ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এএফসি অনুর্ধ-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্ব খেলতে আজ তাজিকিস্তান যাচ্ছে দল, প্রথম ম্যাচটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি

চূড়ান্তপর্বে খেলার স্বপ্ন বাংলাদেশের যুবাদের

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২৭ অক্টোবর ২০১৭

চূড়ান্তপর্বে খেলার স্বপ্ন বাংলাদেশের যুবাদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভুটান থেকে সাফ অনুর্ধ-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে নিয়ে আসা তাক লাগানো সাফল্যের রেশ এখনও আছে বাংলাদেশের তরুণ ফুটবলারদের মনে। ভাগ্যের ফেরে শিরোপা হারিয়ে রানার্সআপ হওয়া যুবাদের সামনে এবার আরেকটি কঠিন মিশন। এএফসি অনুর্ধ-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই ফুটবলে অংশ নিতে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা যাচ্ছেন তাজিকিস্তান। আজই দুবাই হয়ে তাজিকিস্তানের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে কোচ মাহবুব হোসেন রক্সির দল। বিভিন্ন দেশে মোট ১০টি গ্রুপে বাছাইর্বের খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২৪ অক্টোবর থেকে শুরুও হয়ে গেছে মাঠের লড়াই। প্রতিযোগিতায় ‘বি’ গ্রুপে খেলবে বাংলাদেশ। যেখানে বাংলার যুবাদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক তাজিকিস্তান, শক্তিশালী উজবেকিস্তান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা। এই গ্রুপের খেলা মাঠে গড়াবে ৩১ অক্টোবর। ওইদিন নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এএফসি কাপে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে মূলপর্বে খেলার স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশের যুবারা। এ লক্ষ্যেই দেশ ছাড়ছে তারা। টুর্নামেন্টে নিজেদের লক্ষ্য সম্পর্কে জানাতে বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের টিম ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, প্রধান কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি ও দলের গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। কঠিন হলেও প্রত্যেকে মূলপর্বে খেলার আশার কথা শুনিয়েছেন। বাছাইপর্বের ১০ গ্রুপের সেরা ১০ দল, সেরা ৫ রানার্সআপ ও একটি স্বাগতিক দেশ মিলিয়ে মোট ১৬টি দেশ চূড়ান্তপর্বে খেলার সুযোগ পাবে। চূড়ান্তপর্বের খেলা হবে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে ৪ নবেম্বর। এই আসরে খেলতে হলে বাংলাদেশকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হতে হবে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে সরাসরি মূলপর্বে খেলতে পারবেন রহমত মিয়া, জাফর ইকবাল, পাপ্পু হোসেনরা। রানার্সআপ হলেও সুযোগ থাকবে। সেক্ষেত্রে অপেক্ষায় থাকতে হবে। কারণ ১০ গ্রুপের সেরা ৫ রানার্সআপ দল মূলপর্বে খেলবে। কঠিন চ্যালেঞ্জ হলেও বাংলাদেশ নিজেদের গ্রুপে কমপক্ষে দ্বিতীয় হতে চায়। তবে কাজটি যে সহজ হবে না সেটা বলাইবাহুল্য। গ্রুপে সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে ধরা হচ্ছে উজবেকস্তানকে। এরপর শক্তির বিচারে এগিয়ে স্বাগতিক তাজিকিস্তান। অপর দুই দল শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপকে হারানোর আত্মবিশ্বাস আছে বাংলাদেশ দলের। কঠিন মিশনে যাওয়ার আগে কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি বলেন, বাংলাদেশ দলে অনেক উদীয়মান ভাল খেলোয়াড় আছে। আমরা ভাল ফলাফলের মাধ্যমে চূড়ান্তপর্বে খেলার জন্য চেষ্টা করব। এজন্য আমাদের প্রথম ম্যাচেই ভাল করতে হবে। আমাদের প্রথম ম্যাচটিই স্বাগতিক তাজিকদের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচে জয় বা ড্র হলে পরের ম্যাচগুলোতে ভাল করার আত্মবিশ্বাস যোগাবে। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুতে চাই, প্রথম ম্যাচটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রক্সি বলেন, সাফে যা করেছি তার থেকে ভাল করতে সবাই মুখিয়ে আছে। সাফে যারা খেলেছে তারাই এখানে যাচ্ছে। পারফর্মেন্স বিবেচনায় আমরা কয়েকজনকে বাদ দিয়েছে, সুযোগ দিয়েছি নতুনদের। দলে নতুন সুযোগ পাওয়া চারজন হলেন আবু সাইদ, আরিফুর রহমান, মনির হোসেন ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। পেশাদার লীগে ভাল খেলে এরা দলে জায়গা করে নিয়েছেন। আর সাফের দল থেকে বাদ পড়েছেন নিপু, সাব্বি, কিরণ ও আলামিন। শেষজন বাদ পড়েছেন ইনজুরির কারণে। নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়ে রক্সি বলেন, আমরা মূলপর্বে কোয়ালিফাই করতে চাই। এজন্য নিজেদের গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হতে হবে। এমন বলার পাশাপাশি আবার ‘যদি’ও বলে দিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ। তিনি বলেন, আমরা আগে থেকেই বলতে পারি না কোয়ালিফাই করব। আমাদের ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুতে হবে। প্রথম মাচটি ভাল করতে পারলে কাজ সহজ হয়ে যাবে। তবে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে মূলপর্বে খেলা সম্ভব বলে মনে করেন রক্সি। অবশ্য কঠিন এই চ্যালেঞ্জে যাওয়ার আগে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে না পারার আক্ষেপ থাকছে যুবাদের। বাফুফে নাকি প্রাণান্ত চেষ্টা করেও দেশের কোন ক্লাবকে রাজি করাতে পারেনি। আর বিদেশে চেষ্টা করেও নাকি তারা সফল হয়নি। বাংলাদেশ দলের দীর্ঘকায় গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেনের চোখেমুখেও রঙিন স্বপ্ন। তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ আমরা মূলপর্বে খেলতে পারব। ভুটানে আমাদের খেলার সবাই প্রশংসা করেছে। এখন আমরা আরও ভাল করছি। আশা করছি সফল হতে পারব।
×