ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেনা মোতায়েন না হলে নির্বাচন নিয়ে সঙ্কট থেকেই যাবে॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

সেনা মোতায়েন না হলে নির্বাচন নিয়ে সঙ্কট থেকেই যাবে॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করলে এ নির্বাচন নিয়ে সঙ্কট থেকেই যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা আশা করব সরকার ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার, সেনা মোতায়েন ও সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার উদ্যোগ নেবে। শুক্রবার সকালে যুবদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরে বাংলানগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দেয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ফখরুল বলেন, আমি আগেই বলেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ লোক দেখানো ও আইওয়াশ। সুতরাং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সেনা মোতায়েন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও সরকারের। মির্জা ফখরুল বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো নির্বাচন করতে চাইলে সে নির্বাচন কারও কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর এ ধরনের নির্বাচন সরকার করতেও পারবে না। তাতে করে আগের যে সঙ্কট সেটা থেকেই যাবে। আর সরকার যাতে এ ধরনের নির্বাচন করতে না পারে সে জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদেরও সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ। ইসির বক্তব্যে বিএনপি হতাশ : নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক কাতারে আনতে সমঝোতার উদ্যোগ নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিতে পারবে না বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) যে কথা বলেছেন, তাতে বিএনপি হতাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, আমরা হতাশ হলেও আশা করব বিভিন্ন মহলের সঙ্গে ইসির সংলাপে যেসব প্রস্তাবনা এসেছে তা বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সরকার যেভাবে আইন করে দেয় সেভাবেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। সে আইনের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নেবে না ইসি। সিইসির এ বক্তব্য গোটা জাতিকে হতাশ করেছে। তাতে প্রমাণ হয় সরকারের দেখানো পথ ছাড়া তিনি হাঁটবেন না। রিজভী বলেন, সংলাপের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে নিরপেক্ষ বা সহায়ক সরকার এবং সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ অবশ্যই প্রয়োজন। আর নির্বাচন কমিশন সেটি নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, এ সরকার রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ব্যর্থ। সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতি দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে- আমির খসরু : সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। খসরু বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হলে সংসদ ভেঙ্গে সেনাবাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তবে আওয়ামী লীগ কেন সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিরুদ্ধে আমরা বুঝতে পারছি। তারা আশঙ্কা করছে সেনাবাহিনী থাকলে কেন্দ্র দখল করা যাবে না, আগের রাতে ভোটের বাক্স ভরা যাবে না। খসরু বলেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা মানে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া নয়। পুলিশেরও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা রয়েছে। পুলিশ কি বিচার করে? করে না। তাই নির্বাচনকালে পুলিশের মতো সেনাবাহিনীকেও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। যাতে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারে, জনগণকে রক্ষা করতে পারে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা রেজাবুদ্দৌলাহ চৌধুরী প্রমুখ।
×