ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শরীয়তপুরে পল্লীবিদ্যুত লাইন সংযোগের নামে টাকা আদায়

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

শরীয়তপুরে পল্লীবিদ্যুত লাইন সংযোগের নামে টাকা আদায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর, ২৫ অক্টোবর ॥ শরীয়তপুরের পল্লীবিদ্যুত গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। অস্বস্তিকর লোডশেডিং, অতিরিক্ত বিদ্যুত বিল ও হয়রানির কারণে পল্লীবিদ্যুত গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। জেলার বিদ্যুত গ্রাহকরা এ বিড়ম্বনা থেকে কোনভাবেই নিস্তার পাচ্ছেন না। এছাড়াও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাগামহীন দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের যাঁতাকলে পড়ে গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এদিকে জেলার বিভিন্ন গ্রামে সরকারীভাবে বিদ্যুতের লাইন সম্প্রসারণ কাজ চলছে। অনেকটা সোনার হরিণ এ বিদ্যুতের নতুন লাইন সংযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় আছে জেলার হাজার হাজার মানুষ। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কিছু দালালদের সহযোগিতায় গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অফিসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী। জেলার নড়িয়া উপজেলার গোলার বাজার এলাকায় শতাধিক গ্রাহকের বাড়িতে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে। এসব বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে অফিসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার কথা বলে প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পল্লীবিদ্যুত অফিসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে, ভেদরগঞ্জ উপজেলার রানীসার গ্রামে এবং সদর উপজেলার গঙ্গানগর এলাকায়। পরিচিত দালালদের মাধ্যমে এ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রাহকদের কাছ থেকে নতুন সংযোগ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও জেলার ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ভেসালিয়া ও বিন্দাইকাঠি এলাকায় বিদ্যুত লাইন না যাওয়ায় ভোগান্তিতে আছে সেখানকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রকাশ্য মদদে মিটার টেম্পারিং করে বিদ্যুত চুরি, অবৈধ সংযোগ, সিস্টেম লসের নামে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি, অনিয়মতান্ত্রিক পন্থায় বাঁশের মতো শীর্ণ খুঁটিতে হাজার হাজার ফুট সার্ভিস লাইন সংযোজন দেয়ায় তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর এতে দুর্ঘটনায় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। গত ৫ এপ্রিল তারিখে পল্লীবিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়া তারে জড়িয়ে ২ হাত হারাতে হয়েছে নড়িয়া উপজেলার বিঝারী গ্রামের ফারুখ খানের কলেজপড়ুয়া ছেলে সিয়ামকে। এ ঘটনায় উচ্চ আদালতে একটি রিটের প্রেক্ষিতে সিয়ামকে ৩০ দিনের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু সিয়াম এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। এসব অভিযোগ সম্পর্কে মুঠোফোনে জানতে চাইলে শরীয়তপুর পল্লীবিদ্যুত অফিসের জেনারেল ম্যানেজার সোহরাব আলী বিশ্বাস বলেন, আমরা কোন দালালকে সংযোগের নামে টাকা-পয়সা না দেয়ার জন্য সতর্ক করণার্থে মাইকিং করেছি। জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের উন্নয়মূলক কাজ চলার কারণে কিছুটা লোডশেডিং হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
×