ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরের পৌর কর্মচারীর মৃত্যুর প্রতিবাদে অবরোধ

প্রকাশিত: ০১:০২, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

জামালপুরের  পৌর কর্মচারীর মৃত্যুর প্রতিবাদে অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর ॥ জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের হাতে নির্যাতিত হয়ে গুরুতর জখমের এক মাস পর সরিষাবাড়ী পৌরসভার সনদ পরিদর্শক ও যুবলীগ নেতা মারুফ হাসান (৩৫) বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে মারা গেছেন। ২০ সেপ্টেম্বর তিনি নির্যাতিত হয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মারুফ হাসানের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর মারুফ হাসানের উপর হামলাকারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও অস্ত্রসহ বিভিন্ন মামলার আসামি মোবারক হোসেন রাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় এলাকাবাসী। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীসহ বিক্ষুব্ধ জনতা তারাকান্দি যমুনা সার কারখানা এলাকার প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও গাড়ির টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখে। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য যমুনা সার কারখানার পরিবহনসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। পরে তারা সেখানে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। প্রতিবাদ সভায় তারা পৌর কর্মচারীর হত্যাকারী ও তার ইন্ধনদাতাদের বিচার দাবি করেন। অপরদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মোবারক হোসেন রাজার বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় নিকটবর্তী যমুনা সার কারখানা মসজিদের মোয়াজ্জিন হাফেজ রফিক মিয়ার বাড়িতেও তারা অগ্নিসংযোগ করে। মোয়াজ্জিনের স্ত্রী হাজেরা বেগম অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা বিনা কারণে তাদের চারটি ঘর পুড়িয়ে সমস্ত মালামাল লুট ও প্রতিবন্ধী মেয়ে রেহেনা বেগমকে মারধর করেছে। স্থানীয় তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ও দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০ সেপ্টেম্বর সকালে সরিষাবাড়ী পৌরসভার সনদ পরিদর্শক মারুফ হাসান (৩৫) ও যমুনা সার কারখানার শ্রমিক লাল চাঁন (৩৮) কর্মস্থলে যাওয়ার পথে আওনা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মেন্দারবেড় গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে মোবারক হোসেন রাজা (৩৩) তাদের উপর হামলা চালায়। ধারালো চাপাতির আঘাতে গুরুতর জখম হওয়ায় তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মারুফ হাসানের অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে তিনি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম খান বলেন, মারুফ হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় ওইদিনই অভিযান চালিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন রাজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তখন তার কাছ থেকে একটি পিস্তলসহ দু’টি অস্ত্র পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পৃথক আইনে তিনটি মামলা হয়। মোবারক হোসেন রাজা থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং অন্তত ১০টি মামলার আসামি তিনি। বৃহস্পতিবারের অগ্নিসংযোগ, হামলা ও সড়ক অবরোধের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
×