ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফিক্সিং বিতর্কে শঙ্কিত সরফরাজ!

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২৭ অক্টোবর ২০১৭

ফিক্সিং বিতর্কে শঙ্কিত সরফরাজ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আরব আমিরাতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। দুই টেস্টের সিরিজ শেষে ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও সবেমাত্র শেষ হয়েছে। আর এই ওয়ানডে সিরিজ চলার সময়ই হয়েছে বিপত্তি। শ্রীলঙ্কাকে ওয়ানডে সিরিজে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করলেও একটি বিতর্ক শুরু হয়েছে ফিক্সিং প্রস্তাব নিয়ে। পাকিস্তানী অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের কাছে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব এসেছিল এমন অভিযোগ ওঠার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে সংবাদ সম্মেলনে নিজেই বিষয়টি প্রকাশ করে সরফরাজ দাবি করেন তিনি ওই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন দলকে। কিন্তু সরফরাজ এখন বেশ শঙ্কিত। এমনকি একটি প্রস্তাব পাওয়ার পর থেকে ক্রিকেট জুয়াড়িদের ব্যাপারে যথেষ্ট ভীতি তৈরি হয়েছে তার মধ্যে। তাদের লক্ষ্যবিন্দু হওয়াতে এখন টিভিতে নিজেকে দেখতেও ভয় পান সরফরাজ। সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডের আগেই সরফরাজের সঙ্গে ক্রিকেট জুয়াড়িরা যোগাযোগ করে। সেটা সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) জানিয়ে দেন সরফরাজ। তখন ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলেছিল পাকিরা। পিসিবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানালেও খেলোয়াড়ের নাম প্রকাশ করেনি। বিষয়টি তারা বিস্তারিত আইসিসিকে অবহিত করে। তবে সরফরাজ পরবর্তীতে নিজেই প্রকাশ করেন যে তাকেই ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার প্রথম টি২০ ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবার বিষয়টি নিজে থেকে জানান সরফরাজ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি পুরোপুরি পিসিবির কাছে খোলাসা করার মাধ্যমে নিজেকে অনেকখানিই ভারমুক্ত মনে হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে খুবই ভীত হয়ে পড়েছি আমাকে নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ব্যাপকভাবে আলোচনা হওয়ার কারণে।’ গত শনিবার প্রথম এই খবরটি বেরিয়ে আসে। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিক্সিং সংশ্লিষ্ট কোন খবর আসায় ব্যাপক হৈ চৈ পড়ে যায় চারদিকে। আর পাকিস্তানী গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ফলাও করে খবর প্রকাশ করা হয়। দ্রুতই নিজের প্রতিক্রিয়া দেখানোর কারণে সরফরাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল গণমাধ্যমগুলো। কিন্তু যুগে যুগে পাক ক্রিকেটে অনেক ফিক্সিং বিতর্ক থাকার কারণে অনেকেরই স্নায়ুচাপ বেড়ে গিয়েছিল। সরফরাজ এ বিষয়টি নিয়ে বুধবার বলেন, ‘যা কিছুই ঘটেছে, তার শেষ হয়েছে। আর আমার যা করা উচিত বলে মনে হয়েছিল সেটাই করেছি। কিন্তু আমি এটা জানানোর সময়ও বিন্দুমাত্র কম্পিত হইনি। আসলে টিভিতে নিজেকে খুব বেশি মাত্রায় দেখেই আমি বেশি ভীত হয়ে পড়েছি। আমাকে নিয়ে টিভিগুলোতে এত বেশি আলোচনা হচ্ছিল যে শঙ্কা বোধ করতে শুরু করেছিলাম। তবে আল্লাহর ইচ্ছায় সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। যখন একটা সিরিজ চলবে তখন আসলে স্বাভাবিক থাকতেই হবে। সবকিছুই ভালভাবে চলছে আপাতত।’ আন্তর্জাতিক জুয়াড়িরা পাক ক্রিকেটারদের পেছনে যুগে যুগেই লেগে থাকে আঠার মতো। এ বছর ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি২০ আসর পাকিস্তান সুপার লীগে (পিএসএল) স্পট ফিক্সিং কান্ড ঘটেছে। এতে করে টালমাটাল হয়ে পড়ে পিএসএল। বেশ কয়েকজন পাক ক্রিকেটার তখন এ ধরনের প্রস্তাবনা পেয়েছিলেন। পরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পিসিবি থেকে বেশ কয়েকজন নিষেধাজ্ঞাও পেয়েছেন। আর এ কারণেই জুয়াড়িদের আবার নতুন করে জাল বিস্তারের চেষ্টা বেড়েছে। সে কারণেই পাক অধিনায়ক এমন এক প্রস্তাব পেয়েছেন। তবে দলের কোচ মিকি আর্থার এ বিষয়ে গত সোমবার বলেন, ‘সত্যি বলতে কি, খেলোয়াড়টি অবিশ্বাস্য রকম ভালভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। যা কিছু তার কাছ থেকে পাওয়া উচিত ছিল বোর্ডের সে সবকিছুই করেছে। আমিও সরাসরি বিষয়টি নিয়ে খোলাসা আলোচনা করেছি। খুব দক্ষতা এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিষয়টি সামাল দেয়া হয়েছে। আমার মনে হয় দলের সবার জন্য এবং ক্রিকেট বিশ্বের জন্য এটা সত্যিকারের দারুণ এক দৃষ্টান্ত।’
×