনগণ যুদ্ধে নেমেছিল।’ ওই অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উন্নয়নের নামে চলছে দুর্নীতি ও লুটপাট।’ এসব বক্তব্য দেয়ায় গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদের আদালতে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বাদী হয়ে খালেদার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
×