ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে অগ্রগতি হচ্ছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে অগ্রগতি হচ্ছে ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কট সমাধানের বিষয়টির অগ্রগতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধান সংশোধনের কোন সুযোগ নেই। বুধবার বনানীর সেতুভবনে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন কাদের। দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে, বিশেষ করে সড়ক ও সেতু নির্মাণ নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঋণচুক্তির বিষয়ে ওবায়দুলের সঙ্গে আলোচনা হয় ভারতীয় হাইকমিশনারের। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাদের বলেন, মিয়ানমার সরকার প্রাথমিকভাবে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। বিশ্বজনমতও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আরও জোরদার হয়েছে। বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, তারা যতই এ নিয়ে হইচই করুন না কেন, আগামী ইলেকশন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে এবং বর্তমান সরকারই সহায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধানে হাত দেয়ার কোন সুযোগ নেই। সাংবাদিকদের শ্রিংলা বলেন, ভারত বিশ্বাস করে রাখাইনে শুধু সহিংসতা বন্ধ করলেই চলবে না, একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়েও কথা হয়েছে। ভারত রোহিঙ্গা বিষয়ে তাদের সুর আগের চেয়ে অনেক জোরদার করেছে। আমরা মনে করি, আগে তারা সহযোগিতার কথায় ছিলেন। এবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (সুষমা স্বরাজ) ঢাকা সফরে এসে প্রকাশ্যে বলে গেছেন, রোহিঙ্গা নাগরিকদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতেই হবে। ভারতও মিয়ানমারের ওপর চাপ দেয়া শুরু করেছে। আমেরিকা মিয়ানমারের ওপর আরও কঠিন অবরোধ আরোপের কথা ভাবছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এভাবে চাপ অব্যাহত থাকলে অবশ্যই মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর আরও কঠিন চাপ অব্যাহত রাখবে। প্রয়োজনে অবরোধ আরোপ করা যেতে পারে। যেন তারা বাধ্য হয়ে নিজ নাগরিকদের বোঝা বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নবেম্বর মাসের শেষ দিকে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ভারতের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের আমন্ত্রণে এ সফরে যাবে প্রতিনিধি দলটি। সাক্ষাতে আলাপের বিষয়ে হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ যেভাবে সহযোগিতা করছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টার প্রতি ভারতের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ভারত বিশ্বাস করে, রাখাইনে শুধু সহিংসতা বন্ধ করলেই চলবে না। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আর রোহিঙ্গা সঙ্কটের ইতি টানার জন্য কোফি আনান কমিশন সুপারিশ হতে পারে সঠিক সমাধান। সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে কোন বিদেশী শক্তির ওপর ভরসা না করে রাজপথে সমাধান খুঁজতে চাইছে বিএনপি। বিএনপি নেতাদের এ কথার সঙ্গে একমত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপি যদি এ কথা বলে থাকে; তাহলে বিএনপির সঙ্গে আমরা পুরোপুরি একমত! আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। বাইরের কোন শক্তি এসে আমাদেরকে গণতন্ত্র দিতে পারবে না। তবে বিএনপি কখন কী বলছে; তার ওপর ভরসা না রাখার পরামর্শ রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে বিএনপি কী চায় এটা তারাই জানেনা। আগে তারা সহায়ক সরকারের দাবি করছিল। সেদিন স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক শেষে আবার নাকি তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করবে! ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, তার সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপির কাছে তো সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাওয়ার কথা। বিশের কোথাও তত্ত্বাবধায়ক কিংবা সহায়ক সরকারের বিধান নেই। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে জানিয়ে বলেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এর কোন ব্যত্যয় হবে না। আর নির্বাচন তো বর্তমান সরকারের অধীনে হচ্ছে না। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। দ্বিমত থাকলে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি নিয়ে সংসদে যাওয়ার পরামর্শ দেন কাদের। তিনি বলেন, আপনারা আগে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি নিয়ে সংসদে আসুন। তারপর মনের মাধুরী মিশিয়ে পরিবর্তন আনবেন। আগামী নির্বাচনের আগে কোন পরিবর্তন আসবে না।
×