ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গানে আলাপে কাইফি দম্পতির জীবনের গল্প শোনালেন শাবানা-জাভেদ

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

গানে আলাপে কাইফি দম্পতির জীবনের গল্প শোনালেন শাবানা-জাভেদ

গৌতম পাণ্ডে ॥ শুধু গজল নয়, আছে কথা, আছে কৌতুক কখনোবা কাইফি আজমির শের আওড়ে মঞ্চ মাতালেন দুই বিখ্যাত মানুষ। একজন বলিউডের খ্যাতিমান অভিনেত্রী শাবানা আজমি অন্যজন তারই স্বামী জাভেদ আখতার। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের বাংলাদেশ কমপ্লেক্স মিলনায়তন ছিল দর্শকের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ। উদ্দেশ্য একটাই উপমহাদেশের খ্যাতিমান এই দুই ব্যক্তিত্বকে এক নজর দেখা এবং তাদের পরিবেশনা উপভোগ করা। ‘কাইফি অউর ম্যায়’ শিরোনামে শাবানা আজমি বাবা কাইফি আজমি ও মা শওকত কাইফির জীবনের গল্প শোনালেন স্বামী জাভেদ আখতারের সঙ্গে। জাভেদ আখতার কাইফি আজমি ও শওকতের ভূমিকায় শাবানা আজমির দৃশ্যবর্ণনা ও হৃদয়ছোঁয়া অভিনয়ে গোটা আয়োজন ছিল অনবদ্য। এই বিশেষ মঞ্চ পরিবেশনাটির আয়োজন করে ব্লুজ কমিউনিকেশন্স। ঘড়ির কাঁটা ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হয় এ আয়োজন। খ্যাতিমান অভিনেত্রী শাবানার পরনে লাল ও সবুজ রঙের শাড়ি। স্বামী জাভেদ আখতার পরেছিলেন কালো পাঞ্জাবি। মঞ্চের ঠিক ডান পাশে দুজনের বসার জায়গা, পাশাপাশি বসলেন দুই গুণী। মঞ্চের বাঁ পাশে একদল যন্ত্রীসহ উপবিষ্ট শিল্পী জসবিন্দর সিং। পরিবেশনা কখনও চলে আলাপে, কখনও কৌতুকে। কাইফি আজমির শের আওড়ে মঞ্চ মাতালেন দুই বিখ্যাত মানুষ। কথা শেষ হতেই শোনা গেল সমধুর কণ্ঠে কাইফি আজমির লেখা গজল। গান ও কথায় গোটা আয়োজন ছিল মনোমুগ্ধকর ও প্রাণবন্ত। শাবানা ও জাভেদ আখতারের কথা শেষ হতেই শোনা যায় জসবিন্দর সিংয়ের কণ্ঠে গজল ‘ঝুঁকে ঝুঁকে সে ন্যাজার’। প্রেমের স্বর্গীয় আবাহনে, জীবনের নানা জটিলতার ঘোর ছেড়ে যেন এক সুন্দর উপত্যকায় দর্শকশ্রোতাদের নিয়ে যায় সেই গজলের সুর। দুই ঘণ্টার এই মঞ্চ প্রযোজনার অনুষঙ্গগুলোও একটু ভিন্ন ধরনের। এই উপস্থাপনায় কাইফি আজমি ও স্ত্রী শওকত কাইফির কিছু চিঠি ও লেখা পাঠ করেন শাবানা ও জাভেদ। লেখাগুলো মূলত কবি কাইফি আজমিকে নিয়ে শওকত কাইফির বই ‘ইয়াদ কি রেহগুজার’, কাইফির বিভিন্ন সময়ের সাক্ষাতকার থেকে নেয়া। যার মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে কাইফি আজমির বেড়ে ওঠা, সেই মিজওয়ান গ্রামের কথা, শওকতের সঙ্গে কাইফির পরিচয় বিয়ে, পঞ্চাশের দশকে মুম্বাইয়ে তাদের দিনগুলো, মিল শ্রমিকদের সঙ্গে কাইফির কাজ ও কাইফির অসুস্থতার সময়ে লড়ে যাওয়া মানুষের কথা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এই কাহিনীতে মূর্ত হয়ে আছে কাইফি ও শওকতের ভালবাসার ৫৫ বছর, একসঙ্গে পথচলার গল্পটি। কাইফি ও শওকতের ভালবাসা শুধু দুজন মানুষের গল্প নয়, তাদের জীবনের নানা ঘটনা যেন হয়ে উঠে সামষ্টিক মানুষের দুঃখ ও হাসির অনুপম গাথা। ফাঁকে ফাঁকে অনবদ্য শের, কিংবা হৃদয়ছোঁয়া গজলের টানে জমজমাট হয়ে ওঠে আয়োজনটি। জসবিন্দর সিং তার সুমধুর কন্ঠে গেয়ে শোনান কিতনে জিন্দেগি, মেরে আওয়াজ, তুম জো মিল গ্যায়ে হো, ওয়াক্ত নে কিয়া কেয়া হাসিন সিতাম, তুম ইতনা জো মুসকুরা রাহে হো ইত্যাদি।
×