ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শজিমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনকে মারধরের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

শজিমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনকে মারধরের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) বৃহস্পতিবার রাতে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর অসুস্থ এক রোগীর দুই স্বজনকে মারপিট করা হয়েছে বলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। মারপিটে আহতরা হলো- গাজিউর রহমান ও তার ছেলে রুম্মান হোসেন শান্ত। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর দুই স্বজনকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, রোগীর স্বজন (এ্যাটেনডেন্ট) এক মহিলা ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে অশালীন আচরণ করায় অন্য লোকজন তাদের (এ্যাটেনডেন্টদের) মারধর করে। উল্লেখ্য, এর আগেও শজিমকে হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের মারপিটের ঘটনা ঘটেছিল। হাসপাতাল ও রোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাটের পুরানপৈল এলাকার পুলট গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের স্ত্রী বৃদ্ধ মাহিলা বেওয়া (৭৫) শ^াসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি মেডিসিন বিভাগে ১০ নম্বর মহিলা ওয়ার্ডের ১ নম্বর ইউনিটের ৫ নম্বর বেডে (অতিরিক্ত) চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোগীর এ্যাটেনডেন্ট ছিলেন, ছেলে গাজিউর রহমান। বৃহস্পতিবার রাতে রোগীর নাতি শান্ত দাদিকে হাসপাতালে দেখতে আসেন। এ সময় রোগীকে রক্ত দেয়া হচ্ছিল। রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, ব্লাড ব্যাগ খালি হতে চললে তা খুলে দেয়ার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষে শান্ত গিয়ে বিষয়টি বলেন। সেখানে দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিলেন। এর কিছু পর আবার তিনি সেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসককে আসতে বলেন। সূত্র জানায় চিকিৎসককে ডাকার জন্য ‘সম্মোধন’ নিয়ে জটিলতার উদ্ভব হয়। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, এর পরেই এক ইন্টার্ন চিকিৎসক রোগীর নাতি শান্তর কলার চেপে ধরেন। এ সময় শান্তর বাবা গাজিউর এগিয়ে এলে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে প্রথমে শান্ত ও পরে তার বাবাকেও মারপিট করা হয়। পরে আরও কিছু ইন্টার্ন চিকিৎসক আসেন। পরবর্তীতে রোগীর ওই দুই স্বজনকে একটি কক্ষে আটকে আরও মারপিট করা হয়। রাত ৯টার দিকে এই মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই ওয়ার্ডে অন্যান্য রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা হাসপাতালে গেলে তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। পরে সিনিয়র চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। তারা রোগীর আহত ২ স্বজনকে উদ্ধার করেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলেন। রাতেই ওই দুই ব্যক্তি জয়পুরহাটে ফিরে গিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এদিকে অসুস্থ মাহেলা বেওয়ার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় রাতে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার দুপুরে পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে মাহেলা বেওয়াকে জয়পুরহাটে নেয়ার জন্য রওনা হন। পরে তিনি মারা যান।
×