ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোয়াইনঘাটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুহিত

তামাবিল স্থলবন্দর চালু,উপকৃত হবে ভারত ও বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

তামাবিল স্থলবন্দর চালু,উপকৃত হবে ভারত ও বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সিলেটের সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাটের তামাবিল স্থলবন্দর চালু হওয়াতে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশই উপকৃত হবে। এর ফলে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং দারিদ্র্য কমবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী সাফল্যের মধ্যে রয়েছে ১১টি স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করা। আরও ১০টি কন্টেনার বন্দর স্থাপনের কাজ চলছে। শুক্রবার সিলেটের সীমান্তবর্তী তামাবিল স্থলবন্দরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সময় এদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিলেন, তা এখন সাড়ে ২২ শতাংশে নেমেছে। আগে এক কোটি ১০ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন হতো, এখন তিন কোটি ৮০ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন হয়। দেশ স্বাধীনের পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৯৮তম, এখন ৭১তম স্থানে এসেছে, উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করলে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে আর্থিক উন্নতি হয়। ইতোমধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছে গেছি (যদিও সার্টিফিকেট পাইনি)। ২০৪১ সালে সত্যিই আমরা সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতে পারব। গত নয় বছরে দেখেছি, আমাদের দেশের মানুষ বাধা না পেলে নিজের জোরেই এগিয়ে যায়। সবাই করিৎকর্মা। এখন আয় বেড়েছে মানুষের প্রচেষ্টায়। স্থলবন্দরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, সিলেটের সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাটের তামাবিল স্থলবন্দর চালু হওয়াতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। আমরা কারও কাছে হাত পাততে চাই না। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে একটা স্থলবন্দর চালু করতে পারেননি। অথচ শেখ হাসিনা গত ৯ বছরে ১১টা স্থলবন্দর চালু করেছেন। আরও দুটি চালু হওয়ার পথে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমাদের আয় হয়েছে এক শ’ ৪৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও কয়লা-পাথর আমদানি রফতানিকারক সমিতির নেতারা এ সময় নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সাংসদ ইমরান আহমদ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান ও নৌ পরিবহন সচিব আব্দুস সামাদ। প্রায় ২৩ দশমিক ৭২ একর ভূমির মধ্যে ৬৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে তামাবিল স্থলবন্দর। এই শুল্ক বন্দর হওয়াতে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পাবে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৮ মে তামাবিল স্থলবন্দর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান। প্রায় আড়াই বছরে স্থলবন্দরটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপান্তরিত করার ঘোষণা হয়। বন্দরে উন্নীতের কার্যক্রমের মধ্যে ২৩ দশমিক ৭২ একর ভূমি অধিগ্রহণ, এক লাখ নয় হাজার ৩৩০ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, দুই হাজার ৫০০ মিটার সীমানা প্রাচীর তৈরি, ৮ হাজার ১৮০ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ, ২৭ হাজার বর্গমিটার উন্মুক্ত স্টক ইয়ার্ড নির্মাণ, ৭৪৪ বর্গমিটার ওয়্যারহাউস নির্মাণ, এক হাজার ৩৪৯ বর্গমিটার অফিস, ডরমেটরি ও ব্যারাক ভবন নির্মাণ, দুই হাজার মিটার ড্রেন নির্মাণ, দুটি ওয়েব্রিজ ও দুটি ১০০ টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ওয়েহিং স্কেল সংগ্রহ করা এবং পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রস্তাবিত আবাসিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলার জন্য ৩ দশমকি ১৮ একর, সাইটের নির্মাণের জন্য ২৪ দশমিক ৯৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
×