ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেনহাজুল ইসলাম তারেক

অনিয়ম সীমাহীন দুর্নীতি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

অনিয়ম সীমাহীন দুর্নীতি

ফিটনেসবিহীন ও লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা মোটরযানের বিরুদ্ধে আসলে দায়িত্বশীলদের আরও সক্রিয় হতে হবে এবং নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও সবসময় তা অনুসরণ করা হয় না। ফলে এই ধরনের সঙ্কট সারা বছরই লেগে থাকে। বিষয়টি মোটেও কাম্য নয়। সারাদেশে অসংখ্য যানবাহন চলছে ফিটনেস সনদ ছাড়াই। আর যাদের সনদ আছে তাদের অনেকেরই অবস্থা ভাল নয়। রাজধানী ঢাকার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরলে বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় সত্য প্রমাণিত হবে। খোদ বিআরটিএর মতে, রাজধানীর ৫৭ শতাংশ মিনিবাস ২০ বছরের পুরাতন! বাকি অনেক মিনিবাসের অবস্থাও নাজুক। চলমান বাস-মিনিবাসের মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশের দরজা-জানালা ভাঙা। বসার সিট ছেঁড়া ও ভাঙা ৫২ শতাংশের এবং বাহিরের কাঠামো ভাঙাচোরা ৬০ শতাংশের। দুই স্তরের কাঠামো (স্টিল ও ফোম-কাপড়) নেই ৮০ শতাংশ বাস-মিনিবাসের। ৯৮ শতাংশ বাস-মিনিবাসে নেই কোন বৈদ্যুতিক পাখা। তাছাড়া অধিকাংশ বাসের পেছনে সিগন্যালিং লাইটগুলো অকেজো। সব মিলিয়ে রাজধানীতে চলাচলকারী ৮৭ শতাংশ বাস-মিনিবাসই ফিটনেসবিহীন। রাজধানী ঢাকার যদি এই চিত্র হয়, তাহলে সারাদেশের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপরোক্ত পরিসংখ্যানেই হতাশাজনক পরিস্থিতি ধরা পড়েছে! এক্ষেত্রে প্রশ্ন, এই অবস্থা আর কতদিন চলবে? কতদিন চলবে এই খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি? ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ। তাছাড়া এর পেছনে অদক্ষ ও ভুয়া চালকও কম দায়ী নয়। প্রায় ১৯ লাখ চালক ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের অধিকারী বলে সাম্প্রতিক এক তথ্যে জানা যায়। এসব যাদের দেখভাল করার কথা, তাদের আরও তৎপরতা বাড়াতে হবে। এ রকম ছাড়া এই হতাশাজনক পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে হয় না। গণপরিবহনের ক্ষেত্রে ফিটনেসবিহীন গাড়ি যেমন নাগরিক বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী, তেমনি তা নাগরিক অধিকার ও প্রাপ্য সেবা হতে বঞ্চনারও বড় কারণ। অতএব, ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান সবসময় অব্যাহত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে জন-সাধারণের সচেতনতাও একান্ত দরকার বলে আমার মনে হয়। পার্বতীপুর, দিনাজপুর থেকে
×