ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ চায় বিএনপি ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ চায় বিএনপি ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আলোচনার মাধ্যমে বিএনপি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ চায় বিএনপি। এজন্য সরকারকে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দলের এ অবস্থানের কথা জানান। এ সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। তার পায়ের নিচে মাটি নেই মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, এখন ক্ষমতায় টিকে থাকতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার মরিয়া হয়ে গেছে, তাই মামলায় সাজা দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়। সরকারকে পজিটিভ রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের স্বার্থে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি রাস্তা বের করুন, যাতে সকলের নিকট একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা যায় এবং মানুষ নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারে। সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যাদের ওপর ভর করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন, জনগণ জেগে উঠলে এরাও পাশে থাকবে না। তাই যা হয়েছে সেই নেতিবাচক বিষয় বাদ দিয়ে আসুন পজিটিভ রাজনীতি করি। আমরা বলি না বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়া হোক। কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার অপকৌশলকে যদি আমরা নস্যাৎ করে দিতে না পারি তাহলে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে। তাই নেতাকর্মীদের রাজপথের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপ করছে। তবে এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ নির্বাচন কমিশন দুই মাস ধরে যে সংলাপ করেছে সেটি লোক দেখানো। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়া প্রায় সবাই বলেছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এখন জাতি তাকিয়ে আছে ইসি কী করে? কিন্তু ইসি কিছুই করতে পারবে না। কারণ সরকারের বাইরে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কাজ করার শক্তি নেই। এরপরও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, তারা নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে কি না। ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার সবচেয়ে বেশি ভয় পায় তারেক রহমানকে। তাই তার বিরুদ্ধে অনেক কৌশল ব্যবহার করছে। তার মধ্যে অন্যতম কৌশল হচ্ছে মামলা। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার মরিয়া হয়ে সব মামলাকে শেষ পর্যায়ে নিয়েছে সাজা দিতে। মামলা দিয়েই তারা খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়। ফখরুল বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার মামলা শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় নি¤œ আদালত থেকে খালাস পেলেও হাইকোর্ট সাজা দিয়েছে। বিএনপির এমন কোন নেতা নেই যার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা নেই। এম কে আনোয়ার চলে গেলেন শুধু মামলার কারণে। শেষপর্যায়ে এসে তার বিরুদ্ধে এমন মামলা দিল যে তিনি নিতে পারলেন না। সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, এ সরকার মুখে উন্নয়নের কথা বলে আর মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা চুরি করে। হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট করবে আর টাকা সরিয়ে নেবে। এই যে উড়াল সেতু কিছুদিন পরে দেখবেন তা ভাঙতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা যায় না এতো খারাপ অবস্থা। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাজারে এমন কোন সবজি নেই, যা মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে আছে। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট খালি করে নিজেদের পকেট ভরছেন। ইতিহাস বলে মানুষ দীর্ঘদিন এসব সহ্য করবে না। তখন কামান দিয়ে কিছু হবে না। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন-নবী-খান সোহেলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সফু, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, সহ-সভাপতি ইউনুস মৃধা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পটু, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।
×