ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দুটি প্রস্তুতি ম্যাচসহ তিন ফরমেটের সব ম্যাচেই বাজেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ, তবু এই পরাজয়কে স্বাভাবিক দাবি করলেন সাকিব

রিক্ত হস্তে ফিরছে আজ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

রিক্ত হস্তে ফিরছে আজ বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এবার দারুণ কিছু করার প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও আশা করেছিলেন দুর্দান্ত কিছু করতে পারবে তারা। কিন্তু একের পর এক লজ্জাজনক রেকর্ড সঙ্গী হয়েছে। প্রতিপক্ষরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নতুন কিছু রেকর্ডের জন্ম দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সেরা একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ শেষ করেছে। টেস্ট সিরিজে ২-০, ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর টি২০ সিরিজেও (২-০) একই ভাগ্য বরণ করে হোয়াইটওয়াশের হ্যাটট্রিক লজ্জার শিকার হয়ে দুর্বিষহ এক সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ দল। প্রস্তুতি ম্যাচ দুটিতেও হেরে এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় তিন ফরমেটে তিন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে সফরে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে একেবারে শূন্য হাত নিয়েই ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। আজ সকালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশের পথে রওনা হচ্ছেন সাকিবের টি২০ দল। সফরে ৯ পরাজয়ের বিষয়টিকে টি২০ অধিনায়ক সাকিব দাবি করেছেন ‘পরাজয়ের ভাইরাস’ হিসেবে। তবে প্রোটিয়া মাটিতে এই পরাজয়কেও স্বাভাবিক দাবি করলেন তিনি। একটা বৃত্তেই ঘুরপাক খেয়েছে বাংলাদেশের ম্যাচগুলো। কোন ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি স্বাগতিক প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে। মুশফিক টেস্ট সিরিজে, মাশরাফি ওয়ানডে সিরিজে এবং সাকিব টি২০ সিরিজে দলকে ভাল কিছু এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিন ফরমেটে তিন অধিনায়কের যুগের শুরুটা হয়েছে এবারই। আর সেই সিরিজেই এমন লজ্জা বরণ করতে হয়েছে। মাশরাফি আগেই দেশে ফিরে এসেছেন। ফিরে এসেছেন তামিম ইকবাল ও মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, শুভাশিষ রায়রা। এবার সাকিবের নেতৃত্বে থাকা টি২০ দলও ফিরছে। দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে আবার নেতৃত্ব ফেরা সাকিব চেষ্টা করেছেন ভাগ্য বদলের। কিন্তু সফল হতে পারেননি তিনিও। সফরে দলের পরাজয়ের ধারাবাহিকতা নিয়ে সাকিব বলেন, ‘এটা অনেকটা ভাইরাসের মতো। যদি আমরা টেস্টে ভাল করি, ওয়ানডেতে আরও ভাল করি। এরপর দেখা যায় টি২০-তে আরও ভাল করি। এটাই আসলে হয়, ড্রেসিংরুমে জয়ের মানসিকতা দেখা যায় তখন। সবাই জয় নিয়ে কথা বলতে থাকে। আর হেরে যাওয়া ড্রেসিংরুমে, মানুষ ব্যক্তিগত বিষয়গুলো নিয়ে বলতে থাকে। না চাইলেও তখন নেতিবাচক ব্যাপারগুলো চলে আসে।’ দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয় পাওয়া দুশকর যে কোন সফরকারী দলের জন্যই। তবে মাঠে লড়াই করার একটা মানসিকতা থাকার ব্যাপার আছে। সেটাও অনুপস্থিত ছিল বাংলাদেশ দলের মধ্যে। সব হারই ছিল যে কোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বাজে। কিন্তু এটাকেও স্বাভাবিক দাবি করলেন সাকিব, ‘এটাকে কিছুটা স্বাভাবিক ফলই বলা যায়, বাইরের সফরে এমন ফল হতেই পারে। সম্ভবত আমরা যে হারব এটা জানাই ছিল। তবে আশা করিনি এভাবে হারব। আমরা নিজেদের সামর্থ্য সম্পর্কে জানি, তবে কেউই তার সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি।’ পরাজয়েও থাকে কিছু শিক্ষণীয় এবং ইতিবাচক ব্যাপার। কিন্তু এতটাই বেশি বাজে ছিল পারফর্মেন্স যে কোন ইতিবাচক কিছু নেই এবারের সফরে। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘যদি দল না জেতে, তবে কে কি করল এটা ব্যাপার না। এটা একটা দলীয় খেলা। সবাই দলকে জেতানোর জন্য খেলে। কঠিন একটা সময় কেটেছে। তবে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিছুটা বিরতি পাব আমরা। আমাদের শারীরিক এবং মানসিক ফিটনেস বাড়াতে হবে।’ পোচেফস্ট্রুমে সফর শুরু করেছিল বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট দিয়ে। সেখানেই শেষ হয়েছে সফরের শেষ ম্যাচ হিসেবে সিরিজের দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ দিয়ে। আর ফলটাও আগের চেয়ে ভিন্ন কিছু হয়নি, নতুন কিছু রেকর্ড গড়েই জিতেছে প্রোটিয়ারা। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমরা দল হিসেবে ভাল করতে পারিনি। বিচ্ছিন্ন পারফর্মেন্স এখানে কাজ হবে না। জিততে হলে দল হিসেবে ভাল করতে হবে। পুরো সফরেই আমরা তা করতে পারিনি। এই ম্যাচ যেন পুরো সফরেরই প্রতিচ্ছবি।’
×