ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিয়ারা এখন আফগানিস্তানে আইএসের টার্গেট

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

শিয়ারা এখন আফগানিস্তানে আইএসের টার্গেট

কাবুলে এক মসজিদে গত সপ্তাহে নৃশংস হত্যাকা-ে দেশের শিয়া সংখ্যালঘুদের নাজুক অবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে। তারা ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপের হামলার লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে ক্রমেই। এ জঙ্গী গ্রুপটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চাঙ্গা করে তোলার চেষ্টা করছে। খবর এএফপির। ইমাম জামান মসজিদের ভেতরে শুক্রবারের আত্মঘাতী বোমা হামলায় যারা আহত হয়েছে তারা এএফপিকে বলেছে, তারা বোমা হামলাকারীকে দেখেছে। কিন্তু কোন নিরাপত্তা তল্লাশি ছিল না যদিও সরকার শিয়া মসজিদগুলোতে নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শুক্রবারের আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে কয়েক ডজন নারী, পুরুষ ও শিশু নিহত হয়েছে। সিরিজ হামলার মধ্যে এটাই সাম্প্রতিক ঘটনা। গত বছরের ঐ হামলাগুলোতে ২শ’র বেশি শিয়া নিহত হয়েছে। আফগান রাজধানীর শিয়া এলাকার বাসিন্দা আলীগুল তার বাড়িতে এএফপিকে বলেছেন, সেদিন মসজিদে তল্লাশির দায়িত্বে কেউ ছিল না। বিস্ফোরণে গুলের শরীরে বিভিন্ন স্থান পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, মহরম মাসে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর তা আর ছিল না। আফগানিস্তান এ গোষ্ঠীগত সংঘাত থেকে দূরে ছিল অনেকখানি। এ সংঘাত ইরাক ও সিরিয়ার মতো অন্য মুসলিম দেশগুলোকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। আইএসের হামলা গত বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ, শিয়ারা তাদের ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতে পারে। সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ আফগানিস্তানে শিয়া জনসংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। তারা কাবুল ও গোটা দেশে তাদের ধর্মীয় স্থানগুলোতে আরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে কয়েক মাস ধরেই। সরকার সেপ্টেম্বরে শিয়া মসজিদগুলো রক্ষায় সহযোগিতার জন্য ৪শ’র বেশি বেসামরিক নাগরিককে সশস্ত্র করে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু মরণঘাতি হামলা চলছেই। শুক্রবারের বোমা বিস্ফোরণে মুখ ও কাঁধে আহত রমজান আলী বলেন, আমাদের রক্ষা করার ব্যর্থতা সম্পূর্ণভাবে সরকারের। এক দোকানি রসুল হায়দার বলেন, চুলোয় যাক এ সরকার। আমাদের ব্যাপারে কোন ভ্রƒক্ষেপ নেই সরকারের। তালেবান আফগানিস্তানে আইএসের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এদের উপস্থিতি অপেক্ষাকৃত কম হলেও সুন্নি চরমপন্থী গ্রুপটি দেশে শিয়াদের বিরুদ্ধে ধ্বংসকর হামলা চালাতে সমর্থ। একই এলাকার শিয়া সম্প্রদায়ের প্রবীণ ব্যক্তি ইব্রাহিম বলেন, এ জঙ্গীরা শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে চাইছে। কিন্তু তারা সফল হবে না। দেশটিকে সোভিয়েত দখলদারিত্ব, গৃহযুদ্ধের কারণে দুর্ভোগ সহ্য করতে হয়েছে। এখন দুর্ভোগ চলছে তালেবান বিদ্রোহীদের কারণে যা চলে আসছে ১৬ বছর ধরে। সাধারণ আফগানরা বর্তমান সংঘাতের মূল্য দিয়েছে অনেক। জাতিসংঘের এক উপাত্তে বলা হয়, এ বছরের প্রথম নয় মাসে ৮ হাজার ১৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আফগানিস্তান এনালিসিস নেটওয়ার্কের সিনিয়র বিশ্লেষক কেইট ক্লার্ক বলেছেন, তিনি মনে করেন, আইএস সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির যে চেষ্টা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে আফগানরা। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের অধিকাংশ এলাকায় নোংরা সাম্প্রদায়িক সংঘাত বর্তমান।
×