ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেডিক্যালে ভর্তি হলেও মেয়ের পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিনমজুর মা

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

মেডিক্যালে ভর্তি হলেও  মেয়ের পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিনমজুর মা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৭ অক্টোবর ॥ এলাকার মানুষের কাছে সাহায্য তুলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ রামপুর এলাকার দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী আশা আক্তার। ভর্তি হওয়ার পরও আশা চিন্তিত হয়ে পড়েছে তার পড়ালেখা নিয়ে। কারণ মেডিক্যালে পড়াশুনা করার জন্য পরবর্তী খরচ চালানোর কোন ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত হয়নি। মেয়ের ডাক্তারি পড়া অনিশ্চিত বলছেন আশার দিনমজুর মা আর্জিনা বেগম। আশা রামপুর এলাকার মকসেদ আলী মেয়ে। তার মা আর্জিনা বেগমকে অনেক আগে ছেড়ে চলে যায় তার বাবা মকসেদ আলী। এরপর থেকেই তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় মা আর্জিনা বেগমকে। আর্জিনা বেগম শুরু করেন তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে সংগ্রামী জীবন। সমাজের মানুষের নানা রকম বিরূপ কথা সহ্য করে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দিনমজুরের কাজ শুরু করেন তিনি। সারাদিন দিনমজুরের কাজ করে যা উপার্জন হয় সেই টাকা দিয়ে চলে সংসার ও মেয়ের পড়াশুনার খরচ। স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতায় ঠাকুরগাঁও সরকারী কলেজে এইচএসসি ভর্তির সুযোগ হয় আশার। অনেক কষ্ট করে পড়াশুনার খরচ যোগাতে থাকে আশার মা আর্জিনা বেগম। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসিতে ভাল ফল করে আশা। মায়ের ইচ্ছে ছিল ছোট মেয়েকে ডাক্তার বানানো। সেই স্বপ্ন নিয়ে সকলের কাছে সহযোগিতা নিয়ে ঢাকায় কোচিংয়ে ভর্তি করে দেয়া হয় আশাকে। এরপর মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৮৭৬ নম্বর মেধা তালিকায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় আশা। আশার মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে খবর শুনে গ্রামের মানুষ আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে। কিন্তু আশার মায়ের মুখে হতাশার ছাপ দেখা দেয়। পরে এলাকার মানুষের কাছে সাহায্য তুলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয় আশাকে। আশার মা আর্জিনা বেগম বলেন, নিজের ভিটেমাটি কিছুই নেই। তিন মেয়ের মধ্যে আশা সবচেয়ে ছোট। খেয়ে না খেয়ে মেয়েটি স্কুল-কলেজ করেছে। ভাল ফলে এলাকার সবার সহযোগিতায় মেডিক্যালে ভর্তি করেছি। কিন্তু এখন আশাকে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। পরবর্তীতে খরচ কিভাবে যোগাড় করব ভেবে পাচ্ছি না।
×