ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবনে পাঠদান

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ২৯ অক্টোবর ২০১৭

নওগাঁয় ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবনে পাঠদান

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ নওগাঁর রানীনগর উপজেলার শতবর্ষী রানীনগর (২) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের গাইড ওয়াল ভেঙ্গে গেছে। যে কোন মুহূর্তে ভবনটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এ ছাড়া দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিদ্যালয়ের চার কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেখানে নতুন ভবন নির্মাণ না করায় শ্রেণীকক্ষ সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। শ্রেণীকক্ষ সঙ্কটের কারণে এক শিফটের পাঠদান চলছে দুই শিফটে। এতে করে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতায় শ্রেণীকক্ষ সঙ্কটের কারণে বিদ্যালয়ের মানসম্পন্ন শিক্ষা থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছে। জানা গেছে, বিগত ১৯১০ সালে রানীনগর (২) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। উপজেলার খট্টেশ্বর রানীনগর ইউনিয়নের খট্টেশ্বর গ্রামে সাড়ে ৭২ শতক জমির ওপর বিদ্যালয়টি অবস্থিত। শতবর্ষের অধিক সময় ধরে বিদ্যালয়টি এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়টি বহুমুখী সমস্যায় জর্জড়িত। শ্রেণীকক্ষ সঙ্কটের কারণে ১ম শ্রেণীর ‘ক’ ও ‘খ’ শাখার ৮০ জনের পাঠদান একই কক্ষে, ২য় শ্রেণীর ‘খ’ শাখা ও তয় শ্রেণীর ‘খ’ শাখার পাঠদান একটি টিনশেডের পরিত্যক্ত কক্ষে করাতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। শিশু শ্রেণী, ১ম শ্রেণী ও ২য় শ্রেণীর ছুটির পর অন্যান্য শ্রেণীর পাঠদান করানো হয়। শিশু শ্রেণীর জন্য একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীকক্ষ থাকা বাধ্যতামূলক। ২০০১ সাল থেকে পুরনো জরাজীর্ণ ৪ কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় এই বিদ্যালয়ে কক্ষ সঙ্কট আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তাই বাধ্য হয়ে পাশের একটি টিনশেডের কক্ষ সংস্কার করে সেখানে শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। এদিকে বিদ্যালয়ে বিগত ২০০১ সালে নির্মিত দ্বিতল ভবনের পূর্বদিকের গাইড ওয়ালটি (সহায়ক দেয়াল) পুকুরের মাঝে ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোন সময় ভবন এবং টয়লেটটি পুকুরের মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা। এই বিদ্যালয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪ শ’ ৩১ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করতে আসে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র প্রামাণিক জানান, শতবর্ষী এই বিদ্যালয়টি খুবই অবহেলিত। বিদ্যালয়ের গাইড ওয়ালটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরাও প্রতিনিয়তই ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। বিদ্যালয়ে কক্ষ সঙ্কট থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা আধুনিক মানসম্মত শিক্ষাগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অপরদিকে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরাও ।
×